‘নমনীয়’ আওয়ামী লীগ

আমানউল্লাহ আমান
আমানউল্লাহ আমান আমানউল্লাহ আমান , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দুই ধাপে দলীয় প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পরবর্তী তিন ধাপের দলীয় প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দলীয় প্রার্থীদের বিরোধিতার বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা বলা হয় দলটির পক্ষ থেকে। তবে সেই কঠোরতা কাটিয়ে কিছুটা নমনীয় ভাব দেখা দিয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের মাঝে।

তারা মনে করছেন, উপজেলা নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতেই ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদ শুরু থেকে উন্মুক্ত রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ বিরোধীদের নির্বাচনে আসার সম্ভাবনায় সে অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। তবে বিরোধীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে ঘোষণা দেয়ার পর পুনরায় উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরুতে দলের তৃণমূল থেকে চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান তিনটি পদেই নাম চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্র থেকে। এরপর থেকে দলের কেন্দ্রে আসতে শুরু করে অভিযোগ। একে একে তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ৭০০ অভিযোগ এসেছে বলে দলটির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

কেন্দ্রে তৃণমূলের অনিয়ম-অভিযোগের কারণে দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়। ফলে নতুন মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় যে কেউ মনোনয়ন কিনতে পারছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর বেশকিছু উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এসেছে। ওইসব উপজেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এতে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

দলটির নেতারা জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সেক্ষেত্রে দলীয় পদ-পদবিধারী অনেকেই দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। প্রার্থিতা জমা দেয়া থেকে প্রত্যাহার পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতে হবে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার উত্তরে নমনীয় হওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘বিএনপি অংশ না নিলে আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ বাড়বে, তাতে বিএনপির লাভটা কী? রেজাল্ট কি তাদের পক্ষে আসবে? আওয়ামী লীগের যদি নৌকা প্রার্থী না জেতে, তাহলে বিদ্রোহী প্রার্থী জিতবে। সেও তো আওয়ামী লীগের, তাতে বিএনপির লাভ কী?’

উপজেলা নির্বাচনে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে বহিষ্কার বা দলীয় সিদ্ধান্ত শিথিলের কোনো কৌশল আছে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেখুন, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার আগে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগে, কে বিদ্রোহী- সেটা আমরা বলতে পারছি না। কাজেই আগে আমরা নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণা করে দেখছি…, এরপর যদি কেউ বিদ্রোহ করে তখনকার বিষয়টা আমরা তখন দেখব। এখন আমাদের যেটা কাজ সেটা হলো, প্রার্থিতা জমা দেয়া থেকে প্রত্যাহার পর্যন্ত অপেক্ষা করা।’

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ৮৭ উপজেলায় ১০ মার্চ, দ্বিতীয় ধাপে ১২৯ উপজেলায় ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ ১২৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া চতুর্থ ধাপ ৩১ মার্চ এবং পঞ্চম ধাপে ১৮ জুলাই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এইউএ/এনডিএস/এমএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।