‘স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় সাদা চিনি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৯ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২২

মিষ্টিজাতীয় খাবার তৈরিতে আমরা সাধারণত সাদা চিনি ব্যবহার করি। চা-কফির সঙ্গেও আমাদের চিনি না হলে চলেই না। দেশে ব্যবহার করা চিনির প্রায় ৯৬ শতাংশই পরিশোধিত সাদা চিনি। আখের লাল চিনি উৎপাদন হয় শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোতে। চাহিদা অনুযায়ী যা নিতান্তই সামান্য। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমরা আমদানি করা যে ধবধবে সাদা চিনি খাই তাতে আছে অনেক স্বাস্থ্যঝুঁকি। অন্যদিকে আখের চিনি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।

পুষ্টিবিদদের মতে, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায় এই সাদা চিনি। কাজেই এসব ঝুঁকি এড়াতে চিনি কম খাওয়া ভালো। নিতান্ত প্রয়োজন হলে লাল চিনি খেতে হবে। লাল চিনি সরাসরি আখ থেকে তৈরি অপরিশোধিত চিনি। এতে থাকে আখের সব উপাদান। যেমন- শর্করা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, উপকারী অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক, থায়ামিন, রাইবোফ্লেবিন, ফলিক অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ।

অধিক মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকায় লাল চিনি খেলে হাড়ও শক্তপোক্ত হয়। একই সঙ্গে দাঁতের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। ক্যাভিটি ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কাও দূর হয়। এছাড়া আখের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করে এবং শরীরের ভেতরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয়।

jagonews24

২০১৮ সালে বাংলাদেশ খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের এক পরীক্ষায় দেখা যায়, আমদানি করা পরিশোধিত এবং দেশে উৎপাদিত পরিশোধিত চিনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আখ থেকে উৎপাদিত দেশি চিনিতে ক্যালসিয়ামের মাত্রা ১৬০ দশমিক ৩২, যা পরিশোধিত চিনিতে ১ দশমিক ৫৬ থেকে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। পটাশিয়াম দেশি চিনিতে ১৪২ দশমিক ৯ শতাংশ, পরিশোধিত চিনিতে শূন্য দশমিক ৩২ থেকে শূন্য দশমিক ৩৫ শতাংশ। ফসফরাস দেশি চিনিতে ২ দশমিক ৫ থেকে ১০ দশমিক ৭৯ শতাংশ ও পরিশোধিত চিনিতে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আয়রন দেশি চিনিতে শূন্য দশমিক ৪২ থেকে ৬ শতাংশ আর পরিশোধিত চিনিতে শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ। ম্যাগনেশিয়াম দেশি চিনিতে শূন্য দশমিক ১৫ থেকে ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ আর পরিশোধিত চিনিতে শূন্য দশমিক ৬৬ থেকে ১ দশমিক ২১ শতাংশ। সোডিয়াম দেশি চিনিতে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ আর পরিশোধিত চিনিতে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।

এ বিষয়ে ফরাজী হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ডায়েটেশিয়ান রুবাইয়া পারভীন রীতি জাগো নিউজকে বলেন, সাদা চিনিটা প্রসেস করা হয়। আর লাল চিনিটা ন্যাচারাল। এজন্য লাল চিনি সাদা চিনির চেয়ে ভালো। সাদা চিনি যেহেতু রিফাইন করা হয় সেক্ষেত্রে এটি বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। অবসাদ, কিডনি রোগের মতো জটিল রোগের সূত্রপাত ঘটায়। একটা সময় ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও থাকে।

লাল চিনির পুষ্টিগুণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই চিনিটা সরল শর্করা। যাদের রুচি কম তারা যদি লাল চিনির শরবত এক গ্লাস পান করে তাহলে তাদের রুচি বাড়বে। এছাড়া এর স্বাস্থ্যকর আরও অনেক গুণাগুণ আছে।

এসএম/এএ/জিকেএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।