হারের জন্য বোলাররাই দায়ী!

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৭ এএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৭

পচেফস্ট্রম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে খুবই বাজেভাবে। ৩৩৩ রানের ব্যভধানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪২৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৯০ রানে অলআউট বাংলাদেশ! প্রথম ইনিংসে প্রোটিয়াদের লিড দিয়েছে ১৭৬ রানের। ৪৯৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে অলআউট হয়েছে ৩২০ রানে। এরপরও ম্যাচ শেষে পরাজয়ের জন্য বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম পুরোপুরি দায়ী করলেন বোলারদেরই। যেন শুধুমাত্র বোলারদের দোষেই হেরেছে এই ম্যাচটা। ব্যাটসম্যানদের সমালোচনা যে করেননি তা নয়। তবে সেটা নিতান্তই নামকাওয়াস্তে।

ম্যাচ শুরুর আগেরদিন নিজেই মুশফিক জানিয়েছিলেন উইকেট শুকনো। ব্যাটিং উইকেট। এরপরই আবার টস জিতে ফিল্ডিং নিলেন কেন? ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্ন উঠতেই সতীর্থ বোলারদের একেবারে ধুয়ে দিলেন মুশফিক। তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন উইকেট হবে অনুমান করা কঠিন। যতই ফ্ল্যাট উইকেট হোক, যদি সুবিধা নিতে চান, সেটা প্রথম দুই ঘণ্টায় নিতে হবে। বলতে পারেন না টস জিতে ব্যাটিং নিয়েই ৫০০ রান করতে পারতাম। ঠিকভাবে খেলতে পারলে তৃতীয় দিনে অনেক ভালো রান করতে পারতাম। হ্যাঁ, বলতে পারতাম, ফ্ল্যাট উইকেটে (শুরুতেই) ব্যাটিং করতে পারতাম। তবে ফ্ল্যাট উইকেটে আমাদের বোলাররা বোলিং করতে পারবে না, এটা কখনোই বিশ্বাস করি না।’

দলের বোলারদের সমালোচনা থেমে থাকলো না মুশফিকের। তার কথা শুনে মনে হচ্ছিল যেন এই পরাজয়ের জন্য পুরোপুরিই দায়ী বাংলাদেশের বোলাররা। তিনি বলেন, ‘ফ্ল্যাট উইকেটে আপনি উইকেট না পান, ঠিক জায়গায় বোলিং তো করতে পারেন। সে জন্যই তো জাতীয় দলে খেলছেন; কিন্তু আপনি এমন নয়। তাহলে আমিও তো ছয়টা বলের মধ্যে দুইটা লাইনে ফেলতে পারতাম।’

প্রথম ইনিংসেই নাকি বোলাররা খুব হতাশ করেছেন। সেটা জানিয়ে মুশফিক বলেন, ‘প্রথম ইনিংসে বোলাররা আমাকে অনেক হতাশ করেছে। এক সেশনে উইকেট না পান, রানটা আটকে রাখতে পারেন, যেটা দলকে কাজে দেয়। ৫০০-৫৫০ রানের বোঝা নিয়ে খেলা আর ৩০০-৪০০ রানের বিপক্ষে খেলা দুই রকম ব্যাপার। শুধু বোলার নয়, ব্যাটসম্যানদেরও দায় আছে। প্রথম ইনিংসে আমরা অনেক পিছিয়ে গিয়েছি। পুরো টেস্টে ব্যাটিং-বোলিংয়ে দুটিই খারাপ করেছি।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা তো অনেক ভালো করেছে। তারা ২০টা উইকেট নিয়েছে বাংলাদেশের। আর বাংলাদেশ নিতে পারলো তাদের দুই ইনিংস মিলিয়ে মোটে ৯টি উইকেট। দুই দলের বোলারদের পার্থক্য দেখিয়ে নিজেকে অনেকটাই দায়সারা করলেন মুশফিক। তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের বোলিং লাইনআপটা দেখেন, তারা ম্যাচও খেলেছে কম। কিন্তু এই অজুহাত আর কত দিন দেব? তারা যদি ভালো না-ই খেলতে পারে, ৫-১০ বছরে নামের পাশে ৫-১০ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা থাকবে।’

শেষে আরও একটু চরমে উঠলেন মুশফিক। দলের বোলারদের বিকল্প দেখবেন বলেও হুমকি দিয়ে রাখলেন। তার মনে ব্যাটসম্যানদের তুলনায় বোলাররা নিজেদের উন্নতি করতে পারছে না। এটা বোলারদের ব্যর্থতা। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ ভালো না করে, আমাদের বিকল্প দেখতে হবে। উন্নতিটা নিজেকেই করতে হবে। আপনাকে বারবার কেউ শিখিয়ে দেবে না। গত পাঁচ বছরে ব্যাটসম্যানরা নিজেরা যে উন্নতি করেছে, সেটা বোলাররা করতে পারেনি। দুর্বল বোলিং নিয়ে সব সময়ই ব্যাটিং ইউনিটের ওপর ভরসা করতে পারেন না। নিজের উন্নতির জন্য কোচেরও দরকার নেই। বলছি না দুই দিকে বল সুইং করতে হবে। অন্তত জায়গায় তো বোলিং করতে পারেন। বোলিং ইউনিটের শেখার অনেক কিছু আছে। নিজেদের উদ্যোগটা আগে নিতে হবে। আকুতিটা থাকতে হবে।’

আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।