হতাশা ভুলে সামনে তাকাতে চান তামিম

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৪১ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

স্পিনিং ট্র্যাক নিয়ে অনেক কথা। কারও কারও মতে, স্পিন বান্ধব পিচে খেলার কারণেই এ ভরাডুবি ঘটেছে। একটা বড় অংশ মনে করেন, ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার সাথে টার্নিং উইকেটে সাফল্য ধরা দিলেও স্লো, লো ও টার্নিং উইকেটে খেলে হাত পাকানো লঙ্কানদের ওই পিচে হারানো কঠিন ছিল।

কিন্তু মাথায় আনা হচ্ছে না, ইংল্যান্ডেও মঈন আলীর মত স্পিনার ছিলেন। আর লেগস্পিনার আদিল রশিদও ছিলেন। আর অজি লাইন আপের নাথান লায়ন তো রীতিমত বিশ্বমানের অফস্পিনার।

আর উপমহাদেশিয় কন্ডিশনে সমস্যা হলেও ইংলিশ ও অস্ট্রেলিয়ান স্কোয়াডে ছিলেন অ্যালিস্টার কুক, জো রুট, বেন স্টোকস, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মত বিশ্বমানের উইলোবাজ। কিন্তু তার মধ্যেও ব্যাট হাতে তামিম ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেরে বাংলায় ১০৪ আর ৪১ এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭১ ও ৭৮ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন তামিম। সাকিব, মুমিনুল, মুশফিক ও ইমরুলরাও সহায়ক ভূমিকায় ছিলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মিরাজ ৬ +৬ = ১২ উইকেট আর অস্ট্রেলিয়ার সাথে সাকিব ৮৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলার সাথে ৫ + ৫ = ১০ উইকেট শিকার করে দলের জয়ে রাখেন অগ্রণী ভূমিকা।

কিন্তু এবার কেউ জ্বলে উঠতে পারেননি। সাকিব আঙ্গুল ফেটে যাওয়ায় খেলতেই পারেননি। শেরে বাংলায় তামিম , ইমরুল, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, লিটন, সাব্বির; কারো ব্যাট কথা বলেনি। আর দুই বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল, রাজ্জাক সাধ্যমত চেষ্টা করলেও ইংল্যান্ডের সাথে মিরাজ যেমন আনপ্লেয়েবল হয়ে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন, অজিদের বিপক্ষে সাকিব যেমন বল ও ব্যাট হাতে জয়ের নায়ক হয়েছিলেন, এবার লঙ্কানদের সাথে ঢাকা টেস্টে অমন ভূমিকা নিতে পারেননি কেউ।

দুই ইনিংসে একটি ফিফটিও নেই কারো। কোনো বোলার এক ইনিংসে ৫ উইকেটের পতনও ঘটাতে পারেননি। কাজেই পরিসংখ্যান ও ম্যাচের চালচিত্র জানান দিচ্ছে , ক্রিকেটারদের বাজে পারফরম্যান্সও ভুগিয়েছে সদ্য সমাপ্ত সিরিজে। হারের অন্যতম কারণও খারাপ পারফরম্যান্স।

টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন গতকাল মিডিয়ার সামনে আবেগতাড়িত কথা বার্তার মাঝেও বলেছেন, 'আসলে আমরা ভালো খেলিনি। তাই পারিনি।'

আজ বিকেলে প্রায় একই সুরে কথা বললেন তামিম ইকবালও। দেশের এক নম্বর ওপেনার ও পরিসংখ্যানের আলোকে সফলতম টেস্ট ব্যাটসম্যান তামিম মনে করেন, এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার সাথে সিরিজটি হতাশার সিরিজ হয়েই আছে। তার ধারণা , শ্রীলঙ্কার এই টেস্ট দলটি তাদের চেয়ে বেটার। তবে টাইগাররা ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে যে উজ্জীবীত ক্রিকেট খেলেছিল, এবার তা পারেনি।

সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজে লঙ্কানরাই ছিল ফেবারিট ছিল মানলেও সিরিজটি তামিমের কাছে হতাশার সিরিজ হয়েই আছে। তামিম বলেন, 'বিশেষ করে আমরা তিন জাতি ক্রিকেটে যেভাবে শুরু করেছিলাম, শেষ পর্যন্ত আমরা সেটা ধরে রাখতে পারিনি। আর তাই হেরেছি। টেস্ট ম্যাচেও আমার কাছে মনে হয় যে, শ্রীলঙ্কা বেটার সাইড ছিল। তারপরও আমাদের ভালো করার সুযোগ ছিল। উচিতও ছিল। কারণ আমরা খেলেছি ঘরের মাঠে অনুকূল ও চেনা কন্ডিশনে। সবচেয়ে বড় কথা, হোম কন্ডিশনে আমরা শেষ দুই তিনটি সিরিজ যেভাবে খেলেছি, তাতে আমাদের অবশ্যই অনেক বেশি ভালো করা উচিত ছিলো।'

তবে তামিম আর পিছন ফিরে তাকাতে রাজি নন। তিনি বলেন, 'সত্যি বলতে কি আমরা ক্রিকেটাররা সবাই খুব আশাভঙ্গের বেদনায় আচ্ছন্ন। কারণ আমাদের বিশ্বাস ও আস্থা ছিল অনেক ভালো খেলার। তা খেলতে না পেরে স্বভাবতই সবাই হতাশ। তবে এটাই ক্রিকেট। কখনও কখনও এমন হয়। এখান থেকে কিভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, সেটাই এখন আসল। আবার একটা নতুন সিরিজ। যা ভিন্ন ফরম্যাটের। এখানে সামর্থের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে দেশকে আবার সাফল্যের স্বাদ উপহারের চেষ্টা করতে হবে। এ মুহূর্তে এটাই আমাদের চিন্তা।'

সবাই ভালো খেলতে পারলে এই সিরিজে অন্যরকম কিছু হবে, বিশ্বাস করেন তামিম। তার ভাষায়, 'শুধু টিম ম্যানেজমন্টে নয়, আমরা সবাই জানি আমরা হয়তো খারাপ খেলছি। কারণ আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। সবার লক্ষ্য ও প্রতিজ্ঞা,আমাদের ভালো খেলতে হবে। আমাদের সেরাটা উপহার দিতেই হবে। সবাইকে পারফরম করতেই হবে। ব্যাটসম্যানদের রান করতে হবে। বোলারদের উইকেটের পতন ঘটাতে হবে। এই কাজগুলো যদি ঠিকমত বাস্তব রূপ পায়, আমরা যদি ভালো খেলি তাহলে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অন্যরকম কিছু ঘটতেও পারে।'

এআরবি/এমএমআর/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।