মাশরাফির ইচ্ছেতেই রূপগঞ্জের কোচিং ডিরেক্টর বুলবুল

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৫৬ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

‘জানেন, বুলবুল ভাই কিন্তু ক্রিকেটের আধুনিক কোচিং দর্শনের অনেকটাই আত্মস্থ করে ফেলেছেন। তার সাথে কথা বলে দেখেছি। ম্যান টু ম্যান কাকে কিভাবে টেকনিক্যালি সাউন্ড করা যায়, কার দূর্বলতা ও ঘা কিভাবে সাড়ানো যায়; বুলবুল ভাইয়ের কাছে তার খুব ভালো দাওয়াই আছে। আমার মনে হয়, সময়ের প্রবাহতায় তিনি খুব ভাল কোচ হয়ে উঠেছেন। তার কোচিং দর্শন ও কলা কৌশলটাও বেশ ভাল।’

বিপিএল চলাকালিন মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম লাগোয়া বিসিবি একাডেমির মাঠে সাংবাদিকদের সাথে এক ঘরোয়া আড্ডায় প্রসঙ্গক্রমে উপরের কথাগুলো বলে ওঠেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তখন বোঝা যায়নি। শুধু মনে হয়েছে, আমিনুল ইসলামের কোচিং ম্যাথডটা তার খুব মনে ধরেছে, তাই এমন প্রশংসা।

তাতো ধরেছেই। তবে সেটা শুধু প্রশংসাতেই সীমাবদ্ধ নয়। মাশরাফির কন্ঠে অমন প্রশংসাটা এমনি এমনি নয়। সীমিত ওভারের ফরম্যাটে দেশের ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক ঘরের ক্রিকেটে আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে কোচ হিসেবেও পেতে চেয়েছেন।

মাশরাফির একান্ত ইচ্ছে, ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে তার দল লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের হয়ে যেন কোচিং করান বুলবুল। তার পছন্দকে যথাযথ মূল্য দিয়ে আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে আগামী ২০১৮ সালের প্রিমিয়ার লিগে ডাইরেক্টর অফ কোচিং পদে মনোনীত করেও ফেলেছে রূপগঞ্জ।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, আগেও সময় আর সুযোগ পেয়ে ঢাকার ক্লাব কোচিং করিয়েছেন বুলবুল। সেখানেও আছে নজরকাড়া সাফল্য। ২০০৯ সালে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের কোচ ছিলেন বুলবুল। তার কোচিংয়ে সেবার আবাহনী ঢাকা লিগ বিজয়ী হয়েছিল।

বুলবুল ভক্তদের জন্য সুখবর, সব কিছু ঠিক থাকলে এবার আবার হয়তো ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের দেখা মিলবে। ২০১৮ সালের ঢাকা লিগে লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের হয়ে কোচিং করাবেন বুলবুল।

লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের অন্যতম শীর্ষ কর্তা তারিকুল ইসলাম টিটোর সাথে শুক্রবারই কথা-বার্তা চূড়ান্ত হয়ে গেছে বুলবুলের। আজ বিকেলে জাগো নিউজকে এ তথ্য দিয়ে টিটো বলেন, ‘ এবারের লিগে রূপগঞ্জের সাথে কাজ করবেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।’

টিটো আরও জানালেন, আমাদের সম্ভাব্য অধিনায়ক মাশরাফির ইচ্ছেতেই বুলবুলের সাথে কথা বলা। মাশরাফিই বুলবুলকে কোচ হিসেবে পেতে আগ্রহী। তার ইচ্ছের কথা বলেই বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ককে প্রস্তাব দেয়া। আর বুলবুলও তা মেনে নিয়েছেন।

ঢাকা লিগ তো হবে দু'মাসের বেশি সময় নিয়ে হয়। এর সাথে টি-টোয়েন্টি লিগ হলে আরও একটু সময় লাগবে। আইসিসির ডেভোলপমেন্ট ম্যানেজারের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পর বুলবুল কি সময় বের করতে পারবেন ? এ প্রশ্নের জবাবে টিটো বলেন, আমরা সব রকম আলাপ আলোচনা করেছি।

আলাপ আলোচনার পর বুলবুলই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি ডিরেক্টর অফ কোচিং হিসেবে কাজ করবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ কর্মকর্তা টিটো বলেন, 'আমরা সব দিক চিন্তা করেই স্থির করেছি বুলবুল ঠিক প্রথাগত কোচ বলতে যা বোঝায়, সে পদে থাকবেন না। পুরোদস্তুর কোচিংও করবেন না। তার পক্ষে লিগ চলাকালিন দু'মাসের বেশি সময় থাকা সম্ভব নাও হতে পারে। এমন চিন্তায় তাকে ডিরেক্টর অফ কোচিং পদ দেয়া হয়েছে। তিনি সুযোগ সুবিধা মত এসে কোচিং প্ল্যান দিয়ে যাবেন। তার অধীনে স্পেশালিষ্ট কোচ থাকবেন। তারা তার দিক নির্দেশনায় কাজ করবেন।’

এদিকে আমিনুল ইসলামের আরেক সঙ্গী, একসাথে বেশ ক'বছর মোহামেডানে খেলা জাতীয় দলের সাবেক সদস্য সেলিম শাহেদকেও ম্যানেজার পদে রাখতে চাচ্ছে লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জ। সেলিম শাহেদ সে অফার ফিরিয়ে দেননি। তিনি গত লিগেও রূপগঞ্জের সাথেই ছিলেন। তবে এবার সেলিম শাহেদের সামনে গোটা লিগে ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালনের অফার। সাহেদও দো-টানায়। কোনটা রেখে কোনটা করবেন! তবে ভিতরের খবর, শেষ পর্যন্ত হয়তো ম্যাচ রেফারি হিসেবেই কাজ করবেন সেলিম শাহেদ।

যাকে নিয়ে এত কথা, সেই আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মুখে মাশরাফি-বন্দনা। তিনি বলেন, 'মাশরাফি আমার কথা বলেছে। বলতে পারেন, তার ইচ্ছেতেই আমার সাথে যোগাযোগ করেছে রূপগঞ্জ কর্মকর্তারা। তাই আমিও না করতে পারিনি। এবার চেষ্টা করবো লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের হয়ে কাজ করতে। তাদের সাথে আমার কথা-বার্তা হয়ে গেছে। তবে যেহেতু আমি আইসিসিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করি, তাই পুরো সময় দিতে পারবো কিনা জানিনা । সে কারণেই হেড কোচের দায়িত্ব না নিয়ে ডাইরেক্টর অফ কোচিং পদটিই বেছে নেয়া।’

এআরবি/এমএমআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।