যেভাবে মুরালি-হেরাথ-স্টেইনের পাশে সাকিব

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:১৫ এএম, ২৮ আগস্ট ২০১৭

অবশেষে ইতিহাস গড়লেন সাকিব আল হাসান। দুই লঙ্কান মুত্তিয়া মুরালিধরন-রঙ্গনা হেরাথ আর প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইনের পাশে দাঁড়ালেন এ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

টেস্ট ক্রিকেটের সোয়া‘শো বছরের ইতিহাসে চতুর্থ বোলার হিসেবে সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিরুদ্ধে ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট শিকারের দুর্লভ কৃতিত্বের অধিকারী হলেন সাকিব।

শফিউলের ব্যর্থতায় প্রথম ইনিংসে অল্পের জন্য রেকর্ড হাতছাড়া হতে যাচ্ছিল সাকিবের। মনে হচ্ছিল সাকিব বুঝি খানিক দুর্ভাগা হয়েই থাকবেন। ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট দখল করে মুত্তিয়া মুরালিধরন, ডেল স্টেইন আর রঙ্গনা হেরাথের সাথে ইতিহাসের অংশ হবার মোক্ষম সুযোগটা অল্পের জন্য হাতছাড়া হচ্ছিল প্রায়। তবে সেটা তার নিজের ব্যর্থতায় নয়। ফিল্ডার শফিউলের ক্যাচ ফেলে দেয়ার কারণে।

সাকিবের বলে শট নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে আকাশে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার প্যাট কামিন্স । তার ব্যাট থেকে আকাশে ওঠা ক্যাচ চলে গিয়েছিল কাভারে। ডিপ কাভার থেকে দৌড়ে আসা শফিউল তা দু’হাতে ধরলেনও; কিন্তু হাতে জমিয়ে রাখতে পারলেন না। ফেলে দিলেন।

তাতেই বেঁচে গেলেন অজি ফাস্ট বোলার কামিন্স। ১১ রানে তিনি ফিরে গেলে তখন সাকিবের উইকেট দাঁড়াতো চারে। তবে ১১ রানে জীবন পাওয়া কামিন্স কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাকিবের বলেই আউট হয়েছেন। সাকিবের ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে সামনের পায়ে ভর করে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে মাঝ ব্যাটে আনতে ব্যর্থ হন তিনি। ব্যাটের ভিতরের কানায় লেগে বল গিয়ে আঘাত হানে উইকেটে।

এরপর অজি পেসার হ্যাজলউডও আউট হলেন সাকিবের স্পিন ঘূর্নিতে। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে ইমরুল কায়েস তার ক্যাচ ধরতেই দু’হাত উঁচু করে উল্লাসে ফেটে পড়েন সাকিব। এ উচ্ছাস আর উল্লাস চার নম্বর বোলার হিসেবে টেস্টের এক ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের। এ উৎসব ইতিহাস গড়ার আনন্দের।

কামিন্স, হ্যাজলউডের আগে আগে ম্যাট রেনশ, নাথান লিওন আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট জমা পড়ে সাকিবের ঝুলিতে। তার প্রথম শিকার ছিলেন অজি অফ স্পিনার নাথান লিওন। প্রথম দিনই শেষ বিকেলে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামা লিওনকে লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। আজ দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে সাকিবের প্রথম শিকার অজি ওপেনার রেনশ।

কাল শেষ বিকেলে ছোট্ট মড়কের মাঝেও একদিক আগলে ছিলেন রেনশ। আজও ঠিক ওই কাজেই মনোযোগি ছিলেন এ অজি টপ অর্ডার। শেষ পর্যন্ত সাকিবের স্পিন ঘূর্নির কাছে ঠিকই হার মানতে হয় তাকে। অফ স্ট্যাম্পের ঠিক বাইরে পরাস্ত রেনশ ক্যাচ তুলে দেন প্রথম স্লিপে।

সাকিবের তৃতীয় শিকার হন অজি মিডল অর্ডার ম্যাক্সওয়েল। মারকুটে উইলোবাজ ম্যাক্সওয়েলের মতিগতি দেখে বুদ্ধি খাটিয়ে তাকে আউট করেন সাকিব। ম্যাক্সওয়েলকে এগিয়ে আসতে দেখে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বল ফেলেন তিনি। উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে আসার কারণে ম্যাক্সওয়েল আর বলকে ব্যাটে আনতে পারেননি। স্ট্যাম্পিং হয়ে গেলেন মুশফিকের হাতে।

আর শেষ দিকে হ্যাজলউডের ব্যাট ও প্যাডে লাগা ক্যাচটি গিয়ে জমা পড়লো শর্ট লেগে ইমরুলের হাতে। টেস্টে ১৬ বারের মত ৫ উইকেট দখলের কৃতিত্বটাও হলো যোগ হলো সাকিবের অর্জনের মুকুটে।

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।