‘নাসিরের পরিবর্তে মিরাজকে চাই’

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:০০ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০১৭

আজকাল ওয়ানডে শুধুই ক্রিকেট ম্যাচ নয়। বিনোদন, বিপনন, বাণিজ্যও। মূলতঃ দর্শক বিনোদন আর স্পন্সরদের কথা বিবেচনায় এনে আজকাল বেশিরভাগ ওয়ানডে উইকেটই ‘ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি’। সেটা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড আর দক্ষিণ আফ্রিকা- যেখানেই হোক না কেন, এখন ওয়ানডে পিচে বাড়তি গতি, বিপজ্জনক সুইং আর বাউন্স খুব কম থাকে। কিম্বার্লির ডায়মন্ড ওভালের পিচ আর পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ওভালের উইকেটও ছিল শতভাগ ব্যাটিং সহায়।

কারো কারো মত, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ছিল অনেকটাই বাংলাদেশের ব্যাটিং সহায়ক পিচগুলোর মত। যে পিচে অবশ্যই ব্যাটসম্যানরাই বেশি সাহায্য পেয়েছেন। স্বচ্ছন্দ, সাবলিল ব্যাট চালনা আর ফ্রি স্ট্রোক প্লে‘র শতভাগ অনুকুলও ছিল; কিন্তু তারপরও দক্ষিণ আফ্রিকার অন্য উইকেট, বিশেষ করে ডারবানের কিংসমিড, জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের তুলনায় পার্লের পিচ তুলনামুলক স্লথ গতির। বাউন্সও তুলনামুলক কম ছিল। এ কারণেই ওই পিচে পেসারদের পাশাপাশি স্পিনাররাও কিছুটা সহায়তা পেয়েছেন।

বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান আর দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহিরের কিছু ডেলিভারি টার্ন করেছে। তারা দু’জন মিলে পাঁচ উইকেটর পতনও ঘটিয়েছেন। ওই পিচে গত ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ম্যাচ হবার আগে শেষ খেলার ভাগ্য নির্ধারণী ভুমিকায় ছিলেন এক কিউই অফস্পিনার কেন উইলিয়ামসন। তার ২২ রানে ৪ উইকেট শিকারেই ২০৮ রানে অলআউট হয়ে ১ উইকেটে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

১৮ অক্টোবর এবি ডি ভিলিয়ার্স (১০৪ বলে ১৭৬) ম্যাচ ভাগ্য গড়ে দিলেও ইমরান তাহির আর সাকিবও কিন্তু কিছু সময়ের জন্য বল হাতে কারিশমা দেখিয়েছেন। সাকিব তো এক ওভারে ডি কক আর ডু প্লেসিসকে আউট করে বাংলাদেশকে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় ফিরিয়ে এনেছিলেন। কে জানে একজন ব্যাকআপ স্পিনার থাকলে হয়ত ওই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকানদের ওপর আরও চাপ প্রয়োগ করা যেত। যদিও অধিনায়ক মাশরাফি নাসিরকে দিয়ে চেষ্টা করেছেন; কিন্তু কাজ হয়নি।

নাসিরের ৮ ওভারে ৪৯ আর মাহমুদউল্লাহর ২ ওভারে ১৬, মোট ১০ ওভারে ৬৫ রান উঠেছে। অনেকেই ওই ম্যাচে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে মিস করেছেন। কোচ সালাউদ্দীনও মনে করেন পার্লে মিরাজ খেললে ভাল হতো। প্রিমিয়ার লিগে তিনি আর নাসির একই দলে। এবার নাসিরের অধিনায়কত্বে যে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্স ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, সেই দলের সফল প্রশিক্ষক সালাউদ্দীন। কাজেই নাসিরকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। নাসিরকে জাতীয় দলে ফেরানোর দাবিতেও সালাউদ্দীন ছিলেন সোচ্চার; কিন্তু এ মুহুর্তে সালাউদ্দীনের ধারনা, পার্লে মিরাজকে খেলানো উচিৎ ছিল।

সালাউদ্দীনের মূল্যায়ন, নাসিরের বদলে মিরাজ খেললে ভাল হতো। সালাউদ্দীনের কথা, যদি আপনি একজন অফস্পিনারের ওপরই ভরসা করবেন, তাকে দিয়ে ১০ ওভার বল করাতেই হয়, তাহলে নাসিরের বদলে একজন স্পেশালিস্ট অফ স্পিনার হিসেবে মিরাজকে খেলানোই ছিল অধিক যুক্তিযুক্ত। তাহলে ভাল হতো। কারণ ওই ১০ ওভারে অনেক রান হয়েছে। বেটার বোলার নিয়ে নামলে অবশ্যই রান কম হতো।’

কিন্তু নাসির তো পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান। তাকে খেলানোর অর্থ ব্যাটিংটাও পাওয়া। তাই হয়ত তাকে খেলানো হয়েছে। এমন কথার বিরুদ্ধচারণ করে সালাউদ্দীনের ব্যাখ্যা, রা তো টপ ও মিডল অর্ডারকেই করতে হবে। নাসির ব্যাট করেছে আট নম্বরে। আট নম্বরে নেমে সে কি করবে? নাসির কোন, অত নিচে নেমে কারো কিছু করার থাকে না। রান করলে টপ অর্ডাররাই করবে। আট নম্বর ব্যাটসম্যানের আসলে রোল খুব কম। অত নিচে নেমে কিছু করার থাকে না।’ শেষ ম্যাচেও অমন উইকেট থাকলে সালাউদ্দীনের পছন্দ নাসির নন, মিরাজ।

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।