অবশেষে লাভের মুখ দেখছে বিমান


প্রকাশিত: ১০:৩৪ এএম, ০৬ জানুয়ারি ২০১৬

রাষ্ট্রায়ত্ব লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স অবশেষে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। ২০১৫ সালে ২৭১ কোটি টাকা লাভ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ লাভের কারণে দেশের কর্পোরেট বিজনেস লেভেলে সেরা মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে সংস্থাটি। নতুন বছরে আরো সফলতার প্রত্যয়ে আকাশ জয়ের স্বপ্ন দেখছে এই সংস্থা।  

যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে বিমান। লুটপাট ও  ধারাবাহিক লোকসানের মধ্য দিয়ে এ মাসে ৪৪তম বর্ষে পদার্পণ করেছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের এই সংস্থাটি। প্রতিষ্ঠা পরবর্তী নানা প্রতিকূলতার কারণে কখনো লাভের মুখ দেখার সুযোগ হয়নি বিমানের।

দীর্ঘ লোকসানের পর এখন টেকসই লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে বিমান। এয়ারলাইন্স জগতে বিশ্বখ্যাত বোয়িং কোম্পানির নতুন প্রজন্মের নিজস্ব ৬টি নতুন উড়োজাহাজ বহরে যোগ করে বিমান এখন আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বিমান এখন লাভজনক সংস্থা। ২০১৫ সালে রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী পরিবহন করেছে বিমান।

বিমান কাস্টমার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে প্রতি মাসে যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে গাণিতিক হারে। বছরজুড়ে ১৭ লাখের উপরে যাত্রী পরিবহন করে সব রেকর্ড ভেঙেছে বিমান। এ বছর লাভের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৭১ কোটি টাকায়।

বিমানের একাধিক সূত্র এই সফলতার জন্য পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন আহমেদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা মনে করেন, বিমানকে ধীরে ধীরে ভারসাম্যপূর্ণ ও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার পেছনে জামাল উদ্দিন আহমেদের অবদান হবে মনে রাখার মতো। বিমানের যখন যেখানে যা করার দরকার সময় মতো তিনি সেখানে তাই করার চেষ্টা করেছেন বলেও জানা গেছে ।

bimanসফলতার এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন আহমেদ (অব.) জাগো নিউজকে বলেন, বিমান বিগত বছরে লাভ করেছে ২৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু হজ খাতেই লাভ হয়েছে দুই শত কোটিরও বেশি। বাকিটা এসেছে অন্যান্য রুট থেকে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

দীর্ঘ লোকসানী একটি প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে লাভের মুখ দেখালেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিমানে অনিয়ম ও দুর্নীতি ছিলো লাভের পেছনে সবচে বড় অন্তরায়। অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করায় সকল দিক ও বিভাগে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা তৈরি নিশ্চিত হতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, এসবের পাশাপাশি বিমানকে লাভজনক করতে বহর থেকে সনাতন ডিসি-১০, এফ-২৮ এগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। এসবের বদলে বিমানবহরে যুক্ত করা হচ্ছে নতুন প্রজন্মের বোয়িং ৭৮৭-৮০০ ও ড্রিমলাইনারের মতো উড়োজাহাজ। যা এক সময় ছিলো চিন্তার বাইরে। দ্বিতীয়ত জ্বালানি তেল বা জেট ফুয়েলের দাম কমে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী অ্যাভিয়েশনের খরচ অর্ধেকে নেমে আসে। বিমানও সেই সুবিধা ভোগ করেছে। বহরে পুরাতন বিমানের সংখ্যা কমে গেছে। যে কারণে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমেছে। বোয়িং-এর জাহাজে এমনিতেই জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে লাভের খাতায় উদ্বৃত্ত যোগ হচ্ছে। হজ ফ্লাইটের বাড়তি আয় লাভের পাল্লাকে আরো ভারি করেছে। অপচয় ও দুর্নীতি কমার বিষয়টিকে লাভের মূল ও বিশেষ কারণ হিসেবে দেখছেন জামাল উদ্দিন।

আরএম/একে/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।