ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কা কৃষকদের


প্রকাশিত: ০৭:৩৩ এএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছর আমনের ফলন ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কায় আছেন কৃষকরা। এছাড়াও রয়েছে ধান কাটা শ্রমিকের অভাব। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে।

ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার হোসেন ডাইং, জোটক্যাপাড়া, কামারের মাঠ, কালুপুর ও নাচোল উপজেলার নেজামপুরসহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে সোনালী ধানের ক্ষেতে কৃষকদের হাসি মাখা মুখ।
 
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার গনকা মহল­ার কৃষক আব্দুর রহিম জাগো নিউজকে জানান, এ বছর তিনি সাত বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় তার খরচ হয়েছে প্রায় চার হাজার টাকা। ধান হয়েছে বিঘায় প্রায় ২০ মণ করে।

একই এলাকার এনামুল হক জাগো নিউজকে জানান, লাভের আশায় প্রতি বছর আমনের চাষ করলেও ধান বিক্রির সময় সঠিক মূল্য পাওয়া যায় না। সরকার ধান কিনলেও কোনো সময় সরাসরি তারা ধান বিক্রি করতে পারেন না। দালালের মাধ্যমে ধান বিক্রি করতে হয়। এ কারণে কৃষকরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেন না। সরকার যদি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে তবেই কৃষকরা লাভবান হবেন।

অারেক কৃষক আব্দুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ধানের আবাদ করে প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। নিজের জমি তাই পতিত রাখতে পারছি না। সার, বীজসহ কৃষি উপকরণের দাম কমানো হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ কম হবে।

নামো রাজারামপুর মহল্লার কৃষক জাকারিয়া জাগো নিউজকে জানান, তার ১৬ বিঘা জমিতে ধান পেকে রয়েছে। ধান কাটা শ্রমিকের অভাবে তিনি জমি থেকে ধান কাটতে পারছেন না।

Padi

সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের পাইকালজোল মাঠে কথা হয় ধান কাটা শ্রমিক মনিরুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, বাদলসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, ধানা কাটা ও মাড়ার পর প্রতি মণ ধানে মালিক ছয় কেজি ধান দেন। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এক মাস কাজ করে ১৫ থেকে ১৬ মণ ধান পাওয়া যায়।

কিন্তু ধান না কেটে অন্য কাজ করলে প্রতিদিন ৩শ` থেকে ৩শ` ৫০ টাকা পাওয়া যায়। তাই অনেক শ্রমিক ধান কাটায় উৎসাহ না দেখিয়ে বরং অন্য জায়গায় কাজ করেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ৪৯ হাজার ১৯৩ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চাষ হয়েছে ৫২ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমি। চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২৭ হাজার ৫৭৫ মেট্রিকটন। সম্ভাব্য উৎপাদন হবে এক লাখ ৫৮ হাজার ১১৫ মেট্রিকটন। এখন পর্যন্ত জমি থেকে ধান কর্তন করা হয়েছে শতকরা ২৫ ভাগ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহা. মঞ্জুরুল হুদা জাগো নিউজকে জানান, এ বছর সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, ভালো বীজ, পোকার আক্রমণ কমসহ কৃষি উপকরণ সহজলভ্য ও সার বীজের দাম কৃষকদের নাগালের ভেতরে থাকায় তারা ঠিকমতো ধানের যত্ন নিতে পেরেছেন। সব মিলিয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আমনের ফলন ভালো হয়েছে।

এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।