এটিএম জালিয়াতি : নির্দেশনা অমান্য করেছে ব্যাংকগুলো


প্রকাশিত: ০৫:০৫ এএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

সম্প্রতি এটিএম বুথে জালিয়াতির মাধ্যমে রাজধানীর ৩টি ব্যাংকের ৬টি বুথ থেকে টাকা তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ তোয়াক্কা না করা এবং ব্যাংকগুলোর অসাবধানতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এটিএম বুথেই নিরাপত্তার ত্রুটি রয়েছে।
 
তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে সাইবার বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা জাগো নিউজকে বলেন, “এটিএম কার্ডের প্রবেশদ্বার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনেক ফাঁকা থাকে। ফাঁকা বেশি থাকার কারণেই সেখানে স্কিমিং ডিভাইস বসানোর সুযোগ পাচ্ছে।”
 
তিনি আরো বলেন, “২০১৩ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যত এটিএম বুথ স্থাপন করা হয়েছে তার সবকয়টি এটিএম বুথেই নিরাপত্তা ত্রুটি রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক আগেই এই ফাঁকা স্থানকে ন্যারো করার নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংক ছাড়া এই নিদের্শনা কেউ মানেনি।”

এর আগে শুক্রবার ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ ব্যবহার করে কৌশলে টাকা তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে জানা যায়, আরো অন্তত ২১ জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে একইভাবে আনুমানিক ১০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি জানাজানি হলে ইবিএল ব্যাংকসহ একাধিক ব্যাংক এটিএম সেবা বন্ধ রাখে। অনেক ব্যাংক টাকা উত্তোলনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এতে বুথ থেকে টাকা উত্তোলনে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ গ্রাহকরা।
 
পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তকারীরা তিনটি ব্যাংকের ৬টি বুথে ‘স্কিমিং ডিভাইস’ বসিয়ে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির পর কার্ড ক্লোন করে টাকা তুলে নেওয়ার তথ্য-প্রমাণ পায়।

এদিকে বুথ থেকে টাকা তুলে নেয়ার ঘটনায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) কর্তৃপক্ষ বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশের পাশাপাশি এ ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, “এটিএম বুথ জালিয়াতি করে টাকা তোলার প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী কিংবা কোনো ব্যাংক ডিবির কাছে অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশে মামলা করায় ডিবি ইতোমধ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করেছে।”

এটিএম বুথের নিরাপত্তা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তানভীর হাসান জোহা জাগো নিউজকে জানান, “এটিএম বুথের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য ম্যাকানিক্যাল উপায় হচ্ছে- মেশিনের প্রবেশদ্বার ন্যারো (সরু) করে দেওয়া। এতে খরচ হবে মাত্র ২০০ ডলার। এছাড়াও অ্যান্টি স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা হয়।”

এদিকে গতকাল সোমবার বিকেলে ব্যাংকের প্রতিটি এটিএম বুথে অ্যান্টি স্কিমিং ও পিন শিল্ড ডিভাইস বসানো বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এআর/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।