অজি বধে চাই আবারো সাকিব-মিরাজের স্পিন ভেলকি

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৫৬ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৭

আর সবার মত তামিম ইকবালও মানছেন লিডটা আরও বড় মানে, ৩০০ রানের কিংবা তার বেশি হলে ভাল হতো। আজ খেলা শেষে তামিমের মুখে তাই এমন কথা- ‘যা হয়েছে সেটাও একদম কম নয়। একটা দিন আগে হলেও ২৬০ রানে আমরা খুশি থাকতাম; কিন্তু আজকে আমাদের সুযোগ ছিল লিড বাড়িয়ে ৩০০‘র বেশি করার। সেদিক থেকে কিছুটা হতাশ। ৩০০ রানে এগিয়ে থাকতে পারলে সুবিধা হতো।’

কিন্তু ৩০০ রানে লিড তো হয়নি। মুশফিকের দল টার্গেট দিয়েছে ২৬৫ রানের। সেটাই কি খুব কম? একই মাঠে মাত্র ১০ মাস আগে ইংলিশদের ২৭৩ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়ে ১০৮ রানের জয়ের রেকর্ডও তো আছে। সেটাই কি কম বড় অনুপ্রেরনা?

এমন আশাবাদী ভক্তের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। বাংলাদেশ সমর্থকদের বড় অংশ শুধুই যে নৈরাশ্যবাদি আর আফসোস-অনুশোচনায় ভোগা তাও নয়। সত্যিই তো ইতিহাস আর পরিসংখ্যান আশা দেখাচ্ছে।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৭২ রানে এগিয়ে যদি ১০৮ রানের বড় ব্যবধানে জয়ী হওয়া যায়, তাহলে এবার অজিদের বিপক্ষে ২৬৪ রানে এগিয়ে অত বড় ব্যবধানে না হোক জেতা কি অসম্ভব?

মঙ্গলবার খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনেও উঠলো সে প্রশ্ন। জবাবে তামিম ইকবালও মানলেন, হ্যাঁ শুধু স্কোরলাইন কাছাকাছি বলেই নয়, পরিস্থিতিও অনেকটা সে রকমই। ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। দরকারি কাজটা করতে হবে।

সেটা কী? অস্ট্রেলিয়ার সেরা দুজন ব্যাটসম্যান ক্রিজে। আগামীকাল চতুর্থ দিন তাদের যতটা সম্ভব দ্রুত ফিরিয়ে দিতে পারলে অবশ্যই সম্ভাবনা থাকবে। তা যে থাকবে, ইংল্যান্ডের সাথে ম্যাচেই মিলেছিল সে সত্যের দেখা।

এক সময় মনে হচ্ছিল ইংলিশরা অনায়াসে জিতে যাবে। ২৭৩ রান করতে গিয়ে প্রথম সেশন শেষে দুই ওপেনার কুক ও বেন ডাকেটের ব্যাটিং দৃঢ়তায় তরতরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড।

এক সময় রান ছিল বিনা উইকেটে ১০০। এরপর শুরু হলো মেহেদী হাসান মিরাজ আর সাকিব আল হাসানের ম্যাজিক। দু’জনার জাদুকরি স্পিনে ভোজবাজির মত পাল্টে গেল পরিবেশ। এক উইকেটে ১০০ থেকে ১৬৪ রানে অলআউট হলো কুকের দল।

কুক (৫৯) আর ডাকেট (৫৬) ১০০ রানের উদ্বোধনী পার্টনারশিপ ভাঙ্গার পর শুরু হলো যাওয়া-আসার পালা। দু’দিক থেকে চেপে ধরলেন দুই স্পিনার মিরাজ-সাকিব। অসি উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গার কাজ করাসহ অফস্পিনার মিরাজ ২১.৩ ওভার বল করে ২ মেডেনসহ ৭৭ রানে দখল করলেন ৬ উইকেট। আর সাকিবের পকেটে জমা পড়লো ৪ উইকেট (৪৯ রানে)।

আজ শেষ সেশনে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার (৭৫) ও অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ (২৫) বার তিনেক বেঁচে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ৮১ রানের জুটি গড়েছেন; কিন্তু এখনো মুশফিকের দল ১৫৫ রানে এগিয়ে। এই রানের মধ্যে আট উইকেটের পতন ঘটাতে পারলেই মিলবে জয়ের দেখা। সেটা অসম্ভব কিছুই না।

কাল চতুর্থ দিন সকালে ঠিক ১০ মাস আগের জাদুকরি স্পিন বোলিংটাই দরকার। তামিম ইকবাল সেই বোলিংটাই চাচ্ছেন। বাংলাদেশ ওপেনারের আশা, কাল সকাল সকাল ওয়ার্নার-স্মিথের জুটি ভাঙ্গতে পারলে আবারো সম্ভাবনার প্রদীপ জ্বলবে।

তামিম মনে করেন এজন্য দরকার টাইট বোলিং। তার কথা, ‘শুধু উইকেট নিলেই চলবে না, দুই দিক থেকেই টাইট বোলিং করতে হবে। ডট বল বেশি হলে অজিদের চাপ বাড়বে। তখন উইকেটও মিলবে।’

সাকিব ও মিরাজ আবারো তেমন স্পিন ভেলকির পূণরাবৃত্তি ঘটাতে পারলে সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবালের সে আশা পূরণ হতে পারে। বাংলাদেশ ভক্ত-সমর্থকরাও তেমন জাদুকরি স্পিন ভেলকি দেখতে উন্মুখ হয়ে আছেন।

সে সামর্থ্য তাদের আছে পুরোপুরি। এখন জায়গামত সে সামর্থ্যরে প্রয়োগ ঘটাতে হবে। সাকিব-মিরাজরা কি তা পারবেন?

এআরবি/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।