‘ধইরা থানায় নিয়া যাই, ঠিকই টাকা দিব’


প্রকাশিত: ০৪:১৫ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রাজধানীর মিরপুরে বাবুল মাতুব্বর নামে এক চা দোকানির কাছে বুধবার রাতে চাঁদা দাবি করে শাহ আলী থানার কয়েকজন পুলিশ ও সোর্স দেলোয়ার। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লাঠি হাতে এক কনস্টেবল তার সিনিয়র অফিসারকে বলে, ‘ওরে ধইরা নিয়া থানায় যাই চলেন। থানায় নিলে ঠিকই টাকা দেবে।’

জাগো নিউজকে এসব কথা বলেছেন বাবুলের ছেলে রাজু। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দগ্ধ বাবুল মারা যান।

রাজু বলেন, ‘ফুটপাতে দোকান করিস, টাকা দ্যাস না ক্যান? টাকা দে।’ লাঠিওয়ালা ওই কনস্টেবলের কথা শেষ হতেই শাহ আলী থানা পুলিশের সোর্স দেলোয়ার বাবুলের হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে। বাবা (বাবুল) যেতে না চাইলে ওই কনস্টেবল লাঠি দিয়ে চুলায় বাড়ি দিলে আগুন লেগে যায়। সেই আগুনেই বাবা পুড়ে যায়।

ঘটনাস্থলে শাহ আলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শ্রীধাম উপস্থিত ছিলেন বলে জানান রাজু।

এদিকে বুধবারের ওই ঘটনায় দগ্ধ বাবুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানায়, আগুনে তার শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে যায়।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহিন মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, ‘পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত নয়।’

জাগো নিউজকে তিনি আরো জানান, আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, আমরা মামলা নিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
 
শাহ আলী থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনায় সময় সেখানে আইয়ুব নামে এক পুলিশ সোর্স উপস্থিত ছিলেন।
 
এ ঘটনায় শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বাবুলের বড় মেয়ে রোকসানা (২৫)। মামলায় মাদক ব্যবসায়ী ও পুলিশের সোর্সসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ মামলা দায়ের করা হয়।

তবে ঢামেক হাসপাতালে দগ্ধ বাবুল মারা যাওয়ার পর মামলার এক নম্বর আসামি মাদক ব্যবসায়ী পারুল আক্তারকে গ্রেফতার করেছে শাহ আলী থানা পুলিশ। মামলার অন্যান্য আসামিরা হচ্ছেন দেলোয়ার, আইয়ুব আলী, দুলাল হাওলাদার, মো. রবিন, শংকর ও পারভিন।

অন্যদিকে বাবুলের মৃত্যুর পর চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহারকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন, শাহ আলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মমিনুর রহমান, এসআই নিয়াজউদ্দিন মোল্লা, সহকারী এসআই জোগেন্দ্রনাথ ও কনস্টেবল জসীমউদ্দীন।
 
এআর/জেএইচ/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।