অল্প আয়ের পেশাই যাদের জীবিকার একমাত্র পথ


প্রকাশিত: ০৬:২৭ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫

বেঁচে থাকার তাগিদ থেকে জীবিকার সন্ধানে এই শহরে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ যুক্ত হচ্ছেন। অসহনীয় যানজোট, জনতার ভিড়, আবাসন সমস্যা, যত্রতত্র ডাস্টবিন, ধুলিময় রাস্তাঘাট, যানবাহনের ধোঁয়া, রঙবেরঙের ভিখারি, শত শত ভাসমান মানুষ। এসব কিছুর পরও রুটি-রুজির শহর রাজধানী ঢাকা। তাই জীবিকার তাগিদে ছুটে আসেন মানুষ এই যান্ত্রিক আর কংক্রিটের ঢাকা শহরে।

বেঁচে থাকার তাগিদ থেকে জীবিকা হিসেবে বিভিন্নজন বেছে নিয়েছেন বিভিন্ন পেশাকে। এদের মধ্যে অনেকে আছেন যাদের ছোট ছোট অল্প আয়ের পেশাই জীবিকার একমাত্র পথ। রাজধানীর জিরো পয়েন্ট, সারি সারি গাড়ি, যানজট আর সারাদিন মানুষের ভিড়ভাট্টা লেগেই থাকে। ঠিক এমন কোলাহলপূর্ণ জায়গার পাশেই ওসমানী মিলনায়তনের গেটের সামনে শসা বিক্রিতা আবুল কালাম।


আবুল কালামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীর বঙ্গবাজার সংলগ্ন নিমতলীতে একটি মেসে থাকেন তিনি। গ্রামে আছে ছেলে মেয়ে আর স্ত্রী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনের ব্যক্তি তিনি। প্রতিদিন ২শ থেকে আড়াইশ টাকা লাভ হয় জানিয়ে তিনি বলেন, মাসের শেষে বাড়িতে তিন হাজার টাকা পাঠাতে হয়। আর বাকি টাকা দিয়ে আমি চলি।

মাস চলতে কষ্ট হয় না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কষ্ট তো হয় কিন্তু কী করার আছে? আমার তো পূঁজি নেই। তাই এভাবেই চলতে হয়। বেশির ভাগ দিনেই দুপুরে ঠিকমতো খাওয়া হয় না। আর যেহেতু বাড়িতে টাকা পাঠাতে হয় সেহেতু আমার নিজের কষ্ট করেই চলতে হয়।


শসা বিক্রেতা আবুল কালামের পাশেই ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা সালাউদ্দিন, বিক্রি করছেন বেদানা। মাদারীপুর থেকে আসা সালাউদ্দিন স্ত্রী ও মেয়েসহ রাজধানীর বংশালে থাকেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ফল বিক্রি করেন তিনি। আঙ্গুর-আপেল আর বেদানাই সচারচর বেশি বিক্রি করেন জানিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, মাসে হাজার আটেক টাকা ইনকাম হয় এই টাকার মধ্যেই পরিবার পরিজনদের নিয়ে কষ্ট করে চলতে হয়।


জীবিকার সন্ধানে সারাদেশ থেকে মানুষ ছুটে আসেন নগরে, যাদের বড় একটি অংশ বস্তিতে আশ্রয় নেয়। বস্তিতে গাদাগাদি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করতে হয় তাদের, এদের মধ্যে একজন বাদাম বিক্রেতা হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, বাদাম বিক্রি করেই সংসারের খরচ চালাতে হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাদাম বিক্রি শেষে গড় দুইশ টাকা আয় হয়।


টাঙ্গাইলের জাকারিয়া রাজধানীতে পাটি বিক্রি করতে আসেন। ৪০ থেকে ৫০টি পাটি বিক্রি করতে সময় লাগে ৭ -৮ দিন। আর এ সময় ফুটপাত, বাস টার্মিনাল, স্টেশনের পাশে রাত কাটান তিনি। পাটি বিক্রি শেষে অল্প কিছু আয় করে চলে যান টাঙ্গাইলে; আবার কিছু পাটি নিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে আসতে হয় রাজধানীতে। আর এভাবেই চলে তার সংসারের চাকা।


গ্রামে কোনো কাজ নেই, নিজের জমি নেই, জমি গেছে নদীর ভাঙনে। তাই শহরে এসে চপ বিক্রির মাধ্যমে ইনকামের পথ বের করেছেন শহিদুল ইসলাম। নিজেকে `সফল` দাবি করে তিনি জানান, সৎ পথে থেকে অভাব অনটনের মাধ্যমে হলেও জীবিকা নির্বাহ করতে পারছি তাই অনেক।

এএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।