মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের গর্ব আলম
মালয়েশিয়ানদের প্রিয় খারার ‘টমিয়ামের’ গুরু আলম এখন বাংলাদেশের প্রতীক। কুয়ালালামপুরের জালান পি রামলিতে আলমকে চেনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সততা পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে কিভাবে মানুষ শূন্য থেকে পাহাড় চূড়ায় ওঠে আলম তার জীবন্ত সাক্ষী।
বুধবার বিকেলে বুকিত বিন তাংয়ের প্রবেশদ্বার জালান পি রামলির বিচ ক্লাবের পাশে নিজের গড়ে তোলা ‘সেরি টমিয়াময়ে জাগো নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আলম জানান তার সফলতার গল্প। বলেন শ্রমিক হিসেবে মালয়শিয়ার জীবন শুরু তার। কয়েক বছর কাজ করার পর ছোট পরিসরে টঙ দোকানের মত ঘরে খাবারের ব্যবসা শুরু করেন। বিয়ে করেন উদ্যোমী ও পরিশ্রমী মালয়েশিয়ান মেয়ে মুমায়ইজাকে।
এরপর তাদের যৌথ চেষ্টায় ছোট ব্যবসার সঞ্চয় থেকে বড় রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলার দিকে এগিয়ে যান। তবে এই পথচলা মোটেও মসৃণ ছিল না। অনেক কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার কর আজকের এই অবস্থানে আসতে হয়েছে তাদের।
১৯৯২ সালে মালয়েশিয়ায় এসে সেরামবাং এলাকায় ফ্যাক্টরি শ্রমিক হিসেবে জীবন শুরু করেন জহিরুল হোসাইন আলম। ফ্যাক্টরিতে তিন বছর কাজ করার পর চাকরি ছেড়ে দিয়ে যোগ দেন স্থানীয় এক রেস্টুরেন্টে। সেখানে ভালোবাসায় জড়ান মুমায়ইজার সাথে। ৯৪ সালে বিয়ে করেন। এরপর দু’জন মিলে চাকরি ছেড়ে ব্যাবসার সিদ্ধান্ত নেন।
জমানো অর্থে নিজেরাই প্রতিষ্ঠা করে ‘সেরি টমিয়াম’ রেস্টুরেন্ট। অল্প পুঁজিতে শুরু আলমের স্বপ্নের রেস্টুরেন্টটি এখন মালয় খাবারের নামকরা প্রতিষ্ঠান। প্রধান বাবুর্চি হিসেবে কাজ করেন আলমের স্ত্রী মুমায়ইজা নিজেই। আলম বসেন ক্যাশ কাউন্টারে। পাঁচজন মালয়েশিয়ান ছাড়াও দু’জন বাংলাদেশি কাজ করেন রেস্টুরেন্টে। কোনো দিকে তাকানোর সুযোগ নেই তাদের। দুপুর থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত তিল ধারনের ঠাই থাকে না এখানে।
আলম জাগো নিউজের কাছে তার সফলতার গল্প তুলে ধরে বলেন, গত দুই যুগে অনেক কষ্ট করেছেন। শেষ পর্যন্ত সফলতা পেয়ে সব দুঃখ ভুলে গেছেন তিনি। রেস্টুরেস্ট আরও বড় করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আরও কিছু বাংলাদেশির কাজের সংস্থান করতে পারলে মনটা তৃপ্ত হবে।
আলমের স্ত্রী মুয়ায়জা বলেন, সংসারেরর কাজ ঘুছিয়ে ১২টার দিকে আসেন রেস্টুরেন্টে। এরপর রাত ৮টা পর্যন্ত কাটে রেস্টুরেন্টে। নিজের পরিবারের জন্য যেমনটা করেন কাস্টমারদের জন্য সেই স্বাদযুুক্ত করেই রান্না করেন তিনি। সবাই তাই খাবার খেয়ে তৃপ্ত হন।
রেস্টরেন্টে কর্মরত মালয়েশিয়ান নাগরিক মোহাম্মদ নিজাম বলেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কাজ করতে পেরে ধন্য। অনেকের ভাগ্যেই এমন সুযোগ ঘটে না।
এত রেস্টুরেন্টের ভিড়ে কেন এখানে আসেন এমন প্রশ্নের উত্তরে কাস্টমার আসিফ বিন ইউসুফ বলেন, এখানকার খাবারের স্বাদ আমার কাছে একেবারেই আলাদা মনে হয়। তাই প্রতিদিনই এখানে খেতে আসি। তাছাড়া খাবারের মান ও পরিবেশ সবই ভালো তাই একটু আগ্রহ নিয়েই অধিকাংশ মানুষ এখানে আসে।
আরএম/এসকেডি/আরআইপি