আ.লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি, সুবিধায় বিএনপি-জাপা

আবু আজাদ
আবু আজাদ আবু আজাদ , নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৫:২৭ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০১৮

আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা কাজ করলেও এরই মাঝে ‘দৌড়ঝাঁপ' শুরু করেছেন প্রায় সব রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে শেষ ঈদে ‘এক ঢিলে দুই পাখি' মেরেছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

ঈদুল আজহায় চট্টগ্রামের শহর-গ্রাম সব স্থানেই চোখে পড়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনসংযোগ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি- বড় এই তিন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা গেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রায় প্রতিটি আসনেই বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থিতার ছড়াছড়ি। মন্ত্রী-এমপিরা ঘন ঘন যাচ্ছেন নিজ এলাকায়। ভোটাররাও চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন তাদের কর্মকাণ্ডের।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক প্রস্তুতি, দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, সর্বশেষ অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, মাঠের অবস্থাইবা কী- এসব নিয়ে জাগো নিউজ’র ধারাবাহিক প্রতিবেদন ‘ভোটের বাদ্য’। নবম কিস্তিতে আজ থাকছে ‘চট্টগ্রাম-৯’ এর সার্বিক চিত্র।

southeast

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্যপ্রার্থী নুরুল ইসলাম বিএসসি, আবদুচ ছালাম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কাল থেকে চট্টগ্রাম শহরের প্রধান কেন্দ্র কোতোয়ালি। সেই প্রচলিত ধারায় শহরের প্রাণকেন্দ্রও বর্তমান কোতোয়ালি থানা ঘিরে। এটি বন্দরনগরীর সবচেয়ে প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এই সংসদীয় আসনে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জ, আদালত, সিটি করপোরেশন, সিডিএ প্রধান কার্যালয়, পুলিশ, ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারের অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশাসনিক অফিস।

চট্টগ্রাম নগরের চারটি আসনের মধ্যে হাইভোল্টেজ আসন এই কোতোয়ালি (চট্টগ্রাম-৯)। চট্টগ্রামে একটি প্রবাদ চালু আছে, ‘কোতোয়ালি আসন যারা জেতে, তারাই সরকার গঠন করে’। স্বাধীনতার পর থেকে এর স্বাভাবিক পুনরাবৃত্তি চলছে।

চট্টগ্রাম–৯ সংসদীয় আসনটি সিটি করপোরেশনের ৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৩৯ হাজার ৯১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৩০ হাজার ১৪৭ এবং মহিলা ভোটার এক লাখ নয় হাজার ৭৬৭ জন।

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসন থেকে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন- নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

southeast

বিএনপির সম্ভাব্যপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন, আবুল হাশেম বক্কর ও শামসুল আলম

এছাড়া নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান, জহুর আহমদ চৌধুরীর ছেলে সাবেক ছাত্রনেতা জসীম উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের ছেলে নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুল লতিফ টিপু এবং কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে এ আসনে আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি। তবে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি মহাজোট থেকে নির্বাচনে অংশ নিলে এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু। জোটের বাইরে গিয়ে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে তার জন্যও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে দলটি।

তবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ‘প্রার্থীর কঠিন সমীকরণের’ মধ্যে অনেকটাই নির্ভার বিএনপি। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বলছেন, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভার, লিংক রোড, সড়ক প্রশস্তকরণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে চট্টগ্রামে। এছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে দুই প্রকল্পে আট হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, পিডিবিসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নকাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। চলমান রয়েছে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পও। তাই এবার চট্টগ্রাম নগরে কোনো ছাড় নয়। তারা মনে করছেন, উন্নয়নের এই জোয়ারে নগরের সবকটি আসনেই আওয়ামী লীগমনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করা সম্ভব হবে। এবার আর দলের বাইরের কাউকে নগরের গুরুত্বপূর্ণ আসনটি ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না।

গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে মহাজোটপ্রার্থী হিসেবে জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির এমপির সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বর্তমান সংসদ সদস্যের ভূমিকা নেই বললেই চলে। জিয়াউদ্দিন বাবলুর বাড়ি রাউজান উপজেলায়। তিনি রাজনীতি করেন কেন্দ্রে। ফলে কোতোয়ালি এলাকায় তার পদচারণা কখনও ছিল না। এলাকার ভোটাররা তাকে তেমন একটা পান না। সরকারের ইতিবাচক কর্মকাণ্ড ও কর্মসূচি জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের কোনো সহযোগিতা পাননি তারা। থানা ও ওয়ার্ডের অনেক নেতাই জাপা এমপির সমালোচনায় মুখর। তারা আগামী নির্বাচনে এই আসনে দল থেকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান। এ জন্য সভা-সমাবেশও করেছেন তারা।

কয়েক মাস আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ চট্টগ্রাম সফরে এসে বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলুকে এই আসনে দল থেকে মনোনয়ন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সে সময় এরশাদ বলেন, ‘এই বাবলু তো আমার ছেলে ছিল আগে। এখন আমার জামাই হয়েছে। ও তো ভালো কাজ করে। এই সিট (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) থেকে নির্বাচন করবে সে। আপনারা যদি ভোট দেন তাহলে বাবলু জয়ী হতে পারবে।’

southeast

দলীয় কর্মসূচিতে বক্তব্য দিচ্ছেন মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

জিয়াউদ্দীন বাবলুর সমর্থকদের দাবি, ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতাকর্মী নিজেদের মর্জি-মাফিক যা-তা বলছেন। বর্তমান এমপি সপ্তাহে অন্তত তিনদিন চট্টগ্রামে থাকেন। কোতোয়ালি ও বাকলিয়ার অলিগলিতে ছুটে বেড়ান। তাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করেন।

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মহাজোটপ্রার্থীর দূরত্ব এবং নিজ দলে একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগ রয়েছে বেকায়দায়।

এদিকে কোতোয়ালি আসনে বিএনপির সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল নোমান। দলীয় সূত্রের খবর, এবার তিনি চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন। তাই নোমানের সাবেক সংসদীয় আসন থেকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন আগামী নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী। পাশাপাশি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সামশুল আলমের নামও আলোচনায় আছে। সম্ভাব্যপ্রার্থীদের তিনজনের বাড়ি বাকলিয়ায়।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, এ আসনে কে বিএনপির প্রার্থী হবেন তা প্রায় চূড়ান্ত। বাকলিয়া হচ্ছে বিএনপির ঘাঁটি। কোতোয়ালিতেও তাদের ভালো অবস্থান রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখানে বিএনপি বিজয়ী হবে।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্যপ্রার্থী এবং বর্তমান সরকারের প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি মনোনয়ন প্রসঙ্গে জাগো নিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় আসনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ আসনে আমি আগেও এমপি ছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে স্কুল–কলেজ নির্মাণসহ এলাকার প্রচুর উন্নয়ন করেছি। ফলে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ব্যাপক জনসমর্থন আমার পক্ষে আছে। তাই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি এ আসন থেকে নির্বাচন করতে চাই। তবে এক্ষেত্রে দলীয় সভানেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’

এ আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নাম খুব জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। তার পক্ষের নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে গিয়ে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে পাওয়া খবরও আলোচনায় আনছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল গত নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনজরে আছেন। এছাড়া তিনি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করে আনার জন্য ভূমিকা রাখেন।

southeast

এলাকায় গণসংযোগ করছেন ডা. শাহাদাত হোসেন

নৌকার প্রতীক পাওয়া প্রসঙ্গে নওফেল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন এই নগরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেবা করে গেছেন। তার থেকেই শিখেছি, জনগণের সেবা করতে হলে জনপ্রতিনিধি হতে হবে। তাই নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনপ্রতিনিধির কাতারে যেতে চাই।’

এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্যপ্রার্থী হিসেবে বেশ আলোচনায় আছেন অপর হেভিওয়েটপ্রার্থী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের নাম। গত মেয়র নির্বাচনে তার প্রার্থী হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনকে মনোনয়ন দেয়ায় তিনি নাম প্রত্যাহার করে নেন। এছাড়া গত নয় বছর সিডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে একটানা দায়িত্ব পালনকালে নগরীর ব্যাপক উন্নয়নকাজ করেছেন আবদুচ ছালাম। তার এসব কাজ নগরবাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছে।

আবদুচ ছালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি শতভাগ সততার সঙ্গে সে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। নির্বাচনে কোন আসন থেকে কে মনোনয়ন পাবেন, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমি তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাব।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু জাগো নিউজকে বলেন, ‘কোতোয়ালি আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে এলাকায় বহুমুখী উন্নয়নকাজ করেছি। দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশার কারণে আমার একটা অবস্থান ও ভিত্তি তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগত হোক কিংবা পার্টির পৃথক জোটে হোক, আগামী নির্বাচনেও আমি প্রার্থী হচ্ছি। দলের চেয়ারম্যান গত ৭ এপ্রিল লালদীঘির মাঠে দলীয় সমাবেশে চট্টগ্রাম-৯ আসনে আমাকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন।’

ধানের শীষ প্রতীকপ্রাপ্তির বিষয়ে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘কোতোয়ালি-বাকলিয়া আমার এলাকা। এ আসন থেকে নির্বাচনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছি। দল যদি নির্বাচনে যায় আমি এখান থেকে নির্বাচন করবো- এটা নিশ্চিত। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ম্যাডাম আমাকে এ আসন থেকে নির্বাচন করতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি পরবর্তী মেয়র নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হইনি।’

southeast

সামাজিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু

‘দীর্ঘ ৩২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে দল-মত নির্বিশেষে সবার সঙ্গে ভালো যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। কোতোয়ালি-বাকলিয়া বিএনপির দুর্গ। এ আসনে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষই বিজয়ী হবে।’

নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর বলেন, ‘বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল। এ দল নির্বাচনের জন্য সবসময় প্রস্তুত। তবে, সবকিছুর আগে আমাদের দাবি হলো নেত্রীর মুক্তি। তারপর নির্বাচন। অতীতের মতো চট্টগ্রাম-৯ আসনে বিএনপি জয়ী হবে বলে আমরা আশাবাদী। যদি দল চায় তাহলে এ আসন থেকে আমি নিজেও নির্বাচন করতে প্রস্তুত।’

এছাড়া গতবারের ধারাবাহিকতায় এবারও চট্টগ্রাম-৯ আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবু হানিফ, সাবেক সংসদ সদস্য ও গণফোরাম সভাপতি কফিল উদ্দিনের ছেলে ইসলামিক ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর শাখার অর্থ সম্পাদক ওয়াহেদ মুরাদ প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। জাতীয় পার্টির জোটে থাকা বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিনও আসনটি থেকে দলের প্রার্থী হতে পারেন।

বিগত নির্বাচনের ফলাফল

১৯৯১ সাল থেকে পাঁচ দফা নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসন থেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমান দু’বার বিজয়ী হয়েছে। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত হন বর্তমান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ মান্নান (প্রয়াত)। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য হন নুরুল ইসলাম বিএসসি। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির জিয়া উদ্দীন আহমেদ বাবলু এমপি নির্বাচিত হন।

[‘ভোটের বাদ্য’র দশম কিস্তিতে থাকছে ‘চট্টগ্রাম-১০’ আসনের সম্ভাব্যপ্রার্থীদের নাম এবং তাদের নিয়ে স্থানীয়দের চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন জাগো নিউজে]

আবু আজাদ/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।