সামর্থ্যের ৮০ ভাগ প্রয়োগ চান মাশরাফি
২০১৪ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়েকে ‘বাংলা ওয়াশ’ (৫ ম্যাচের সিরিজে ৫-০ ‘তে জয়ী) দিয়ে শুরু। তারপর উল্কার গতিতে না হলেও টাইগারদের জয়রথ চলছিল ভালোই।
২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের অনভ্যস্ত কন্ডিশনে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত যাওয়া। তারপর ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে তুলোধুনো। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নাস্তানাবুদ করা। ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকার মতো মহাপরাক্রমশালি দলের সঙ্গে সিরিজ জয়ের বড় কৃতিত্বও হয় অর্জিত।
সেখানেই থেমে থাকেনি বাংলাদেশের জয়রথ। সে অর্থে থামেনি। ২০১৪-২০১৭; এ চার বছরে ঘরের মাঠে টাইগাররা একটি মাত্র ওয়ানডে সিরিজ হারে, সেটা ইংল্যান্ডের কাছে ২০১৬ সালের শেষ দিকে ২-১ ব্যবধানে।
এরপর ২০১৭ সালের প্রথম দিকে নিউজিল্যান্ডের কঠিন ও অনভ্যস্ত কন্ডিশনে গিয়ে না পারলেও মার্চে শ্রীলঙ্কার মাটিতে লঙ্কানদের সঙ্গে ১-১ সমতায় সিরিজ শেষ করে দেশে ফেরত আসা। সাফল্যের জয়রথ আরও এগিয়ে যায় গত বছর জুনে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। বিশ্ব ক্রিকেটের ওই বড় মঞ্চের সেমিফাইনাল খেলে ফেলে মাশরাফির দল।
ওপরের এ ইতিহাস, টাইগারদের সাফল্যের ইতিহাস। আর কেউ কেউ টিম বাংলাদেশের এ সাফল্যের রূপকার ভাবেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। অনেকেরই ধারণা, হাথুরুর ছোঁয়ায় বদলে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। তার সূক্ষ্ণ ক্রিকেট বোধ-বুদ্ধি, লক্ষ্য ও পরিকল্পনা, প্রতিপক্ষ আর পরিবেশ বুঝে দল সাজানো ও গেম প্ল্যানিংই নাকি টাইগারদের ভারো খেলার পথ চিনিয়েছে। তাদের সাফল্য পেতে রেখেছে বড় ভূমিকা।
চার বছর বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা সেই হাথুরুসিংহেই এবার দল পাল্টে শ্রীলঙ্কার কোচ। এটা কারো কারো চিন্তার কারণ। এমন কথাও শোনা যাচ্ছে, আরে, হাথুরুসিংহে তো বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের হাঁড়ির সব খবরই জানেন। তাদের কে কেমন, কার দুর্বলতা কি, কে কোথায় ভালো- সব তার খুব ভালো জানা।
এখন তিনি প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার কোচ। হাথুরু না আবার ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’ হয়ে যান! এমন চিন্তায় বাংলাদেশের সমর্থকদের মধ্যে যাদের বুক কাঁপছে, তাদের জন্য আছে আশার বাণী। কেননা টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ওসব নিয়ে একেবারেই মাথা ঘামাতে নারাজ।
তবে হাথুরু যে তাদের সম্পর্কে সব জানেন, তাদের ভালো-মন্দ, প্লাস-মাইনাস, সবই যে তার নখোদর্পনে; সেটা ঠিকই মাথায় আছে টাইগার অধিনায়কের। মোটামুটি অনেক কিছু জানেন, বাংলাদেশে বোলিং কোচের দায়িত্ব ছেড়ে জিম্বাবুয়ের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেয়া হিথ স্ট্রিকও।
তাই এ দু'জনকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা আছে বাংলাদেশেরও। মাশরাফি বলেন, 'আমাদের পুরো দল সম্পর্কে তাদের ধারণা থাকতে পারে। হিথ স্ট্রিক প্রায় দেড়-দুই বছর হলো বাংলাদেশ থেকে গিয়েছেন। হাথুরুসিংহে সবে গেছেন। আমাদের সবার সম্পর্কে তার বিশ্লেষণ কিছুটা হলেও কাছাকাছি হতে পারে। সে আমাদের শেষ সিরিজেও ছিল। এটা যেমন তাদের প্লাস পয়েন্ট। তেমনি তারা যে চিন্তা ভাবনা ও পরিকল্পনা করতে পারেন, সেটা আমাদেরও সবাই জানে।'
মাশরাফি শুধু চাইছেন, পরিকল্পনা মতো যেন তার দল মাঠে সামর্থে্যর প্রয়োগ ঘটাতে পারে। হাথুরু আর স্ট্রিককে নিয়ে বাড়তি ভাবতে তাই নারাজ তিনি। তার স্থির বিশ্বাস, যদি সামর্থ্যের সেরাটা প্রয়োগ ঘটানো যায়, তবে কোনো বাধাই থাকবে না।
এ সম্পর্কে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, ' আমাদের পরিকল্পনার যদি ৭০ থেকে ৮০ ভাগও মাঠে প্রয়োগ করতে পারি, তাহলে কোনো কিছুই বাধা নয়। আশা করি সমস্যা হবে না। আমাদের নজর এখন সেখানেই।'
এআরবি/এমএমআর/জেআইএম