সিজার হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা শনাক্ত
ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যেকোনো সময়ে তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রটি জানায়, শনাক্তকৃত তিন ব্যাক্তি একটি মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলে আসে। তবে যাওয়ার সময় বাইকে দু’জন একসঙ্গে এবং অপরজন পায়ে হেঁটে মোবাইলে কথা বলার ভঙ্গি করে পালিয়ে যায়। এই তিনজনই তাবেলা সিজারকে হত্যা করেছে।
মোটরসাইকেলের হেড লাইট জ্বলে থাকার কারণে একটি সিসি ক্যামেরায় দু’জনের চেহারা স্পষ্টভাবে বোঝা না গেলেও বাকি ক্যামেরাগুলোতে তাদের ছবি পাওয়া গেছে বলে দাবি তদন্ত কর্মকর্তাদের।
২৮ সেপ্টেম্বর গুলশান-২ এর কূটনীতিক পাড়ায় গুলি করে হত্যা করা হয় ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজারকে।
তদন্ত সূত্র জানায়, ঘটনার দিন বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী, নিকেতন ও নতুনবাজারসহ আশপাশের এলাকার প্রায় দেড়শ বসতবাড়ি এবং সড়কের ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে সর্বশেষ এই তিনজনকে হত্যাকারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ফুটেজে পাওয়া মোবাইল ফোন কানে যে ব্যক্তিটি হাঁটছেন তার কোমরেই অস্ত্র রাখা আছে বলে ধারনা তদন্ত কর্মকর্তাদের। তাদের ধারনা, গুলশানের সড়কগুলোতে পুলিশি চেকপোস্ট থাকার কারণে তাদের মধ্যে একজন অস্ত্রটি নিয়ে বাইক থেকে নেমে পড়েছিল।
এবিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারে করা হবে। তদন্তের এ পর্যায়ে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না। সময় হলে তা সবার সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হবে।
সূত্র জানায়, শনাক্তদের মধ্যে একজন বাড্ডা এলাকার বিএনপির কর্মী। তার নাম মো. রাসেল। এছাড়াও রাসেল নামের আরেকজন এবং তামজিদ নামে এক মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই তিনজকে নিয়েই মূলত চলছে তদন্তের কাজ।
এদিকে গুলশান-বনানী-নিকেতন এলাকার অত্যাধুনিক কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অনুমোদিত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটগুলোর স্পষ্ট নম্বর ভেসে উঠেছে। তদন্ত কর্মকর্তারা প্রায় ১০টি মোটরসাইকেলের নম্বর সংগ্রহ করে সেগুলোর মালিকদের ঠিকানা সংগ্রহ করেছে। এসব তথ্য দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা ছিল সেগুলো জানার চেষ্টা করছে তদন্ত কর্মকর্তারা।
এঘটনায় বাড্ডা ও গুলশানের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী শুটার জুয়েলসহ ৮ জনকে আটকের গুঞ্জন শোনা গেলেও বিষয়টি নিশ্চিত করছেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান-২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়কের ফুটপাতে তাভেলা সিজারকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হলে সিজারের মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দী অনুযায়ী, একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
এআর/এআরএস/পিআর