বৃষ্টির সঙ্গে বাড়ছে এডিস মশার ঘনত্ব
জুন থেকে সেপ্টেম্বর- এই চার মাস দেশে এডিস মশার প্রকোপ বাড়ে। এ কারণে জুলাইয়ের পর থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে বর্ষা শুরু হয়েছে। থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টি। এর মধ্যে বর্ষা-পূর্ব মশার জরিপে রাজধানী ঢাকার চারটি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তাই ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হওয়ার আগেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ তাদের।
এ নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাইফুল হক মিঠু।
জুলাইয়ের পর থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে
জাগো নিউজ: এই মূহূর্তে রাজধানীর মশক পরিস্থিতি কেমন দেখছেন?
কবিরুল বাশার: এই মূহূর্তে ঢাকায় মশা কম। প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে কিউলেক্স মশা কমেছে। এডিস মশা অনেকটাই বেড়ে গেছে। বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এডিস মশার ঘনত্বও বেড়েছে।
জাগো নিউজ: বর্ষা-পূর্ব মশার জরিপে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের চারটি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার?
কবিরুল বাশার: জরিপের সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। স্বাস্থ্য অধিদফতরের জরিপ যখন শুরু হয় তখন লকডাউন চলে আসে। এতে ৯৮টি ওয়ার্ডে জরিপ করার কথা থাকলেও ৬৯টিতে করা সম্ভব হয়। জরিপে উঠে আসা শুধু চারটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ওপর নির্ভর করা যাবে না। অন্যান্য এলাকায়ও ডেঙ্গুর আশঙ্কা রয়েছে। সিটি করপোরেশনের উচিত হবে যেখানেই মশার প্রজননস্থল রয়েছে, সেগুলো ধ্বংস করে দেয়া। পাশপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে।
ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হওয়ার আগেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
জাগো নিউজ: এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার?
কবিরুল বাশার: জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ডেঙ্গুর মৌসুম। এডিস মশাকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালানো উচিত। কেননা এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ না করলে ডেঙ্গু বেড়ে যেতে পারে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এখন থেকেই পদক্ষেপ নেয়া দরকার। সেক্ষেত্রে কীটনাশক ছিটানোর পাশাপাশি পানি জমা হয়, এমন স্থানগুলো পরিষ্কার করা উচিত। পাশাপাশি যেসব স্থাপনায় পানি জমছে সেখানে জরিমানা করা দরকার।
জাগো নিউজ: মেট্রোরেল ও অন্যান্য উন্নয়নকাজের স্থাপনায় পানি জমছে। সেখান থেকেও...
কবিরুল বাশার: অবশ্যই। মানুষের বাসার ছাদ কিংবা বিভিন্ন জায়গায় পানি জমা থাকলে সিটি করপোরেশন জরিমানা করছে। মেট্রোরেলসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের বিভিন্ন অংশেও পানি জমে থাকতে দেখা যায়। সরকারি ও বেসরকারি দুই ক্ষেত্রেই জরিমানা করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সবখানেই এ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। সরকারি স্থাপনা, বাস স্টেশনসহ যেখানে পানি জমে এ সময়, সেসব জায়গায় জরিমানা করা দরকার।
অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার
জাগো নিউজ: এডিস মশা নির্মূলে আমাদের যে কীটনাশক আছে, সেটা কতটা কার্যকর?
কবিরুল বাশার: কিউলেক্স মশার তুলনায় এডিস মশা আরও বেশি দুর্বল। কীটনাশক এডিস মশার ক্ষেত্রে সময়, স্থান ও প্রয়োগের মাত্রা- এই তিনটা যদি ঠিক হয় তাহলে আমাদের যে কীটনাশক আছে সেটা দিয়েই কাজ হবে। আমরা যদি এডিস মশা মারতে চাই তাহলে বেস্ট টাইম হবে সন্ধ্যার আগ মূহূর্ত বা একদম ভোরে কীটনাশক ছিটানো। লার্ভিসাইডের ক্ষেত্রে সারাদিনই ছিটানো যায়।
জাগো নিউজ : আপনাকে ধন্যবাদ।
কবিরুল বাশার : ধন্যবাদ জাগো নিউজকেও।
এসএম/এমএইচআর/এইচএ/জেআইএম