তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োগ দুর্নীতি কমাবে


প্রকাশিত: ১২:০৫ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৬

তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগে দেশে দুর্নীতি কমবে। দেশের মালিক জনগণ। তাই তার দেশের সরকারি-বেসরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের তথ্য জানার অধিকারও রয়েছে নাগরিকের। ২০০৯ সালের তথ্য অধিকার আইনটি নাগরিককে এ অধিকার দিয়েছে।

এভাবে তথ্য অধিকার ও তথ্য কমিশন নিয়ে আশার কথা শোনালেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান; যিনি সাংবাদিকতার জ্যেষ্ঠ শিক্ষকও বটে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজ দফতরে বৃহস্পতিবার জাগোনিউজের সঙ্গে কথা বলেন গোলাম রহমান। কথা বলেন কমিশনের কার্যক্রম, বাস্তবতা, আইন ও নাগরিকের তথ্য অধিকার নিয়ে।

তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে কমিশনকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে কাজ করছি। অভিযোগও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ফেব্রুয়ারিতে অভিযোগ ছিল ২২টি। মার্চে তথ্য অধিকার আইন অনুসারে ৫০ জনের বেশি নাগরিক তথ্য না পেয়ে কমিশনে অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। এপ্রিলের গত ২০ দিনেই এসেছে ৭০টির বেশি অভিযোগ।

তবে কি তথ্য পেতে হয়রানি বাড়ছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, এই আইনটি অত্যন্ত যুগোপযোগী। আইনটি বাস্তবায়ন করা গেলে দুর্নীতি কমবে। দেশের উন্নয়ন হবে। নাগরিকরা আগেও তথ্য পেতে হয়রানির শিকার হয়েছেন। তবে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ছিল না। কিন্তু কমিশন চালু হওয়াতে সেটি হয়েছে। তারা চাইলেই এখন আমাদের কাছে আসতে পারেন।

জীবনের বড় একটা অংশ কাটিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতার শিক্ষা দিয়ে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকরাও চাইলে আইনটির ব্যবহার করতে পারেন। তারা এর ব্যবহার করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ তুলে ধরতে পারেন।

কমিশনকে আরো গতিশীল করার চিন্তার কথা জানালেন গোলাম রহমান। বললেন, এটি নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করতে হবে। তাদের সচেতন করতে হবে। এ জন্য আমি বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। নিজে প্রধান নির্বাহী হিসেবে বিভিন্ন টকশোতে যাচ্ছি। এতেও কিছুটা প্রচার হচ্ছে।

golam-rahman

গোলাম রহমান জাগোনিউজকে আরো বলেন, অভিযোগপ্রক্রিয়া আরো সহজতর কীভাবে করা যায় সেটি ভাবছি। ২৮ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে আসা অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করি। পুলিশ-আমলাদের জরিমানা করে ইতোমধ্যে নজির তৈরি করা হয়েছে। কমিশন একটি অ্যাপস তৈরি করবে। যাতে নাগরিকরা সহজে অভিযোগ দাখিল করতে পারে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কীভাবে ব্যবহার করা যায় সেটিও চিন্তা করা হচ্ছে। তবে জনবল কম। তাই দ্রুত বাস্তবায়নে যেতে পারছি না।

কোন কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানের তথ্য নাগরিকরা জানতে চাইতে পারেন- এমন প্রশ্নে সোজা উত্তর তার, সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের তথ্য চাইতে পারেন নাগরিক। এজন্য দেশে ২৫ হাজার তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা রয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, প্রতিদিনই সমন জারি হচ্ছে প্রায়। শুনানি হচ্ছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২টি অভিযোগের শুনানি হয় কমিশনে। যেখানে আমিসহ কমিশনাররা থাকেন। আদালতের আদলে চলে এই শুনানি। যাহা বলিব সত্য বলিবো মর্মে শপথও পড়ানো হয়।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ আসছে। এটাকে ভালো নজির হিসেবে দেখছেন গোলাম রহমান। তিনি বলেন, সরকার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি কমিশনকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে চাই, যাতে মানুষ এর সেবা পেতে আগ্রহী হয়। মানুষের উপকারে আসে প্রতিষ্ঠানটি।     

এসএ/এনএফ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।