আজ রাতেই ঢাকা আসছেন গর্ডন গ্রিনিজ

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:৩৫ এএম, ১৩ মে ২০১৮

আইসিসি ট্রফিজয়ী বাংলাদেশের সাবেক কোচ গর্ডন গ্রিনিজ হঠাৎ ঢাকায় আসছেন, এটা পুরনো খবর। আগেরদিনই জাগো নিউজের পাঠকরা জেনে গিয়েছেন খবরটা। নতুন না হলেও, আপডেট খবর হচ্ছে, আজ রাতেই, ৯ থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের উত্থানের এই ক্যারিবীয় নায়ক।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যখন হন্যে হয়ে কোচ খুঁজছে, তখন হঠাৎ গর্ডন গ্রিনিজের ঢাকা আসার কথা শুনে অনেকেই সমীকরণ মেলাতে শুরু করে দিয়েছেন। তবে, বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কিত কোনো কারণে তিনি ঢাকায় আসছেন না। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঢাকা আসছেন তিনি এবং তার আসার মধ্যস্থতা করছেন বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সাবেক প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশরাফুল হক।

এর আগে গর্ডন গ্রিনিজকে বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ দলের কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করার পর অবশ্য ২০০০ সালে অভিষেক টেস্টের সময় বাংলাদেশে আনা হয়েছিল তাকে। এর ৪-৫ বছর পর আরও একবার ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। এবার আবারও আসছেন।

ঠিক কেন, কোন উপলক্ষে তিনি ঢাকা আসছেন তা এখনও খানিকটা ধোঁয়াশায় ভরা। একটি সূত্র জানাচ্ছে, বাংলাদেশের সাবেক কোচ আসছেন গলফ টুর্নামেন্টের অতিথি হয়ে। অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এসিসির সাবেক প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশরাফুল হকের ব্যক্তিগত মেহমান হয়েই আসছেন গর্ডন।

যদিও গর্ডনেরই শিষ্য, বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়। দুর্জয় নিজেই জাগো নিউজকে জানিয়েছেন এ তথ্য। অন্য যত কারণই থাকুক, গর্ডন গ্রিনিজের ঢাকায় আসার অন্যতম উদ্দেশ্য, তাকে দেয়া বাংলাদেশের পাসপোর্ট নবায়ন করা।

উপলক্ষ যাই হোক, বাংলাদেশের সাবেক এই কোচ ঢাকায় আসছেন এবং ৩-৪দিন অবস্থান করবেন। এর মধ্যে সাবেক বোর্ড কর্মকর্তা এবং সাবেক ক্রিকেটারদের সাথে একটি নৈশভোজেও আপ্যায়িত হবেন।

ঠিক তার হাত ধরেই আইসিসির সহযোগী সদস্যদের গন্ডি পেরিয়ে ক্রিকেটের বিশ্বমঞ্চে পা রেখেছিল বাংলাদেশ-তা বলা হয়তো বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। কারণ ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি খেলতে যাবার অল্প ক'দিন আগে কোচ হয়ে এসেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ তথা বিশ্ব ক্রিকেটের সব সময়ের অন্যতম সেরা ওপেনার গর্ডন গ্রিনিজ। তারপরের কাহিনী সবার জানা। এ ক্যারিবীয় গ্রেটের পরিচর্যা, তত্ত্বাবধান ও বুদ্ধি-পরামর্শে দু’বছরের মধ্যেই বদলে যায় বাংলাদেশ।

১৯৯৯ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে গর্ডন গ্রিনিজের কোচিংয়েই পাকিস্তানের প্রচন্ড শক্তিশালী দলকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন আমিনুল, সুজন, আকরাম, নান্নু, দুর্জয়, পাইলট, অপি ও রফিকরা। কিন্তু ৩১ মে নর্দাম্পটনে পাকিস্তানকে হারানোর রাতেই বিদায়ঘন্টা বেজে যায় গ্রিনিজের।

গর্ডন গ্রিনিজের বিদায়টি সুখের ছিল না। ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জেতার মিশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা গর্ডন গ্রিনিজ পদচ্যুত হন ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের সময়ই। ওই সময় বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনের পরিচিত মুখ সৈয়দ আশরাফুল হক।

যদিও এক বছর পর ২০০০ সালে অভিষেক টেস্টে গর্ডনকে এনে পূর্বের তিক্ততা খানিকটা কাটিয়েছিলেন আশরাফুল হক। এরপর গর্ডনকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়া হয় এবং বাংলাদেশের পাসপোর্টও প্রদান করা হয়। জানা গেছে, অতীতের তিক্ততা কাটিয়ে একটা মধুর সম্পর্ক তৈরির চিন্তা থেকেই এবার বাংলাদেশে আসছেন গর্ডন গ্রিনিজ।

এবার ঢাকায় উদ্যোক্তা গ্রিনিজ নিজেই। যদিও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছেন বোর্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল হক। এদিকে সাবেক কোচের আগমণকে অন্যরকম বাতাবরণ দিতে চাচ্ছেন গর্ডনের শিষ্যরা। আগামীকাল সোমবার রাতে একটি পাঁচতারকা হোটেলে গর্ডনের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করেছেন আইসিসি ট্রফি বিজয়ী এবং ১৯৯৯ বিশ্বকাপে অংশ নেয়া স্কোয়াডের কয়েকজন শীর্ষ তারকা। যার অন্যতম পুরোধা হলেন বর্তমান বোর্ড পরিচালক ও সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়।

এআরবি/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।