আফগান সিরিজে মোস্তাফিজকে মিস করবেন সাকিব

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১২:৪৩ পিএম, ৩১ মে ২০১৮

বাহ্যিক আচরণ, চলাফেরা সম্পুর্ন ভিন্ন ও বিপরীতমুখী। মাশরাফি একদম প্রাণখোলা। আর সাকিব খানিকটা অন্তর্মুখী। তবে একটি জায়গায় বাংলাদেশ দুই অধিনায়কের প্রচুর মিল। দুজনারই আবেগ ও উচ্ছ্বাস কম। আর থাকলেও তা ভিতরে সযত্নে লুকিয়ে রাখতে পারেন।

সবচেয়ে বড় কথা দুই অধিনায়কই সাহসী। ভয়-ডর তাদের সেভাবে গ্রাস করতে পারে না। এই যেমন আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে কেউ কেউ চিন্তিত; উদ্বিগ্ন। কারো কারো মনে শঙ্কাও বাসা বেধেছে। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব একদমই নির্ভার, নিরুদ্বিগ্ন।

আফগানরা টি-টোয়েন্টিতে র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে। ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট দৈর্ঘ্যের খেলায় তারা অনেক বেশি আক্রমনাত্মক। শারীরিক দিক থেকেও শক্ত সামর্থ্য। বিগ হিটার আছেন কয়েকজন। কজন দ্রত গতির বোলারের সাথে বর্তমান সময়ের সেরা লেগস্পিনার রশিদ খান ও বৈচিত্র্যের মিশেলে ভরা অফস্পিনার মুজিবুর রহমানে গড়া বোলিং বেশ ধারালো।

এমন একটি দলের সাথে বিদেশ বিভুইয়ে খেলা। তাও এমন এক জায়গায়, যে দেরাদুন শহর, যে মাঠে খেলা সেই রাজিব গান্ধী স্টেডিয়াম, তার মাঠ, উইকেট সবই অচেনা, অজানা।

এতগুলো প্রতিকুলতার সামনে টাইগাররা; শঙ্কায় বুক না কাপুক, চিন্তা আসাই স্বাভাবিক। আশার কথা, বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে কোনরকম শঙ্কা, চিন্তায়ই গ্রাস করতে পারেননি।

আফগানদের নিয়ে সে অর্থে মাথা ব্যাথা নেই তার। টাইগার ক্যাপ্টেন কোনরকম নেতিবাচক চিন্তা না করে সিরিজ জেতার কথা ভাবছেন। তাইতো আজ সকালে দেশ ছাড়ার আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে দাঁড়িয়ে আশাবাদী উচ্চারন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই; সিরিজ জয়। তবে আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করতে চাই। সেভাবেই লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা স্থির করার কথা ভাবছি।’

প্রতিপক্ষ, দেরাদুনের আবহাওয়া আর উইকেট নয়, সাকিবের চিন্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে। তার অনুভব, এ বাঁ-হাতি পেসার আফগানদের বিপক্ষে তার ‘তুরুপের তাস’ (বোলিং ট্রাম্পকার্ড) হতে পারতেন। কিন্তু বাঁ-পায়ের সামনের অংশের ইনজুরির কারণে কাটার মাস্টার সিরিজ থেকে ছিটকে পড়েছেন। কাটার ও স্লোয়ারের মিশ্রনে এরই মধ্যে অনেক বড় বড় ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে সমীহ আদায় করে নিয়েছেন।

তার স্লোয়ার ও কাটারে অনেক ঝানু ব্যাটসম্যান অস্বস্তি বোধ করেন। তাই মোস্তাফিজের বোলিংটা আফগানদের আগ্রাসী ও আক্রমনাত্মক উইলোবাজির বিপক্ষে হতে পারত সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র। এমন উপলব্ধি থেকেই মোস্তাফিজকে খুব বেশি করে মিস করছেন সাকিব। দেশ ছাড়ার আগেও তার মুখে মোস্তাফিজের জন্য আফসোস। ‘আফগানিস্তান সিরিজে আমরা মোস্তফিজকে অনেক বেশি মিস করবো। সে কার্যকরী বোলার।’

অন্যদিকে অধিনায়কের সঙ্গী হয়ে দেরাদুন যাবার প্রাক্কালে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই মোস্তাফিজের অভাব পুরনের কথা ভাবছেন। তার বিশ্বাস, আবুল হাসান রাজু বিকল্প হিসেবে মন্দ নয়। তারও সামর্থ্য আছে দলের সাফল্যে কার্যকর অবদান রাখার।

তবে আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সাকিবের নির্ভরতা তরুণ প্রজন্ম। তার অনুভব, এ সিরিজে তরুণদের পারফরমেন্সের জ্বলে ওঠার ওপর টিম বাংলাদেশের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করবে। আর তাই দেরাদুন মিশনে তরুণদের কাছে প্রত্যাশা বেশি অধিনায়কের।

তার স্থির বিশ্বাস, এই সিরিজ হলো তরুণদের নিজেদের প্রমাণ করার জায়গা। দলে যে সব মেধাবী তরুণ ক্রিকেটার আছে, তারা ভালো খেললে চাপ কমে যাবে অনেকটাই। বলার অপেক্ষা রাখে না, তরুণ বলতে অধিনায়ক সাকিব নিশ্চয়ই লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আরিফুল, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল অপু, আবু হায়দার রনি ও আবু জায়েদ রাহির কথাই বুঝিয়েছেন।

সত্যিই তাই। যেহেতু টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মাশরাফি নেই। তাই বোলিং, বিশেষ করে পেস বোলিংয়ে রুবেল, রনি ও রাহি এবং তামিম, মুশফিক, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে লিটন, সৌম্য, সাব্বির, মোসাদ্দেক, আরিফুল ও মিরাজের জ্বলে ওঠা একান্ত দরকার।

তাদের জন্য এটা খুব ভাল প্লাটফর্ম। তরুণরা কি অধিনায়কের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন? যদি পারেন, তাহলে সাকিবের কথামত সত্যিই চাপ কমে যাবে অনেকটাই। তা কি হবে?

এআরবি/আরআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।