শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ৪ রানে হারলো সাকিবের হায়দরাবাদ
ম্যাচের দুই ইনিংসের শুরুটাই ছিল একই ধাঁচের। টপ-অর্ডারের ব্যর্থতায় চাপে পড়ে যায় দুই দলই। পরে মিডলঅর্ডারের দৃঢ়তায় জমে ওঠে দুটি ইনিংসই। চেন্নাইয়ের রায়না-রাইডুর পর হায়দরাবাদের উইলিয়ামসন-পাঠানদের ব্যাটিংয়ে জমে ওঠে ম্যাচ। শেষদিকে ব্যাট হাতে চমকে দেয়ার আশা জাগান আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খানও। তবে শ্বাসরুদ্ধকর এই ম্যাচে ৪ রানের ব্যবধানে হায়দরাবাদকে হারিয়ে মাঠ ছাড়ে চেন্নাই সুপার কিংস।
চেন্নাইয়ের করা ১৮২ রানের জবাবে ১৭৮ রানে থামে হায়দরাবাদের ইনিংস। টুর্নামেন্টের শুরুর তিন ম্যাচ জেতার পর, টানা দুই ম্যাচে হারলেন সাকিবরা। ৫ ম্যাচে তিন জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে নেমে গেলো তারা। অন্যদিকে সমান ম্যাচে চতুর্থ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস।
রান তাড়া করতে নেমে দ্বীপক চাহারের বোলিং তোপে পড়ে হায়দরাবাদ। মাত্র ২২ রানেই সাজঘরে ফিরে যান টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। ওপেনার রিকি ভুই ৫ বলে শূন্য, মনিশ পান্ডে ২ বলে ০ এবং দ্বীপক হুদা ৭ বল খেলে করেন মাত্র ১ রান। ফলে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে হায়দরাবাদ।
চতুর্থ উইকেটে প্রাথমিক ধাক্কাটা সামাল দেন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান এবং অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ৩৭ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়েন এ দু’জন। মাঠে নামার পর দ্বিতীয় বলেই চার মারেন সাকিব, পঞ্চম বলে হাঁকান ছক্কা। তবে ঝড়ের পুর্বাভাস দিয়ে তিনি সাজঘরে ফিরে যান ১৯ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে।
এরপর হায়দরাবাদের জয়ের আশা জাগিয়ে রাখেন কেন উইলিয়ামসন এবং ইউসুফ পাঠান। পঞ্চম উইকেটে মাত্র ৪৫ বলে ৭৯ রান যোগ করে এই জুটি। টানা তৃতীয় ম্যাচে পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেন উইলিয়ামসন। ১৮তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৫টি করে চার-ছক্কার মারে ৫০ বলে করেন ৮৪ রান।
তখনো হায়দরাবাদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১২ বলে ৩৩ রান। ১৯তম ওভারে ইউসুফ পাঠানও ফিরে গেলেই মূলতঃ শেষ হয়ে যায় সাকিবদের জয়ের আশা। তবু আফগান লেগ স্পিনার শেষ মুহূর্তে রশিদ খান ম্যাচ জমিয়ে তোলেন।
শেষের ৩ বলে হায়দরাবাদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬ রান। দুই বলে ৬ এবং চার মেরে সমীকরণটা ১ বলে ছয় রানে নামিয়ে আনেন রশিদ; কিন্তু ক্যারিবিয়ান অভিজ্ঞ বোলার ডোয়াইন ব্র্যাভোর করা শেষ বলে এক রানের বেশি নিতে পারলেন না তিনি। ফলে ৪ রানের পরাজয়ই সঙ্গী হয় রশিদ-সাকিবদের। মাত্র ৪ বল খেলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন রশিদ। চেন্নাইয়ের হয়ে একাই ৩ উইকেট দখল করেন দ্বীপক চাহার। অন্য ৩ উইকেট নেন কারণ শর্মা, শার্দুল ঠাকুর এবং ডোয়াইন ব্রাভো।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে রাইডু-রায়নার ফিফটিতে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান সংগ্রহ করে চেন্নাই। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা যুৎসই করতে পারেনি চেন্নাই। প্রথম দশ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫৪ রান করে তারা। তবে পরের ১০ ওভারে বাজির দান উলটে দেন আম্বাতি রাইডু। তৃতীয় উইকেটে রায়নার সাথে মাত্র ৫৭ বলে গড়েন ১১২ রানের জুটি।
ইনিংসের ১৭তম ওভারে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন রাইডু। তবে আউট হওয়ার আগে ৯ চার এবং ৪ ছক্কার মারে মাত্র ৩৭ বলে ৭৯ রান করেন তিনি। রাইডু ফিরে যাওয়ার পরের ২০ বল থেকে আরো ৩৮ রান যোগ করেন সুরেশ রায়না এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি।
তিন নম্বরে নেমে ৫ চার এবং ২ ছক্কার মারে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন রায়না। অপরপ্রান্তে মাত্র ১২ বলে ৩টি চার এবং ১টি ছক্কার মারে ২৫ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন ধোনি। বল হাতে ৪ ওভার করে ৩২ রান খরচ করেও উইকেট পাননি সাকিব আল হাসান। ১টি করে উইকেট দখল করেন রশিদ খান এবং ভুবনেশ্বর কুমার।
এসএএস/আইএইচএস/এমএস