নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে রাশিয়াকে কাবু করা যাবে না
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৬ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গোটা বিশ্ব এখন রুদ্ধশ্বাসে নজর রাখছে রাশিয়া-ইউক্রেন রণাঙ্গনে। কেন বাজলো এই যুদ্ধের দামামা, এই যুদ্ধে কে জিতবে কে হারবে, এই যুদ্ধের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হবে—তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের বিভিন্ন দিক জাগো নিউজের কাছে তুলে ধরেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এই অধ্যাপকের দুই পর্বের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়েম সাবু। আজ থাকছে শেষ পর্ব।
জাগো নিউজ: আগের পর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো প্রসঙ্গে আলোকপাত করেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে ইউরোপ পরিস্থিতি কী হতে পারে?
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: এখানে দুটি বিষয় ভাবতে হবে। প্রথমত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ইউরোপের কতটুকু ক্ষতি হতে পারে এবং এই ক্ষতি ইউরোপের জনগণ কীভাবে মেনে নেবে। ইউরোপের বড় একটি অংশ রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল। জ্বালানির দাম বেড়ে যাবে। রাশিয়া জ্বালানির দাম বাড়াবে এটাই স্বাভাবিক। এই পরিস্থিতি কত দিন ইউরোপ হজম করবে সেটাই বিষয়।
আমরা কিন্তু ফ্রান্স এবং জার্মানির তৎপরতা লক্ষ্য করছি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট (এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ) দৌড়াদৌড়ি করছেন কীভাবে, তা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু ইউরোপের দেশগুলোর কূটনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রভাব ফেলছে। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে বলে মনে হয় না। রাশিয়া থেকে গ্যাসলাইন ইউরোপে আসবে, তার ওপরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছেন। এ কারণে আমি মনে করি, ইউরোপের এখন চিন্তা করতে হবে, তারা এই সংকট কীভাবে মোকাবিলা করবে। করোনা মহামারিতে বেঁচে থাকার জন্য যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এই সময়ে যুদ্ধ আর নিষেধাজ্ঞা অবশ্যই অর্থনৈতিক মন্দা বাড়াবে।
দ্বিতীয়ত, আরেকটি বিষয় সামনে আনতে হবে। আমেরিকার মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সনির্ভর অর্থনীতির কথা ভাবতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার, যিনি সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, তিনি সাবধান করে বলেছিলেন, তোমরা এই মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স থেকে বের হয়ে আসতে না পারলে ঝামেলা আছে।
জাগো নিউজ: যুক্তরাষ্ট্রের এই মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স নির্ভর অর্থনীতির বিষয়ে এখনকার কোনো পর্যবেক্ষণ?
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: সংকটে আছে। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া যুদ্ধে অনেক হারাতে হচ্ছে। তবু যুদ্ধ হলেই যুক্তরাষ্ট্রের লাভ। অস্ত্র তো কেউ না কেউ ব্যবহার করবে, কিনবে। বড় যুদ্ধ হলে অনেকের ক্ষতি। এমনকি ছোট যুদ্ধেও। কিন্তু তাতে যুক্তরাষ্ট্রের কিছুই যায়-আসে না। মানুষ মরছে, সব ধ্বংস করা হচ্ছে। কিন্তু এমন যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব রাখলে আমেরিকার মিলিটারি কমপ্লেক্সের লাভ হয়।
জাগো নিউজ: এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার সরাসরি যুদ্ধ বেধে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয় কি না?
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার যুদ্ধ বাধবে আমি এই শঙ্কা আপাতত করছি না। আমেরিকার সেনারা ইউক্রেনে গিয়ে রাশিয়ার সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আফগানিস্তানের সঙ্গে পারেনি আমেরিকা, রাশিয়ার সঙ্গে কী করে পারবে?
আমেরিকার জনগণও আর যুদ্ধ চাইছে না। ইউরোপের জনগণ চাইছে দ্রুত পরিস্থিতি সামলে আনা হোক। সমঝোতার জন্য তাগিদ আছে। বাফার স্টেটের স্বীকৃতি তো মিলেই গেছে। ইউক্রেন মেনে নিলেই সমাধান আসবে আপাতত।
জাগো নিউজ: কোনো কারণে সমঝোতা হলো না। যুদ্ধের ব্যাপ্তি যদি বাড়ে, ইউরোপের ক্ষতিটা কী হতে পারে?
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: সীমাহীন ক্ষতি হবে। আবার এটাও মনে রাখতে হবে যে, কোনো সংকট আরেকটি সুযোগ তৈরি করে। সংকটে সবার ক্ষতি হয়, তা নয়। যেমন- করোনার মধ্যে অনলাইননির্ভর ব্যবসায়ীরা লাভবান হয়েছেন।
এই ক্ষতির মধ্যে ইউরোপ কোন সুযোগের ব্যবহার করবে তা দেখা দরকার। কার সঙ্গে কোন সম্পর্কে গুরুত্ব দেবে তারও সুযোগ তৈরি হতে পারে। অপেক্ষা করতে হবে। তবে বড় আকারের যুদ্ধ হলে গোটা বিশ্বই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই ক্ষতি শুধু ইউরোপে আটকে থাকবে না।
তবে ইউরোপ-আমেরিকা বা রাশিয়া বড় যুদ্ধে নামবে, আমি তা বিশ্বাস করছি না। (তারা) করোনা মহামারিই সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ইউক্রেনকে উপলক্ষ্য করে তারা নিজেদের ক্ষতি করতে চাইবে না। ইউক্রেনকে হয়তো স্পষ্ট করে বলে দেবে, ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চিন্তা তুমি ছেড়ে দাও। এতে পুবের দিকে ন্যাটোর সম্প্রসারণ বন্ধ হবে।
মনে রাখতে হবে ন্যাটোর চাপ যত বেশি আসবে রাশিয়া-চীনের সম্পর্ক তত গাঢ় হবে। এশিয়ায় ইতিমধ্যে বড় অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি হয়েছে। আমেরিকা এখন সম্পর্ক অটুট রাখতে মরিয়া হবে।
জাগো নিউজ: রাশিয়ার শক্তিমত্তার যে প্রকাশ তাতে কী ভেঙে পড়া সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনর্গঠন হতে পারে?
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: এটি আর সম্ভব নয়। সময় অনেক গড়িয়েছে। চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ১৯৯৯ সালেই ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে। পরে রোমানিয়া, আলবেনিয়া, স্লোভাকিয়া যোগ দিয়েছে। আমেরিকা বারবার বলছে ন্যাটো জোট কারও বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু ধীরে ধীরে এর পরিধি বাড়ানো হচ্ছে এবং আমেরিকা আধিপত্য পোক্ত করছে ইউরোপে। জার্মানিতে এতদিনেও যখন ১১৯টি সামরিক ঘাঁটি থাকে, তখন বুঝতে হবে আমেরিকা ইউরোপে কী প্রভাব রাখছে।
বলতে পারেন, জনগণ চাইলে সমস্যা কোথায়? কিন্তু কেন চাইছে জনগণ সেটাও ভাবতে হবে। মিখাইল গর্ভাচেভের রাজনীতির কারণে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ায় অনেক কিছুই বদলে গেছে।
ইউরোপের জনগণ যদি ন্যাটোকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে তাহলে আবারও অনেক কিছু বদলে যাবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন আর ন্যাটো দুটি আলাদা বিষয়। ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা ফুরালে ইউরোপের সংকট কেটে যাবে।
রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থীদের ঢল নেমেছে/ছবি: সংগৃহীত
জাগো নিউজ: বলতে চাইছেন, বিশ্বে অশান্তির অন্যতম কারণ এখন ন্যাটোই?
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: অনেকটা তাই। সংকট তৈরি করে ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আবার ন্যাটোর উপস্থিতি যে কোনো অঞ্চলে সংকট বাড়িয়ে দেয়।
ইউরোপের নেতারাও ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সাফাই গেয়ে থাকেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলছেন, ন্যাটো থাকা জরুরি। ন্যাটো থাকার কারণে ব্রিটেনকে নিরাপত্তা নিয়ে আলাদা করে খরচ করতে হচ্ছে না। সে খরচ উন্নয়নের জন্য করা যাচ্ছে। পুরো বিষয়টিই রাজনৈতিক অর্থনীতির ব্যাপার। ডোনাল্ড ট্রাম্প এই খরচ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। বাইডেন এসে আবারও ন্যাটোর ওপর গুরুত্ব দিলেন। ন্যাটোর থাকা না থাকার রাজনীতিতে আপনি নজর দিলে অনেক কিছুই বুঝতে পারবেন। সামরিক জোট করে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে কেন খরবদারি করে, তা জানতে হবে।
জাগো নিউজ: মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বাধালে তার মিত্ররাও শামিল হয়। অথচ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মাঠে নামলো না। যুদ্ধে কি ধর্মীয় রাজনীতিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে...?
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বলে মনে করি। আফগানিস্তানে জার্মানি, ইতালি কী করে সৈন্য পাঠিয়েছিল, তা নিয়ে অনেকেই অবাক হয়েছিল। একটি আগ্রাসী শক্তি হিসেবে তারা কী করে হামলায় শরিক হলো? মজার কথা হলো, ন্যাটো সঙ্গে নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র টিকে থাকতে পারেনি আফগানিস্তানে।
ইউক্রেনের সড়কে সাঁজোয়া যান নিয়ে সামরিক বাহিনীর অবস্থান/ছবি: সংগৃহীত
ন্যাটো ইউক্রেনের পক্ষে কথা বলছে। কিন্তু মাঠে নেই। আবার ইউক্রেন কোনোভাবেই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। যদিও নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট (জেলেনস্কি) ক্ষমতায় এসেছেন। এমন নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছিলেন (জার্মানির যুদ্ধবাজ নেতা) অ্যাডলফ হিটলার ও (ইতালির যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী) বেনিতো মুসোলিনিও।
ইউক্রেনের জনগণকে যেমন জেগে উঠতে হবে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকেও দায় রাখতে হবে। প্রতিটি যুদ্ধেই যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ বিরোধিতা করে আসছে। এই প্রতিবাদ সর্বস্তর থেকে জোরালো করতে হবে।
আফগানিস্তান থেকে সরে গিয়ে এখন ইউরোপে অস্ত্র বিক্রি করতে চাইছে আমেরিকা। এটি তো থামাতে হবে। বিশ্ববাসীরও দায়িত্ব রয়েছে। যুদ্ধ মানুষে মানুষে বৈষম্য ছাড়া আর কিছুই আনতে পারে না। আমেরিকার লেখক, গবেষকরাও দায়িত্ব রাখবেন বলে মনে করছি।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবনের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন ইউক্রেনীয় এক নারী/ছবি: সংগৃহীত
অন্যদিকে রাশিয়ার দায়িত্ব এখন আরও বেশি। রাশিয়া নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে তাকে বিশ্ববাসী কলোনিয়াল ফোর্স (ঔপনিবেশিক শক্তি) হিসেবে ট্রিট করবে (দেখবে)।
জাগো নিউজ: নিষেধাজ্ঞার আলোচনা সর্বত্রই। বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য কী পর্যালোচনা...?
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: ব্যবসা মানেই ক্রেতা-বিক্রেতার লাভ-লোকসানের বিষয়। বাংলাদেশকে পশ্চিমারা এমনিতেই সুবিধা দিচ্ছে না। আমাদের তৈরি করা পোশাক নিয়ে তারা অর্থ দিচ্ছে। তারা তাদের লাভ রেখেই লাভ দিচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষতি হলে তাদেরও ক্ষতি। তারা দয়া করে নিচ্ছে না। এ কারণে তারাও চাইবে না এই ব্যবসা বন্ধ হোক। সংকটে আবার সুযোগও তৈরি হতে পারে।
তবে আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে রাশিয়াকে কাবু করা যাবে না। আমাদের সঙ্গে মূলত রাশিয়ার সম্পর্ক হচ্ছে অর্থনৈতিক। বাংলাদেশে রূপপুরে রাশিয়া যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে সেটাও অর্থনৈতিক। কোনো সামরিক জোটে বাংলাদেশ নেই। এনপিটিতে স্বাক্ষর করার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখতে বিশ্বাসী। আমেরিকা এমন কোনো চাপ দেবে না যাতে বাংলাদেশ চীন-রাশিয়ার দিকে আরও ঝুঁকে পড়বে। এতে আমেরিকার ক্ষতিটাই বেশি হবে। এ কারণে চিন্তার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না। তবে চারদিকে নজর রেখে সতর্কাবস্থায় থাকতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আলোচনার মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের আবেদন রাখতে হবে। কোনো পক্ষের হয়ে কথা বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
এএসএস/এইচএ/জেআইএম
রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার যুদ্ধ বাধবে আমি এই শঙ্কা আপাতত করছি না। আমেরিকার সেনারা ইউক্রেনে গিয়ে রাশিয়ার সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আফগানিস্তানের সঙ্গে পারেনি আমেরিকা, রাশিয়ার সঙ্গে কী করে পারবে
ইউরোপের জনগণ যদি ন্যাটোকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে তাহলে আবারও অনেক কিছু বদলে যাবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন আর ন্যাটো দুটি আলাদা বিষয়। ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা ফুরালে ইউরোপের সংকট কেটে যাবে
আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখতে বিশ্বাসী। আমেরিকা এমন কোনো চাপ দেবে না যাতে বাংলাদেশ চীন-রাশিয়ার দিকে আরও ঝুঁকে পড়বে। এতে আমেরিকার ক্ষতিটাই বেশি হবে। এ কারণে চিন্তার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না