খাতার দামও বাড়তি
মান ও আকার ভেদে প্রতি পিস লেখার খাতার দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। গত রোববার রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের লাইব্রেরিতে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত এপ্রিল মাস থেকেই দেশের বাজারে সব ধরনের কাগজের দাম বাড়তি, যার প্রভাব পড়েছে লেখার খাতার ওপর। সব ধরনের তৈরি খাতার দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত।
তবে তৈরি খাতা থেকে দিস্তা কাগজের দাম তুলনামূলক কম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এক দিস্তা কাগজে দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। শতকরা হিসাবে এ দাম বৃদ্ধির পরিমাণ ১০-১৫ শতাংশ।
রামপুরার ভাই ভাই লাইব্রেরির কামরুল হাসান বলেন, বাংলা, অঙ্ক ও ইংরেজি লেখার তৈরি খাতার দাম বেড়েছে। আগে যে খাতা ২০ টাকায় বিক্রি করতাম এখন তা ২৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আর ৩৫ টাকায় যে খাতা বিক্রি করেছি এখন সেই খাতার দাম বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা।
এই ব্যবসায়ী বলেন, শুধু লেখার খাতা নয়, বাজারে সব ধরনের কাগজের দাম বেড়েছে। গত এপ্রিল মাস থেকেই কাগজের দাম বেশি। তৈরি খাতা বিক্রির প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি পিস খাতার দাম পাঁচ টাকা করে বাড়িয়েছেন। যে কারণে আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাড্ডার বাংলাদেশ লাইব্রেরির মো. সাইফুল বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন মানের ও দামের লেখার খাতা তৈরি করে। তবে ২০ থেকে ৮০ টাকা দামের খাতা বাজারে বেশি চলে। এখন বাজারে ছোট ও বড় সব ধরনের খাতার দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, আগে যে খাতা ৬০ টাকা পিস বিক্রি করতাম, এখন সেই খাতা আমাদের কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকায়। সুতরাং এ খাতা ৮০ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই। বড় খাতার মতো ছোট খাতাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে যে খাতার দাম ছিল ১৫ টাকা এখন সেই খাতা বিক্রি করতে হচ্ছে ২০ টাকায়।
খাতার এমন দাম বাড়ার কারণ কী- জানতে চাইলে এ ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের কাগজের দাম বেড়েছে। এ কারণে বেড়েছে খাতার দাম।
খিলগাঁওয়ের ভাই ভাই স্টেশনারির মো. বদরুল বলেন, খাতার দাম বাড়লেও আমাদের লাভের পরিমাণ বাড়েনি। বরং লাভ আগের থেকে কমেছে। আগে ৬০ টাকার একটি খাতা বিক্রি করে আট থেকে ১০ টাকা লাভ হতো। এখন ৬০ টাকার সেই খাতা ৭৫ টাকায় বিক্রি করে লাভ হচ্ছে পাঁচ টাকা। আবার বিক্রির পরিমাণও কমেছে।
তিনি বলেন, শুধু বেশি দামের খাতাই নয়, কম দামের খাতাতেও লাভ কমে গেছে। যেমন আগে ৩৫ টাকায় একটি খাতা বিক্রি করলে সাত টাকা লাভ হতো। এখন ৩৫ টাকার সেই খাতা ৪০ টাকায় বিক্রি করলে লাভ হয় মাত্র তিন টাকা। কোম্পানি মূল্য লিখে দিয়েছে ৪২ টাকা। কিন্তু দুই টাকা খুচরা না থাকায় মাঝে মাঝে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ ব্যবসায়ী আরও জানান, তৈরি খাতার তুলনায় দিস্তা কাগজের দাম তুলনামূলক কম বেড়েছে। আগে এক দিস্তা কাগজ বিক্রি হতো ১৮ থেকে ২০ টাকায়। এখন সেই দিস্তা কাগজ ২০ থেকে ২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ হিসাবে দিস্তা কাগজের দাম খুব একটা বাড়েনি। তবে এ কাগজের মান আগের থেকে কিছুটা হলেও কমেছে।
ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি লেখার খাতার দাম বাড়ার তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরাও। রামপুরার একরামুন্নেছা স্কুলের শিক্ষার্থী সাথী আক্তার বলেন, আগে গুডলাকের একটি খাতা ৬০ টাকা দিয়ে কিনতাম। ঈদের পর লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখি সেই খাতার দাম চাচ্ছে ৮৫ টাকা। ফ্রেসের ৩৫ টাকার খাতা চাচ্ছে ৪২ টাকা।
‘খাতার বাড়তি দামের কথা আব্বুকে বললে প্রথমে তো বিশ্বাস করতে চাননি। পরে আব্বুও খোঁজ নিয়ে দেখেন খাতার দাম বেড়েছে’- যোগ করেন এ শিক্ষার্থী।
এমএএস/জেডএ/এমএআর/এমএস