‘ফরেন ভিআইপি তদবিরে’ সরকারি মেডিকেলে শিক্ষাবৃত্তি


প্রকাশিত: ০১:৪৯ পিএম, ১০ মার্চ ২০১৬

দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজে বিদেশি শিক্ষাথী ভর্তির জন্য ‘ফরেন ভিআইপিরা’ তদবির করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সার্ক ও নন সার্ক কোটায় নির্ধারিত আসনে ভর্তির সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও ভারত ও নেপালের ভিআইপি তদবিরকারীদের সুপারিশে চলতি বছর এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য সার্ক বৃত্তি কোটায় একাধিক আসন সম্প্রতি বৃদ্ধি করা হয়। দেশি-বিদেশি ভিআইপিদের তদবিরে সম্প্রতি শিক্ষাবৃত্তি পেয়েছেন কমপক্ষে দেড় ডজন বিদেশি শিক্ষার্থী!

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে সুযোগপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রশীদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে সার্ক বৃত্তি কোটায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে ভর্তির নির্দেশনা দেয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, সেলফ ফিন্যান্সিং এডুকেশন স্কিমের আওতায় যতজন সুযোগ পেয়েছেন তাদের প্রায় সকলের পক্ষে ভারত ও নেপালের একাধিক ভিআইপিদের (রাজা, বিরোধী দলীয় নেতা বা সমমানের) তদবির রয়েছে। এছাড়া সাবেক ও বর্তমান একাধিক মন্ত্রীর সুপারিশ রয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার মিটিং মিনিউটস রেফারেন্সকারিদের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের শামেইল লোনি ও নেপালের দীপক লামিচানি।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলে নেপালের প্রশান্ত যাদব, সারবেশ যাদব, আসিফ কামাল, জিবান গিরি ও ভারতের মুনথা ওয়ানি।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে নেপালের আলভেরা খান, সমীক্ষা রায়, প্রতিক্ষা মাহাতো, অবন্তিকা সুবেদি ও ভারতের জারা খান।

ময়মনসিংহ মেডিকেলে নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের ফারহানা হামিদ, নুহা মালিক, ফিজা নাজির ও নেপালের তাওহিদ আনসারি।

রংপুর মেডিকেলে নেপালের আশীষ পোখারেল ও সুমি রাওনিআর, দিনাজপুর মেডিকেলে নেপালের নাজিস ফারুক মিকরানি ও অঞ্জলি দোয়াল, সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেলে নেপালের সুরুজ পানিরু ও নেয়াল শ্রেষ্ঠ ও ঢাকা ডেন্টাল কলেজে ভারতের নাফিয়া ইউসুফ।

এছাড়া নন-সার্ক কোটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে কানাডার সাদরিয়ার আলম সৌম্য। তিনি বৃত্তির আওতায় নয়, নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করে পড়াশুনা করবেন।

সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নন সার্ক কোটায় নির্ধারিত আসনের অতিরিক্ত নয়টি আসন বৃদ্ধি করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সার্ক কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্ত নয়জন ভর্তি না হওয়ায় নতুন করে ভর্তি করা হয়। নেপালের চারটি আসনে জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়ায় তা বাতিল হয়। ওই চারটি আসনে নতুন করে ভর্তি করা হয়।

বিদেশি প্রভাবশালীদের তদবিরে শিক্ষার্থীও অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, ভর্তি কমিটি যথাযথ নিয়মকানুন মেনে শিক্ষার্থী ভর্তি করেছেন।

এমইউ/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।