রোপা আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
শরীয়তপুরে এবার রোপা আমনের বাম্পার ফলনে হয়েছে। এতে কৃষকদের চোখে মুখে তাই হাসির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। কৃষকরা এখন ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার ছয়টি উপজেলায় রোপা আমন চাষের জন্য ৬ হাজার ৪শ ৭১ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বিচ্ছিন্ন কিছু জমিতে পোকার আক্রমণ হলেও রোপা আমন চাষে কৃষকদের মনে তেমন প্রভাব পড়েনি। পুরো উদ্যমে কৃষকরা রোপা আমন চাষ করেছে। আর এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর পূর্ণ সহযোগিতা করেছে।
শরীতপুর সদর উপজেলার দরিচর গ্রামের কৃষক মাসুদ সরদার বলেন, এ বছর রোপা আমনের চাষ আমাদের ভাল হয়েছে। আমরা এখন ধান কাটায় ব্যস্ত। বাড়ির নারীরাও আমাদের সহযোগিতা করছে।
একই উপজেলার কাশাভোগ গ্রামের কৃষক সোহরাব মাদবর বলেন, এবার রোপা আমন চাষ করতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং পোকা মাকড়ের আক্রমণ ছিল অনেক বেশি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের স্যারেরা আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে।
একই উপজেলার হাজতখোলা গ্রামের কৃষক সোলায়মান ছৈয়াল বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর রোপা আমনের চাষ ভালো হয়েছে। আশা করছি এবার ধান বিক্রি করে কৃষি ঋণ পরিশোধ করতে পারবো।
জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর গ্রামের কৃষক সোবাহান সরদার বলেন, তুলনামূলকভাবে এ বছর রোপা আমনের চাষ ভাল হয়েছে। গত বছর পোকা মাকড়ের আক্রমণে আমার দুইটি জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এবার কৃষি অফিসের স্যারেরা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে। তারা পাশে না থাকলে এবারও আমার ধান নষ্ট হয়ে যেত। সঠিক সময়ে কীটনাশক দিতে পেরেছিলাম বলেই এবার রোপা আমন ভালো হয়েছে।
একই উপজেলার লাউখোলা গ্রামের কৃষক মুজাফফর হোসেন বলেন, যদিও রোপা আমন চাষ ভালো হয়েছে কিন্তু চাষ করতে আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। কারণ দূর্যোপূর্ণ আবহাওয়া আমাদের অনেক ভুগিয়েছে। তারপরও আমরা থেমে থাকিনি। এক্ষেত্রে কৃষি অফিসও আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করছে।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এ বছর রোপা আমন চাষে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল আমরা তার চাইতেও বেশি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের কর্মীদের আন্তরিকতা এবং কৃষকদের সদ্বিচ্ছা ও সহযোগিতার কারণেই আমরা এ সাফল্য ঘরে আনতে পেরেছি। এ বছর দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং পোকা মাকড়ের আক্রমণ একটু বেশি হলেও যথা সময়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পেরেছি। তাই এ বছর রোপা আমন চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে।
এসএস/আরআইপি