হেড কোয়ার্টার্সের নির্দেশ মানেনি চেকপোস্ট পুলিশ
রাজধানীর গাবতলীতে ২২ অক্টোবর পুলিশের এএসআই ইব্রাহীমকে কুপিয়ে হত্যার পর চেকপোস্টে বিশেষ সতর্কতা জারি করে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স। তবে এই নির্দেশনা অমান্য করে পুলিশ সদস্যরা যে যার মতো চেকপোস্টে তল্লাশির কাজ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার আশুলিয়ায় চেকপোস্টে তল্লাশির সময় খুন হন মুকুল হোসেন (২৫) নামে শিল্প পুলিশের এক কনস্টেবল।
মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) সূত্র জানায়, এএসআই ইব্রাহীম হত্যার পরে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর সারাদেশের চেকপোস্টগুলোতে পুলিশকে ‘অন-গার্ড’ অবস্থায় থাকতে বলা হয়।
আশুলিয়াসহ দেশের চেকপোস্টগুলোতে পুলিশ সদস্যরা যদি ‘অন-গার্ড’ অবস্থায় থাকতেন তাহলে কোনোভাবেই দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর হামলায় করতে পারতো না।
পুলিশের ভাষায়, অন-গার্ড বলতে চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় তিনজন সদস্য চেকপোস্টে তল্লাশির কাজ করবেন। এর কয়েক গজ দূরে চতুর্থজন চেকপোস্টের দিকে অস্ত্র তাক করে রাখবেন। পঞ্চম পুলিশ সদস্য চতুর্থজনের পেছনে অস্ত্র অথবা লাঠি নিয়ে প্রস্তুত থাকবেন যাতে কোনোভাবেই সন্দেহভাজনরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে না পারে।
তবে দেশের অধিকাংশ চেকপোস্টের পুলিশ সদস্যরা এই আদেশ না মেনে তল্লাশির কাজ করতেন। এমনকি বুধবার আশুলিয়ার ঘটনায় চেকপোস্টে অন-গার্ড অবস্থায় ছিল না পুলিশ। দুজনের উপর হামলা হলেও বাকিরা অস্ত্র নিয়ে তাক করা ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ বিষয়ে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের প্রধান (ডিআইজি) মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান ও পুলিশ সুপার (এসপি) হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার।
তিনি জানান, দায়িত্ব পালনের সময় মাঠপর্যায়ের চেকপোস্টে থাকা পুলিশ সদস্যদের বেশ কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা সরেজমিন তাদের কর্মকাণ্ড তদারক করছেন। অসঙ্গতি দেখলে ব্যবস্থাও নিচ্ছেন।
আশুলিয়ার ঘটনায় পর ডিএমপি এবং পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স থেকে চেকপোস্টগুলোকে আবারো ‘অন-গার্ড’ অবস্থায় থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ডিএমপি সূত্র জানায়, আশুলিয়ার ঘটনার পর ডিএমপি হেড কোয়ার্টার্সে কমিশনার আছাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেকপোস্টের পুলিশকে আবারো সতর্ক অবস্থা ও অন-গার্ডে থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনের সময় বুলেট প্রুফ জ্যাকেট এবং অস্ত্র গুলি ভর্তি রাখতে বলা হয়েছে।
এআর/এসকেডি/আরআইপি