সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্মিথ (ভিডিও)

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫৩ পিএম, ২৯ মার্চ ২০১৮

আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে আসার পর সিডনিতে পৌঁছে মিডিয়ার মুখোমুখি হবেন এবং বল টেম্পারিং নিয়ে কথা বলবেন কেলেঙ্কারিতে জড়িত অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব থেকে সদ্য বরখাস্ত হওয়া স্টিভেন স্মিথ। অবশেষে সেটাই হলো, সিডনিতে অসি মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে টেম্পারিং ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য ক্ষমা চাইলেন। একই সঙ্গে জানালেন, সারা জীবন এই ঘটনা তাকে পোড়াবে।

এ সময় অজোর কান্নায় ভেঙে পড়েন স্মিথ। কান্নার কারণে কথাই বলতে পারছিলেন না। চোখের পানিতে ভেসে যাচ্ছিল তার মুখমন্ডল। চোখের পানিতে মুখ ভাসিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠেই তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া দলের একজন অধিনায়ক হিসেবে বিষয়টা পুরোপুরি পরিষ্কার করতে চাই। আমিই এ ঘটনার দায় পুরোপুরি নিজের ওপর নিতে চাই। বিচার-বুদ্ধিতে আমি বড় ধরনের একটি ভুল করেছি। এ কারণে পরবর্তী সবগুলো ঘটনাই আমি গ্রহণ করে নিতে চাই। এটা নেতৃত্বের ব্যর্থতা এবং অবশ্যই সেটা আমার নেতৃত্বের।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন (গত শনিবার) লাঞ্চের পর বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির জন্ম দেন ক্যামেরন বেনক্রফট। পকেট থেকে সিরিশ কাগজ বের করে বলে অনেক্ষণ ঘষেন তিনি। এরপর সেই কাগজ আবার লুকিয়ে ফেলেন ট্রাউজারের ভেতর। চতুর্থ আম্পায়ার ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করার পর মাঠের আম্পায়ারদের সতর্ক করে দেন। আম্পায়াররা বেনক্রফটবে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি পকেট থেকে সানগ্লাসের একটি মোড়ক বেড় করে দেখান। তাতে সিরিশ কাগজের কোনো অস্তিত্ব নেই।

মূলতঃ ট্রাউজারের ভেতর শিরিস কাগজ লুকিয়ে ফেলার কারণেই আম্পায়াররা সার্চ করেও পাননি; কিন্তু টিভি ফুটেজে পুরো ব্যাপারটিই উঠে এসেছে এবং ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপি। দিনের খেলা শেষ করার পর স্মিথরা যখন দেখলেন ধরা পড়ে গেছেন, তখন সংবাদ সম্মেলনে এসে স্মিথ-বেনক্রফট দু’জনই স্বীকার করেন, তারা বল টেম্পারিং করেছেন।

এরপরই শুরু হয় তোলপাড়। আইসিসি প্রথমে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছিল স্মিথকে। সঙ্গে ম্যাচ ফির শতভাগ জরিমানা। বেনক্রফটকে করা হয় ৭৫ ভাগ ম্যাচ ফি জরিমানা এবং ৩টি ডিমেরিট পয়েন্ট। ডেভিড ওয়ার্নার আইসিসির শাস্তি থেকে বেঁচে যান। পরে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ার বল টেম্পারিংয়ের মূল হোতা হচ্ছেন ওয়ার্নার এবং তার পরামশ্যেই ঘটেছে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

অস্ট্রেলিয়া সরকার পর্যন্ত নড়ে-চড়ে বসে এ ঘটনায়। তারা কঠোর শাস্তি দাবি করে। যার ফলে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান স্মিথ-ওয়ার্নার। দাবি ওঠে আজীবন নিষিদ্ধের। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাদের খেলোয়াড়দের জন্য তৈরি করা আচরণবিধি অনুযায়ী এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে স্মিথ-ওয়ার্নারকে। দুই বছর স্মিথ এবং আজীবন অধিনায়কত্ব করতে পারবেন না ওয়ার্নার। একই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় অপরাধি তিন ক্রিকেটারকে।

দেশে আসার পর সিডনি বিমান বন্দরেই মিডিয়ার মুখোমুখি হতে হলো স্মিথকে। সেখানেই কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে ভক্ত, সমর্থক এবং ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবার কাছে ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য ক্ষমা চান স্মিথ।

আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।