ক্রিকেটারদের মুখে তালা!
ঘড়ির কাঁটা তিনটে বাজার মিনিট দুয়েক আগেই সঙ্গী হাবিবুল বাশার সুমনকে সাথে নিয়ে শেরে বাংলার প্রেস কনফারেন্স হলে ঢুকলেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। সহযোগী নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনকে ডানে বসিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই শেরে বাংলার কনফারেন্স হলে তিন জাতি ক্রিকেটের প্রথম দুই ম্যাচের জন্য দল ঘোষণাও করলেন প্রধান নির্বাচক।
ডিপ স্কাই রঙয়ের ব্লেজার গায়ে মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর প্রেস মিট শেষ হয়ে গেলো মিনিট পনেরোর মধ্যেই। সবার জানা হয়ে গেলো, ত্রি-দেশীয় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের দলে কোন নতুন মুখ নেই। সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, শফিউল ইসলাম এবং তাসকিন আহমেদের জায়গা হয়নি শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রি-দেশীয় সিরিজের এই দুই ম্যাচে।
নতুন করে আবার দলে ফিরলেন এনামুল হক বিজয়, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ মিঠুন ও আবুল হাসান রাজু। স্পিনার সানজামুল ইসলামও রয়েছেন দলে।
এরকম বাদ পড়া আর ফেরত আসার প্রক্রিয়ায় মিডিয়ার প্রথম কাজই হলো বাদ পড়া এবং ফেরত আসাদের প্রতিক্রিয়া নেয়া। তাদের কার কী মতামত- এসব জেনে পাঠককে জানানো। সেই প্রক্রিয়ারই অংশ হিসেবে দল ঘোষণার মিনিট বিশেক পর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জাগো নিউজ থেকে ফোন গেলো মোহামাম্মদ মিঠুনের কাছে।
সৌজন্যতা বিনিময়ের পর যেই না প্রতিক্রিয়া চাইতে যাওয়া- অমনি বিনয়ী মিঠুনের অপরাগতা প্রকাশ, ‘ভাই আপনার ফোন আসতে না আসতেকই বিসিবির থেকে একটি এসএমএস এসে গেছে, তাতে স্পষ্ট লিখা, বোর্ডের অনুমতি ছাড়া মিডিয়ার সাথে কথা বলা নিষেধ।’
মিঠুন মিথ্যে বলছেন, ভাবার কোনই কারণ নেই। এ কারণে সত্যতা যাচাইয়ের প্রশ্নও আসে না। তারপরও স্বাভাবিক রীতিতে বিষয়টি ঠিক কি না জেনে নেয়ার জন্য বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের সাথে কথা বললো জাগো নিউজ। তার কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় এভাবে, ‘আচ্ছা! ক্রিকেটারদের মিডিয়ার সাথে কথা বলার বিষয়ে কি কোন নিষেধাজ্ঞা এসেছে? বোর্ডের অনুমতি ছাড়া কি মিডিয়ার সাথে ক্রিকেটারদের কথা বলা নিষেধ করে দেয়া হয়েছে?’
জালাল ইউনুসের জবাব, ‘হ্যাঁ। শুধু ক্রিকেটার নয়। কোচ, ম্যানেজার, টিম ম্যানেজমেন্ট এমনকি নির্বাচকদেরও কথা বলায় এবার নিষেধাজ্ঞা আছে। এখন থেকে কোন ক্রিকেটার অফিসিয়াল প্রেস মিট ছাড়া মিডিয়ার সাথে কথা বলতে পারবে না। নির্বাচকরাও প্রেস কনফারেন্সে দল নিয়ে যা যা কথা বলেছেন বা প্রশ্নর উত্তর দিতে গিয়ে যা বলেছেন তার বাইরে আর কারো সাথে নতুন করে কিছু বলতে পারবে না।’
এর মানে ক্রিকেটার, কোচ, টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচক সবার মুখ বন্ধ। কথা বলায় সাময়িক নিষেধাজ্ঞা। তবে জালাল ইউনুসের কথা শুনে মনে হলো, এ নিষেধাজ্ঞা স্বল্প সময়ের জন্য নয়। তার কথা, ‘পুরো তিন জাতি ক্রিকেটে এ ধারা বহাল থাকবে।’
ক্রিকেটারদের সাথে কথা বলায় এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাবেন এনামুল হক বিজয়, মোহাম্মদ মিঠুন আর আবুল হাসান রাজুর ভক্ত ও সমর্থকরা। ১৫ জানুয়ারি ত্রি-দেশীয় আসর শুরুর আগে বিসিবির অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত তারা কেউই মিডিয়ার সাথে কথা বলতে পারবেন না। আবার নতুন করে দলে ফিরে কেমন লাগছে?- সে অনুভুতিও প্রকাশ করতে পারবেন না।’
হঠাৎ কেন এই নিষেধাজ্ঞা? বিসিবি মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামের ব্যাখ্যা, ‘বোর্ডের সাথে চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারদের মিডিয়ার সাথে আলাপে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সেটা একান্তই বোর্ডের সিদ্ধান্ত।’
তিন জাতি ক্রিকেটে ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের মিডিয়ার সাথে কথা বলার বিষয়ে রাবিদ ইমামের ব্যাখ্যা হলো, ‘জাতীয় দলের অনুশীলনে ধারাবাহিকভাবে সবাইকে কথা বলার সুযোগ করে দেয়া হবে। আমরা চাই না কেউ বিচ্ছিন্নভাবে মিডিয়ার সামনে এসে কথা বলুক।’
এআরবি/আইএইচএস/পিআর