৯ মাস করোনা, এবারও অর্জিত হচ্ছে না প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য
অডিও শুনুন
গত অর্থবছরের (২০১৯-২০) ৮ মাস না পেরোতেই অর্থাৎ চলতি বছরের মার্চ থেকে দেশে হানা দেয় করোনাভাইরাস সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯। কয়েক বছর ধরে টানা মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) বাড়তে থাকলেও চলতি অর্থবছরের চার মাসে করোনার ধাক্কায় সব হিসাব ওলট-পালট হয়ে যায়। পতন ঘটে প্রবৃদ্ধির। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্জিত হয় ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। অবশ্য বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের এ অর্জন বেশ ভালো। যদিও এই অর্জনের বাস্তবতা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল।
করোনার মাঝেই সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুত করে। ১৩ জুন চলতি অর্থবছরের বাজেট সংসদে উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। কোভিড-১৯ মহামারির মহা প্রকোপের মাঝেও চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮ দশমিক ২ শতাংশ; আগের অর্থবছরে সবকিছু যখন স্বাভাবিক ছিল তখনও একই লক্ষ্যমাত্রা ছিল।
করোনার নয় মাস ও চলতি অর্থবছরের ছয় মাস পেরিয়ে যাচ্ছে; এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে যাচ্ছে চলতি অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জনেও। এবারের জিডিপির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জিডিপির প্রবৃদ্ধির হিসাব প্রকাশ করে থাকে।
সম্প্রতি (২০ ডিসেম্বর) পরিকল্পনামন্ত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই অর্থবছরের ৬ মাস পার হবে ডিসেম্বরে। পুরো সময়টাই করোনা। এর মধ্যেই কিন্তু আমরা বাজেট পাশ করেছি। এই বাজেটের যে রূপরেখা আছে, তা করোনার প্রভাবের সময়ই তৈরি করা হয়েছে। আমরা হিসাব করি বছর শেষে। মার্চ-এপ্রিলে যখন সংশোধিত বাজেট করবো, তখন কিছুটা আইডিয়া (ধারণা) পাব যে আমাদের কত ভাগ বাস্তবায়ন অর্জিত হয়েছে।’
‘আমার ধারণা আমরা পেছনে আছি। কত ভাগ পেছনে আছি আমি এখন বলতে পারব না। বলা ঠিক হবে না। আর কিছুদিন পরে বলতে পারব যখন পরিসংখ্যান থেকে বা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য পাব। যদিও আমরা পুরোটা অর্জন করতে পারিনি, অন্যান্য অঞ্চল বা দেশের তুলনায় আমাদের অর্জন ভালো। এটা বিশ্বব্যাংক বলছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বলছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও বলছে। সেই বিচারে মনে করি, আমরা ভালো পর্যায়ে আছি।’
চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮ দশমিক ২ শতাংশ থাকলেও ৫ বা ৬ শতাংশ অর্জন হতে পারে বলেও জানান এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘তবে এটা সুনির্দিষ্ট করে বলার সময় এখনও আসেনি।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের বেশ ঘাটতি আছে। ঘাটতি পূরণের জন্য আমাদেরকে দ্বিগুণ খাটুনি খাটতে হবে। সব খাটুনি নির্ভর করবে করোনার গতিবিধির ওপর। এই মুহূর্তে করোনা নিয়ন্ত্রণই হলো প্রধান কাজ।’
নিম্ন আয়ের মানুষের কাজ যেন থাকে বা তারা যাতে কিছু একটা করে খেতে পারে, সেই দুটি জিনিস সরকারের প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এই কাজটা আমরা এই মুহূর্তে করছি। আর বড় বড় কিছু প্রকল্প আছে, যেগুলো মানুষের চিন্তা-চেতনাকে প্রভাবিত করছে যেমন পদ্মা, মেট্রোরেল ইত্যাদির প্রতি আমরা বাড়তি অর্থ ও মনোযোগ দিয়ে বাকি ৬ মাসে তুলে আনার চেষ্টা করব।’
পিডি/এসএস/ইএ/জেআইএম