রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই চুয়াডাঙার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে


প্রকাশিত: ১০:৫৯ এএম, ০৯ নভেম্বর ২০১৫

চুয়াডাঙার জেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ওষুধ স্বল্পতার কারণে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ওষুধ সংকটে পড়ে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। প্রতিটি ক্লিনিকে দুই মাস অন্তর এক কার্টুন করে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

এছাড়া ক্লিনিকগুলো সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও তা বন্ধ হয়ে যায় দুপুরের আগেই। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ক্লিনিক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষদের। যার ফলে তাদরে নির্ভর করতে হচ্ছে প্রাইভেট ক্লিনিক বা হাসপাতালের উপর। ফলে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা গুণতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে।

Clinick-News
তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতি ছয় হাজার জনসংখ্যার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। সে মোতাবেক চুয়াডাঙার জেলায় ১১৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২৬টি, আলমডাঙা উপজেলায় ৪৪টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ২৮টি এবং জীবননগর উপজেলায় ২০টি।

এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে তিন মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ দিয়ে একজন করে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া প্রতিটি ক্লিনিকে একজন করে স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও আজ অবধি তা দেয়া হয়নি।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের আওতায় রোগীর অবস্থা অনুযায়ী বিতরণের জন্য ৩১ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এগুলো হচ্ছে, এমোক্সিসিলিন, ডক্সিসাইক্লিন, অ্যাজিথ থ্রোমাইসিন, অ্যালবেনডাজল, ক্যালসিয়াম, ক্লোরফেনিরামিন, মেট্রোনিডাজল, অ্যান্টাসিড, ল্যাকটেট, কো-ট্রাইমোক্সাজল, ফেরাস ফিউমারেট উইথ ফলিক-এসিড, হাইয়োসিন এন বিউটাইলব্রোমাইড, প্যারাসিটামল, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, জিঙ্ক ডিসপ্লারসিবল, পেনিসিলিন বি, এমোক্সিসিলিন পেডিয়াট্রিক ড্রপ, অ্যাজিথ থ্রোমাইসিন ড্রাই সিরাপ, ক্লোরফেনিরামিন, বেনজাইল বেনজোয়েট, প্যারাসিটামল সাসপেনশন, ক্লোরহেক্সিডাইন অ্যান্ড কেট্রিমাইড সল্যুশন, সালবিউটামল, কম্পাউন্ড বেনজোয়িক অ্যাসিড অয়েনমেন্ট, জেনটিয়ান ভায়োলেট টপিক্যাল সল্যুশন, নিউমাইসিন অ্যান্ড বেসিট্রাসিন অয়নমেন্ট, ক্লোরামফেনিকল আই অয়েনমেন্ট।

নিয়মানুযায়ী ক্লিনিকগুলো সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও জেলার কিছু ক্লিনিক বন্ধ হয়ে যায় দুপুরের আগেই।

Clinick
জীবননগর উপজেলার বেনীপুর গ্রামের আব্দুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, এখানকার কমিউনিটি ক্লিনিকটি প্রায় প্রতিদিনই দুপুরের আগে বন্ধ হয়ে যায়। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে বেনীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলার সেনেরহুদা কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার শেফালি খাতুন জানান, এখানে গড়ে প্রতিদিন দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। ফলে সরবরাহকৃত ওষুধ এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ফুরিয়ে যায়। এ কারণে পরবর্তী কোটার ওষুধ না আসা পর্যন্ত রোগীদের অনেক ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রওশনারা জানান, নির্দিষ্ট সময়ে ক্লিনিকে না আসা বড় ধরনের অপরাধ। যে সমস্ত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা ঠিকমত অফিস করেন না, তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙার সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, সেসব ক্লিনিকে অনিয়ম পাওয়া যাবে, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সালাউদ্দীন কাজল/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।