সেনাবাহিনীই নির্মাণ করবে বার্ন ইনস্টিটিউট


প্রকাশিত: ১২:১০ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৬

রাজধানীর চাঁনখারপুলে প্রস্তাবিত ৫শ’ শয্যার আধুনিক বার্ন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালটি সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে নির্মিত হবে। আন্ডারগ্রাউন্ডে দুই তলা বেইজমেন্টসহ মোট ১২তলা বিশিষ্ট বহুতল একাধিক ভবনের নির্মান কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে। পৃথক তিনটি ব্লকের একটিতে বার্ন, একটিতে প্লাস্টিক ও অপরটিতে একাডেমিক ভবন থাকবে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে রাজধানীসহ সারাদেশের দগ্ধ রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উচ্চতর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ও গুণগত মানসম্পন্ন বার্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গড়ে তোলার লক্ষ্যে এটি নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩০ কোটি টাকা।

আগামী ৬ এপ্রিল মোট ১ দশমিক ৭৬ একর জমিতে নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হবে। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঢামেক হাসপাতালের নীতিনির্ধারকরা গত কয়েকদিন যাবত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
 
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

burn

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, বার্ন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মাণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই চাঁনখারপুল মোড়ের পুরোনো পেট্রল পাম্প ও যক্ষ্মা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের ভবন ভেঙ্গে পরিষ্কার করা হয়েছে। এখন সেখানে ফাঁকা মাঠ, চারদিকে বাউন্ডারি দেয়াল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে পালাক্রমে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের একাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, সাধারণত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর কিংবা গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে করা হলেও বার্ন ইউনিট স্থাপনের দায়িত্ব তাদের দেয়া হয়নি।

মূলত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্রুটিপূর্ণভাবে অত্যাধুনিক বার্ন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্যেই সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

বার্ন বিশেষজ্ঞ ডা. সামন্তলাল সেন জানান, দেশে প্রতি বছর গড়ে ৬ লাখ নারী, পুরুষ ও শিশু বিভিন্নভাবে (বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, অগ্নিশিখা, রাসায়নিক ও গরম তরল পদার্থে) দগ্ধ হচ্ছেন। তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে উচ্চ ডিগ্রিধারী বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সারাদেশের হাজার হাজার পোড়া রোগীর চিকিৎসার জন্য (এমডি ও এম.এস উচ্চ ডিগ্রিধারী) কমপক্ষে ১ হাজার ৫শ’ জন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন হলেও বর্তমানে রয়েছে মাত্র ৫২ জন।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে সীমিত পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ মেডিকেল কলেজে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ে স্নাতকোত্তর এমএস ও মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস)-এ এফসিপিএস কোর্সে প্রতি বছর হাতেগোনা ২ থেকে ৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে।

পৃথক ইনস্টিটিউট স্থাপিত হলে প্রতি বছর গড়ে ১০ থেকে ১২ জন উচ্চ শিক্ষার কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডা. সেন।

এমইউ/এসএইচএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।