‘লাভ রোড’ যেন ভালোবাসার প্রতীক
প্রেম-ভালোবাসা! সে তো অমর। ভালোবাসার সংজ্ঞায় ‘চিরন্তন’ শব্দটিও অন্যতম অনুষঙ্গ। লেখক বলেছেন, ‘প্রেমে মরা জলে ডোবে না।’ প্রেম-ভালোবাসাতেই সৃষ্টি। সম্রাট শাহজাহান তাজমহল বানিয়ে ভালোবাসার মানুষ মমতাজকে অমর করে রেখেছেন। আবার ভালোবাসার আবেগেই ট্রয় নগরীর ধ্বংস।
প্রেম-ভালোবাসার আবেগী ইতিহাসে ফিরলে এমন কতোই না নিদর্শন মিলবে! মানুষের যা কিছু সৃষ্টি, যা কিছু সুন্দর-তার মূলেই ভালোবাসা-প্রেমকাহিনী। ভালোবাসাকে উপলক্ষ করেই মানুষের বেঁচে থাকা, এগিয়ে চলা। এ যেন প্রকৃতির ভালোবাসা থেকেই মানুষের শিক্ষা নেয়া।
ভালোবাসার রূপ নেই, আছে আপেক্ষিকতা। ভালোবাসা ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, তবুও ভালোবাসা মানুষকে হাসায়। আবার কাঁদাও। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা প্রতিষ্ঠা দিতে দুনিয়ায় বহু মানুষের চলেছে আবেগের খেলা।
এমনই এক আবেগ নিয়ে রাজধানীতে সৃষ্টি হয়েছে ‘লাভ রোড’। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দিতেই যেন নামকরণ ‘লাভ রোড’।
রাজধানীর তেজগাঁও-এর একটি রাস্তার নাম ‘লাভ রোড’। বিজয় সরণী ওভারব্রিজ হয়ে মগবাজার মহাখালী রাস্তা পার হলেই পূর্বপাশের রাস্তা এটি। প্রচার রয়েছে, রাস্তাটির নামকরণ করেছেন দৈনিক পত্রিকা যায়াযায়দিন-এর এক সময়ের সম্পাদক শফিক রেহমান। লাভ রোডে ঢুকতেই যায়যায়দিন পত্রিকার ভবন। রোডের পাশে আরও কয়েকটি মিডিয়া প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
নামকরণ হয়েছিল প্রায় এক দশক আগে। ‘লাভ রোড’ লেখা রাস্তাটির নামফলক ভেঙে গেছে। কেউ কেউ বলেন, সংস্কার করতে গিয়ে ভাঙা হয়েছে। আর সংযুক্ত হয়নি নামফলকটি। রাস্তার অনেকাংশেই খানাখন্দে ভরা। ‘লাভ রোড’-এর জন্য কর্তৃপক্ষের যেন কোনোই ভালোবাসা নেই।
নামকরণের চিহ্ন নেই। আর দশটি রাস্তার মতোই এরও বেহালদশা। তাতে কী হয়েছে? তবুও ভালোবাসার প্রতীক ‘লাভ রোড’। রাস্তাটির নামকরণের সঙ্গে যারা পরিচিত, তারা এ রাস্তায় এলেই মনে পড়ে যায় ভালোবাসার কথা, বিরহের কথা। প্রেম-ভালোবাসার নিদর্শন রাস্তাটি নিয়ে মানুষের কৌতূহলেরও অন্ত নেই।
রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। আবার রাজধানীতে বেড়াতে এলেও কৌতূহলের বশে অনেকেই রাস্তাটি দেখে যান। কেউ কেউ আসেন প্রিয়জনের হাতে হাতে রেখে। হাজারো প্রেমজুটির বিশেষ মুহূর্তের সাক্ষীও লাভ রোড। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ‘লাভ রোড’ জমে ওঠে প্রেমিক-প্রেমিকার পদচারণায়।
রাস্তার পাশেই দোকান করেন নূর হোসেন। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘সবাই ‘লাভ রোড’ নামেই জানি। নামের কোনো চিহ্ন নেই। তাতে কী হয়েছে? অনেকেই শুধু রাস্তাটি দেখতেই চলে আসেন। বিশেষ করে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে অনেক ছেলেমেয়ে রাস্তার দু’ধারে বসে আড্ডায় জমে ওঠে।’
কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে। রাস্তাটি চেনেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চিনি তো বটেই। কখনও বন্ধুদের সঙ্গে, আবার কখনও বান্ধবীকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছি ‘লাভ রোড’-এ। রাস্তার বিশেষত্ব কিছু নেই। অন্য আর দশটি রাস্তার মতোই। কিন্তু নামকরণের মধ্যেই ভালোবাসার সার্থকতা রয়েছে।
এএসএস/বিএ