এবার রাজধানীতে অস্থায়ী পশুর হাট বসবে ২৩টি

মুসা আহমেদ
মুসা আহমেদ মুসা আহমেদ
প্রকাশিত: ০১:১২ পিএম, ০৪ জুন ২০২১
ফাইল ছবি

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর পৃথক ২৩টি স্থানে অস্থায়ী পশু হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এর মধ্যে ডিএনসিসি এলাকায় হাট বসবে ১৩টি, ডিএসসিসি এলাকায় বসবে ১০টি। ইতোমধ্যে এসব হাটের ইজারা চূড়ান্ত করতে সংস্থা দুটি পৃথক দরপত্র আহ্বান করেছে।

এই ২৩টি হাটের সঙ্গে ডিএনসিসির গাবতলী পশু হাট ও ডিএসসিসির সারুলিয়া পশু হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা চলবে। এই দুটি স্থায়ী হাটে সারাবছরই পশু বেচাকেনা হয়। তবে কোরবানির সময়টাতে এখানে পশু বেচাকেনায় সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিতে পশু হাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার বিষয়ে সম্প্রতি ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির আহ্বান করা দরপত্রে কিছুই উল্লেখ নেই।

ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, হিজরি জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। সে অনুযায়ী তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে করোনা মহামারি পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে হাটের সংখ্যা কমতে পারে। গত বছরও দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৪টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় ডিএনসিসিতে ১০টির পরিবর্তে ছয়টি এবং ডিএসসিসিতে ১৪টির পরিবর্তে ১১টি হাট বসানো হয়। কিন্তু তারপরও যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পারেনি ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি। এবারও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউন এখনো চলছে।

jagonews24

ডিএনসিসি
গত ১৯ মে ১০টি অস্থায়ী পশু হাট ইজারা দিতে পত্রিকায় দরপত্র আহ্বান করেন ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক। এর মধ্যে সরকারি মূল্য ৩৪ লাখ ১ হাজার ৪৬৪ টাকায় উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা; এক কোটি ৫৩ লাখ ৩৪ হাজার ৬৬৭ টাকায় ভাটারা (সাঈদনগর) পশুর হাট; ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ২৫০ টাকায় কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা; ৪২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ-সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গা; চার লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকায় উত্তরখান মৈনারটেক শহীদনগর হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গা; ৪২ লাখ ৯৩ হাজার টাকায় ভাষানটেক রাস্তার নির্মাণাধীন অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত অংশ এবং পাশের খালি জায়গা, এক কোটি আট লাখ ৩১ হাজার ৪৩২ টাকায় বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং ব্লক-ই, সেকশন-৩ এর খালি জায়গা; তিন কোটি ৮১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৩৪ টাকায় উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমের অংশ এবং ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে গােলচত্বর পর্যন্ত সড়কের ফাঁকা জায়গা; এক কোটি ৪৮ লাখ ২০ হাজার ৩৪০ টাকায় মিরপুর সেকশন-৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা এবং ৬৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকায় ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠ ইজারা দেয়ার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ সূত্র জানায়, সরকারি মূল্যের সঙ্গে ইজারাদারকে নির্দিষ্ট পরিমাণ শিডিউল মূল্য এবং পরিচ্ছন্ন ফি দিতে হবে। ৯ জুন দরপত্র বিক্রির শেষ দিন। পরদিন ১০ জুন দুপুর ১টায় দরপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হবে। ওই দিন বিকেল ৩টায় প্রথম দরপত্র বাক্স ও খাম খোলা হবে। তখন সর্বোচ্চ দরদাতাকে হাট ইজারা দেয়া হবে। ঈদের দিনসহ এই হাট পাঁচ দিন পরিচালিত হবে।

জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জাগো নিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে অনেক হাটের দরপত্র বিক্রি হয়েছে। পরে হাটের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বাড়লে পত্রিকায় আবার দরপত্র আহ্বান করা হবে।

করোনা মহামারিতে পশু হাট পরিচালনায় স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে নিশ্চিত করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, পশু হাট পরিচালনায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সরকারের সব ধরনের দিক-নির্দেশনা পালন করা হবে। হাট ইজারার বরাদ্দপত্রের শর্তে তা উল্লেখ করা দেয়া হবে। পরে ডিএনসিসি তা পর্যবেক্ষণও করবে।

jagonews24

ডিএসসিসি
গত ২৫ মে ১৩টি অস্থায়ী পশু হাট ইজারায় দরপত্র আহ্বান করে ডিএসসিসি। এর মধ্যে সরকারি মূল্যে ৯০ লাখ ৬৩ হাজার টাকায় উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘের ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; এক কোটি ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার ৮৮৯ টাকায় হাজারীবাগ এলাকায় ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনােলজি মাঠ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা; ৭৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকায় পােস্তগােলা শ্মশান ঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; এক কোটি ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৩০০ টাকায় মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; দুই কোটি ৬৭ লাখ ১২ হাজার টাকায় লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব-সংলগ্ন গােপীবাগ বালুরমাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম-সংলগ্ন বিশ্বরােডের আশপাশের খালি জায়গা; দুই কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় দনিয়া কলেজ মাঠসংলগ্নখালি জায়গা; ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকায় ধূপখােলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; এক কোটি ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ৩০০ টাকায় ধােলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল-সংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা; এক কোটি ১৬ লাখ ৯১ হাজার ৮০০ টাকায় আফতাবনগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক-ই, এফ, জি, এইচ সেকশন ১ ও ২-এর খালি জায়গা; ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৩ টাকায় আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা; ২৬ লাখ ৬০ হাজার ৬০০ টাকায় লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; এক কোটি ৪০ লাখ ৯৮ হাজার টাকায় শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড-সংলগ্ন খালি জায়গা এবং ৬৫ লাখ ৩৫ হাজার ৯৬০ টাকায় গােলাপবাগে দক্ষিণ সিটি করপােরেশন মার্কেটের পেছনের খালি জায়গায় ইজার দেয়া হবে। এর সঙ্গে ইজারাদারকে নির্দিষ্ট পরিমাণ শিডিউল মূল্য ও পরিচ্ছন্ন ফিও দিতে হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন জাগো নিউজকে বলেন, আগামী ৯ জুন দরপত্র বিক্রির শেষ দিন। পরদিন ১০ জুন দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে। সর্বোচ্চ দরদাতাকে হাট ইজারা দেয়া হবে। তবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় হাটের সংখ্যা বাড়তে বা কমতে পারে।

এমএমএ/এইচএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।