মহাসড়কের দুর্ঘটনাস্থলে সবার আগে ফায়ার সার্ভিস


প্রকাশিত: ১০:৪২ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০১৫

দেশের মহাসড়কগুলোতে প্রায়ই বাস-ট্রাকসহ নানা যানবাহনের দুর্ঘটনা ঘটে। এর অধিকাংশই ঘটে গভীর রাতে। আহত অবস্থায় অনেকেই সড়কে পড়ে থাকেন। অন্ধকারে তাদের দেখার মতো কেউই থাকে না। প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে বাড়ে হতাহতের সংখ্যা। মহাসড়কের দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছানো এবং হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য র‍্যাপিড রেসকিউ স্কোয়াড (আরআরএস) নামে সম্প্রতি একটি কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।

এই কার্যক্রমে মহাসড়কের ৯৭টি পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণভাবে অবস্থান করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এই স্কোয়াড মহাসড়কের দুর্ঘটনাস্থলে সবার আগে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন বাহিনীটির মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রি. জে. আলী আহমদ খান।

জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে মহাপরিচালক বলেন, আরআরএসের প্রশিক্ষিত কর্মীরা দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে একটি অ্যাম্বুলেন্সসহ আশপাশে অবস্থান নেয়। মহাসড়কের কোথাও অগ্নিকাণ্ড বা দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুম থেকে তাদের খবর দেয়া হয়।

মহাসড়কে অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলোতে নিয়মিত টহল প্রদানসহ স্থানীয় লোকজন, সাধারণ দোকানদার, ভলান্টিয়ার, হাইওয়ে পুলিশ সকলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও সমন্বয় রক্ষা করে কমিউনিটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন কর্মীরা। আরআরএসের সদস্যরা এ পর্যন্ত মহাসড়কের ১৩টি দুর্ঘটনার উদ্ধার কার্যে অংশ নিয়ে ৫০ জনের বেশি জীবিত এবং ১০ জনকে মৃত উদ্ধার করেছে।

ডিজি বলেন, আরআরএস ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অপারেশনাল কার্যক্রমে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দুর্ঘটনা মোকাবেলায় অধিকতর দ্রুততার সঙ্গে সাড়া দেয়া, দুর্ঘটনায় আহত লোকদের উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবার জন্য দ্রুত হাসপাতালে প্রেরণ, দুর্ঘটনারোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাই এ কার্যক্রমের প্রধান উদ্দেশ্য।

ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বড় দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য ফায়ার সার্ভিসের কাছে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি আছে কি-না জানতে চাইলে আলী আহমদ খান বলেন, ‘আগুন ও অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবেলায় যেসব লাইট (হালকা) ও মিডিয়াম সরঞ্জাম দরকার, তার প্রায় সবই ফায়ার সার্ভিসের কাছে রয়েছে। গত কয়েকবছরে ফায়ার সার্ভিসে বেশ কয়েকটি আধুনিক ইকুইপমেন্ট যুক্ত হয়েছে। সরকারের বাজেটে আরো ইকুইপমেন্ট কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি সেগুলো সময়মতো পেয়ে যাবো।’

দুর্যোগের বিপর্যয় মোকাবেলায় ২০১০ সাল থেকে এলাকাভিত্তিক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক (ভলান্টিয়ার) নিয়োগ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও এ পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। তবে আর্থিক সুবিধার অভাবে অনেক ভলান্টিয়ার এ কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। প্রশিক্ষণ নেয়ার পর তাদের ঝরে পরায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।

এবিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, ভাতা না দেয়ায় ভলান্টিয়ারদের হতাশ হয়ে পড়ার বিষয়টি সত্য। এক্ষেত্রে সরকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে তাদের জন্য একটি তহবিল করতে পারে।

এআর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।