মালয়েশিয়ায় বৈষম্যের শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা


প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টগুলোতে লম্বা সময় ও বেশি পরিশ্রমের কাজ করেও সবচেয়ে কম বেতন পাচ্ছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। আর বেশির ভাগ রেস্টুরেন্টে ম্যানেজার পদে মালয়েশিয়ানদের বসানো হলেও ধোয়া-মোছা এবং হোটেল বয়ের কাজ করানো হচ্ছে বাংলাদেশিদের দিয়ে।

রেস্টুরেন্ট সেক্টরে কাজ করা একাধিক বাংলাদেশি শ্রমিকের অভিযোগ অন্যসব সেক্টরের শ্রমিকদের বেতন মাসে ন্যূনতম ২ হাজার রিঙ্গিত (৩৬ হাজার টাকা) হলেও রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের খাটানো হচ্ছে ৭শ’ থেকে হাজার রিঙ্গিতে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুয়ালালামপুরের বাংলাপাড়া হিসেবে পরিচিত কোতারাইয়ায় রয়েছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ২০ শতাংশই রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন খাবারের দোকান। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাঙালিদের পদচারণায় মুখরিত থাকে ওই এলাকা।

বিশেষ করে শুক্র ও রোববার কোতারাইয়া এলাকায় তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না। আশেপাশের প্রদেশ কোতা বারা, মালাক্কা, পরোক, কদোহ, পাহাং, টরেনোংগু থেকে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি এসে জড়ো হন কোতারাইয়া এলাকায়। ফলে সেখানকার রেস্টুরেন্ট মালিকরা দু’হাতে উপার্জনের সুযোগ পান।

কোতারাইয়ার মাইডিনের পাশে চেরিজ রেস্টুরেন্টে কর্মরত শ্রমিক যশোরের শার্শা থানার শুভ (২৮) মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টগুলোয় কর্মরত শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে জগো নিউজকে জানান, এদেশে বাংলাদেশি শ্রমিকরা সবচেয়ে কম পয়সায় কাজ করেন। রেস্টুরেন্টে কর্মরত শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার। মালিকরা দুই হাতে কামাচ্ছেন ঠিকই কিন্তু ঠকাচ্ছেন শ্রমিকদের।

malaysia
শুভ বলেন, অন্যান্য সেক্টরে বাংলাদেশিরা ৮ ঘণ্টা ডিউটি করে পায় ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার (৩৬ থেকে ৪৫ হাজার টাকা) রিঙ্গিত আর ১২ ঘণ্টা শ্রম দিয়ে আমি পাই ১ হাজার (১৮ হাজার টাকা) রিঙ্গিত।

এমন বৈষম্যের শিকার হয়েও কি কারণে রেস্টুরেন্টে কাজ করছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে শুভ বলেন, মালয়েশিয়ায় সব সেক্টর এখন দালালদের দখলে। দালালদের অগ্রিম টাকা দিয়ে কাজ জোগাড় করা লাগে। ভালো বেতনের চাকরি পেতে কমপক্ষে ২ হাজার রিঙ্গিত দালালের হাতে তুলে দিতে হয়। মাস শেষে দেশে টাকা পাঠিয়ে দেই। এত টাকা এক সাথে করতে পারলে এই কাজ ছেড়ে দেবেন বলে জানান শুভ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতারাইয়া খাবার বাড়ি রেস্টুরেন্টের মালিক জয়নাল আবেদিন জয় জাগো নিউজকে বলেন, আমরা কাউকে বাধ্য করে কাজ করাই না। হাজার রিঙ্গিতের বেশি বেতন দিলে আমাদের পোষায় না। আমরা বেতন কম দিলেও থাকা ও থাওয়া ফ্রি করে দিয়েছি। সুতরাং এটিকে কম বেতন ভাবা ঠিক হবে না।

আরএম/এসকেডি/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।