উদ্ধার নয়, নতুন হলে আগ্রহী জবি


প্রকাশিত: ০৬:০৫ এএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৬

উদ্ধারে নয়, নতুন হল নির্মাণে বেশি আগ্রহী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন। বেদখল হওয়া হলের জায়গাগুলো সরু, গলির ভিতর ও মহল্লার মধ্যে হওয়ায় ছাত্রাবাস নির্মাণ অনুপযোগী বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এমন আভাস পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জবির বেদখল হওয়া ১২ হলের মধ্যে বাণী ভবন, হাবিবুর রহমান হল, নজরুল ইসলাম হল নিজেদের দখলে রয়েছে। তবে এতে ছাত্রাবাস তৈরির কোনো উদ্যোগ নেয়নি জবি কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে হল নির্মাণে কেরানীগঞ্জে জমি দেখা হচ্ছে।

এদিকে, বাণী ভবনে কয়েকজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বাস করছেন। হাবিবুর রহমান হলে কয়েকজন কর্মচারী ও সরকার সমর্থক ছাত্র নেতারা গেরেজ ভাড়া দিয়েছেন। এছাড়া ওই জায়গায় কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ করতে চাইছে প্রশাসন। উদ্ধার হওয়া নজরুল ইসলাম হলে কিছু ছাত্র থাকলেও চাঁদাবাজ ও মাদক সেবকদের আখড়া হিসেবে পরিচিত।  

জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, সবার আগে জানা দরকার, যে ১২-১৪টি হল বেদখল বলছি, সেগুলো হিন্দুদের পরিত্যক্ত বাড়ি। সেগুলোতে তৎকালিন জগন্নাথ কলেজের ছাত্ররা থাকত। হিন্দুদের পরিত্যক্ত বাড়িতে যখন যেটা খালি হত, ছাত্ররা তখন গিয়ে থাকত।

তিনি আরো বলেন, সেখানে হলের জায়গা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামেও ছিল না, কোনো কাগজ পত্র নাই। কেউ বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেও যায়নি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হয় ২০০৫ সালে এবং এর ২০ বছর আগে তদানিন্তন জগন্নাথ কলেজের ছাত্ররা থাকত। এই স্বাক্ষী প্রমাণ ছাড়া আমাদের কাছে আর কিছুই নাই। সেগুলো সরকারি সম্পত্তি। সেক্ষেত্রে আমাদের দাবি, যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নাই, তদানিন্তন জগন্নাথ কলেজের সমপ্তি পেয়েছি অতএব এগুলো জগন্নাথের পাওয়া উচিত। তাই সরকারের কাছে দাবি করছি।
 
উপাচার্য আরো বলেন, তবে হলগুলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আমলে দখল হয়নি। দখলাদাররা কাগজপত্র করেছে, ডকুমেন্টস তৈরি করছে, সেখানে মার্কেট তৈরি করছে। আবার তা বিক্রি করে দিয়েছে বিভিন্ন লোকের কাছে। জটিলতা এক-দুটো না। এই সম্পত্তির দলিল পত্র আমাদের কাছে নাই, দখলদাররা গরীব মানুষের কাছ বিক্রি করে টাকা নিয়ে চলে গেছে। মার্কেট ভাঙ্গলে দখলদারের কিছু হবে না। ক্ষতি হবে ছোট ছোট দোকানাদারের, গরীব মানুষের। সেগুলো আবার সরকারের ‘খ’ তফসিলভুক্ত।

এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পতি এক বছরের লিজ দেয় না সরকার। বাণী ভবন, হাবিবুর রহমান হল পাই লিজের মাধ্যমে। একবছর টাকা দিয়ে আবেদন করে লিজ পাই। আবার বছর ঘুরে লিজের জন্য আবেদন করতে হয়। দীর্ঘ মেয়াদী লিজ দিবে না সরকার। তিনটি হলের লিজের টাকা জমা দিয়ে আমি হল পরিদর্শনে গিয়ে হতাশ হয়েছি। কারণ হল বলতে যা বুঝায় তার কিছুই নেই ওখানে।

তবে সেখানে কর্মচারীদের আবাসন করা যেতে পারে উল্লেখ করে বলেন, সরু জমি, পাড়ার মধ্যে বসত বাড়ির মধ্যে হল করা দুষ্কর। হাবিবুর রহমানসহ যেগুলো হল আছে সেগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া সরকার ছোট ছোট হলের জন্য প্রকল্পও দেয় না।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, হল তিনটির জমিতে প্রশাসন চাইলে  নতুন ভবন নির্মাণ করতে পারে। কিন্তু প্রশাসন তা না করে নতুন করে অধিক দামে জমি ক্রয় করে হল নির্মাণে আগ্রহী হয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, পুরনো হলের জায়গায় শুধু ভবন নির্মাণের জন্য ব্যয় করতে হবে। আর জমি ক্রয় করতে পারলে সংশ্লিষ্টদের পকেটে ভরবে বলে এত আগ্রহ।

এসএম/আরএস/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।