সাকা-মুজাহিদের রিভিউ ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই


প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৫

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপিলের রায়ের রিভিউ আবেদন করা হবে ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই। আইনজীবী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার পর দু’জনকেই কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানা পাঠ করে শোনানো হয়। শুনানির পর থেকেই রিভিউ আবেদনের দিন গণনা শুরু হয়েছে।

আইনজীবীরা জানান, গত ১ অক্টোবর থেকেই রিভিউ আবেদনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। তবে মৃত্যু পরোয়ানা জারির আগেই দুপুরে সাকা এবং বিকেলে মুজাহিদের রায়ের রিভিউ আবেদন করা হবে বলেও জানান তারা। এ বিষয়ে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুকে রিভিউ আবেদন করা হবে মর্মে নোটিশও দিয়েছেন।

মুজাহিদের আইনজীবী মো. শিশির মনির জাগো নিউজকে বলেন, মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর মুজাহিদকে তা পাঠ করে শোনানো হয়েছে। সেই থেকেই দিন গণনা শুরু। সে হিসেবে রিভিউ আবেদন করার জন্য নিয়ম অনুযায়ী সময় আছে আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। আমরা নির্দিষ্ট দিনের মধ্যেই রিভিউ আবেদন করবো।

তিনি আরো বলেন, রিভিউ আবেদন করার আগে রাষ্ট্রপক্ষকে নোটিশ করতে হয়। সেটা আমরা ইতোমধ্যে করেছি। আমরা সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বৃহস্পতিবারই মুজাহিদের রায়ের রিভিউ করা হবে মর্মে চিফ প্রসিকিউটরকে জানিয়েছি।
 
অপরদিকে, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম আলফেসানী জাগো নিউজকে বলেন, গত ১ অক্টোবর থেকেই রিভিউ আবেদনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। সে হিসেবে আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে। প্রস্তুতি চলছে, আমরা এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রিভিউ আবেদন করবো। তবে দিনক্ষণ ঠিক করে বলতে পারবো না।

তিনি আরো বলেন, রায়ের সার্টিফাইড কপি হাতে পাওয়ার পর থেকেই দিন গণনা শুরু। আমরা গত ১ অক্টোবরই কপি পেয়েছি। ওইদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানার কপি কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে রেজিস্ট্রার শহীদুল আলম ঝিনুক মৃত্যু পরোয়ানায় সই করে তা পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পরে ট্রাইব্যুনালের কর্মীরা মাইক্রোবাসে করে তা পৌঁছে দেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারের কাছে।

একইসঙ্গে পরোয়ানার অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও পাঠানো হয়। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় দণ্ড কার্যকরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া। তবে রিভিউ আবেদন করার পর দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত হয়ে যাবে বলে জানান রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

জামায়াত নেতা মুজাহিদ বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আছেন কাশিমপুর কারাগারে।

নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যু পরোয়ানার ভিত্তিতেই সরকারের তত্ত্বাবধানে কারা কর্তৃপক্ষ সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি নেবেন। তবে রিভিউ আবেদন হলে তার নিষ্পত্তি হওয়ার আগে দণ্ড কার্যকর করা যাবে না বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের মীমাংসা হলেই সরকার পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে সেই রায়ের অনুলিপি কারাগারে পাঠানো হবে এবং কারাকর্তৃপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসামিদের দণ্ড কার্যকর করবেন বলে জানান মাহবুবে আলম।

তবে এর আগে আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনারও সুযোগ পাবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সাকা চৌধুরীর এবং তার আগে একই বছর ১৭ জুলাই মুজাহিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রায় দেন ট্রাইব্যুনাল।

আপিল পরবর্তী প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ গত ১৬ জুন মুজাহিদের দণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। একই বেঞ্চ গত ২৯ জুলাই সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আপিলের রায় ঘোষণা করেন। দুই রায়েই ট্রাইব্যুনালের দেয়া সর্বোচ্চ সাজার দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

এফএইচ/এসকেডি/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।