‘বাজে বলের সংখ্যা কমাতে হবে’

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:০৮ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৭

এ মুহুর্তে বোলিং নিয়েই যত চিন্তা সবার। ভক্ত ও সমর্থকদের উন্মুখ অপেক্ষা বোলাররা কি প্রথম ম্যাচের ভুল-ত্রুটি শুধরে নিতে পারবেন? বেহিসেবি আর আলগা বোলিংয়ে বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব?

জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রেস্তোরাাঁ-সর্বত্র একটাই আলোচনা, বোলারদের আসলে কী করণীয়? কী করলে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের স্বচ্ছন্দ, সাবলীল ও অনায়াস ব্যাটিং বন্ধ করা যায়?

জাতীয় দলের দুই সাবেক পেসার হাসিবু হোসেন শান্ত ও মঞ্জুরুল ইসলাম মনে করে সঠিক লাইন ও লেন্থে বল করাই সর্বোত্তম কৌশল। জায়গামত বল করাই শেষ কথা। মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর কাছে প্রশ্ন ছিল, প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বোলারদের বিশেষ করে পেসারদের মূল সমস্যা কোথায় ছিল?

জাতীয় দলের এই সাবেক পেসারও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে এক ইনিংসে ৬ উইকেট শিকারী। তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি আমরা বোলিং ভাল করিনি। ভাল করতে না পারার কারণ খুঁজতে গিয়ে আমার মনে হয় আমরা আসলে উইকেটের চরিত্র বুঝে উঠতে পারিনি। কোথায় কোন লাইন ও লেন্থে বল করলে সফল হওয়া যাবে? তা বুঝে উঠতেই হয়ত সমস্যা হয়েছে। সে উপলব্ধিটা কম ছিল বলেই আমরা জায়গামত বল করতে পারিনি। ভাল জায়গা বলতে যা বোঝায় আমাদের বোলারদের বল সেখানে পড়েছে খুব কম।’

মাশরাফি-তাসকিনদের বোলিং বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, ‘আমি মাশরাফির ও তাসকিনের কিছু ভাল ডেলিভারি দেখেছি। যার বিপক্ষে হাশিম আমলা ও ডি কক কোন বেপরোয়া শট খেলেননি। দেখে খেলেছেন। প্রোটিয়া ওপেনাররা আমাদের বোলারদের আক্রমণ করেছেন অনেক পরে। একটা সময় তারা ধৈর্য্য ধরে উইকেটে থিতু হবার চেষ্টা করেছেন। তাদের লক্ষ্য ছিল আগে উইকেটে সেট হওয়া। তারা ওয়েল সেট হয়ে পঞ্চাশ পার করার পর হাত খুলে খেলেছেন। শটসও খেলেছেন প্রচুর। আমাদের বোলিং লাইন কিন্তু খারাপ ছিল না।’

মাশরাফির সাথে রুবেল, তাসকিন, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও নাসির- সব মিলে লাইনআপ ভালই ছিল; কিন্তু জায়গামত বল করতে না পারায় সেই বোলিং লাইন সাফল্যর মুখ দেখেনি। বোলাররা অফ স্ট্যাম্পের বাইরে শর্ট বল করেছেন। আর সেগুলোর বিপক্ষে প্রোটিয়ারা ভাল খেলেছেন। রানও করেছেন।

হাসিবুল হোসেন শান্তও মঞ্জুর সুরে সুর মিলিয়েছেন। সেই ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি বিজয়ের অন্যতম রুপকার এবং বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকের এক নম্বর পেসার হাসিবুল হোসেন শান্তর মূল্যায়ন, সঠিক লাইন ও লেন্থে বল করতে না পারায় বিপত্তি ঘটেছে বেশি।

শান্ত বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে লাইন ও লেন্থে বল করার চেয়ে আমাদের বোলাররা উইকেট নেবার চেষ্টা বেশি করেছে। এছাড়া বুদ্ধি খাটিয়েও বল করতে পারিনি। প্রথম সেশনে প্রোটিয়া বোলাররা কেমন বল করেছে, কোন লাইন ও লেন্থে বল ফেলে আমাদের হাত খুলে খেলা থেকে বিরত রেখেছে, তা খুঁটিয়ে দেখলেও কাজ হতো। আমার মনে বোলিং পরিকল্পনায়ও ঘাটতি ছিল। এছাড়া পুরনো ও নতুন বলের সঠিক ব্যবহারটাও আমরা করতে পারিনি।’

বোলারদের যদি এত ঘাটতি, তাহলে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন আসে- কোচ কোর্টনি ওয়ালশ কি করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে হাসিবুলের ব্যাখ্যা, ওয়ালশ তার কাজ নিশ্চয়ই করছেন। শিক্ষকের মত পড়িয়ে যাচ্ছেন। এখন আমরা যদি পরীক্ষার খাতায় না লিখতে পারি, তাহলে কোচের কি দোষ বলুন? তাহলে বুধবারের ম্যাচে বোলারদের করনীয় কি?

শান্তর পরামর্শ, আমি থাকলে প্রথমতঃ রান নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করতাম। অযথা জোরে বল করার চেষ্টা না করে উইকেট বুঝে বল করতাম। প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা যে সব জোনে ভাল খেলে, সে সব জায়গায় বল যাতে না পড়ে সেই চেষ্টা করতাম। সবচেয়ে বড় কথা, খাট লেন্থে বল করা থেকে বিরত থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করতাম। বাজে ও আলগা বল যাতে কম হয়, সে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সচেতন থাকতাম। প্রথম খেলায় আমাদের বাজে বলের সংখ্যা খুব বেশি ছিল। তা কমাতেই হবে।’

এআরবি/আইএইচএস/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।