জোট সম্প্রসারণে ‘আপত্তি’ শরিকদের

আমানউল্লাহ আমান
আমানউল্লাহ আমান আমানউল্লাহ আমান , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৫ পিএম, ১৭ জুলাই ২০১৮

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটে সম্প্রসারণ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা। মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোটের সভায় সম্প্রসারণের বিষয়টি উঠে আসলে আপত্তি তোলেন শরিক নেতারা।

আলোচনায় সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কাস পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, বাসদ একাংশের নেতা রেজাউর রশীদ খানসহ বেশ কয়েকজন নেতা এ বিষয়ে আপত্তি জানান। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট সম্প্রসারণের বিষয়ে কিছুটা আগ্রহী ছিল আওয়ামী লীগ। এই আলোচনায় আপত্তি জানিয়ে শরিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, জোট সম্প্রসারণ করার প্রয়োজন নেই। কারণ ১৪ দল একটি আদর্শিক জোট। ভোটের চিন্তায় যাকে তাকে জোটভুক্ত করা হলে আদর্শিক ‘স্পিরিট’ নষ্ট হবে। তবে ভোটকেন্দ্রিক কোনো বোঝাপড়ায় কারও সঙ্গে গেলে সেজন্যে নির্বাচনী জোট মহাজোট রয়েছে সেখানে জায়গা দেওয়া যেতে পারে, এক্ষেত্রে তাদের কোনো আপত্তিও থাকবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোট শরিক একাধিক নেতা জানান, আগামী বুধবার দুপুর ১২টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে ক্ষমতাসীন জোটে যোগ দিতে আগ্রহী ব্যরিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন দল, তৃণমূল বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকে ১৪ দলীয় জোট নেতাদের থাকার অনুরোধ জানান মোহাম্মদ নাসিম। শরিকদলগুলোর নেতারা ওই বৈঠকে থাকলেও কোনো মতামত জানাবেন না কেউ। এই বৈঠকের সূত্র ধরেই জোট সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে আপত্তি তোলেন জোট শরিক নেতারা।

সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, শরিক দলের একাধিক নেতা কোটা আন্দোলন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে জাতীয় পার্টি (জেপির) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম কোটা নিয়ে আলোচনা উত্থাপন করলে আনিসুর রহমান মল্লিক, জাসদ একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়াসহ কয়েকজন কোটা আন্দোলনে বিরাট ষড়যন্ত্র দেখছেন। ফলে ইস্যুটি আমলাদের হাতে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে বসে থাকলে চলবে না বলে মত দেন শরিক নেতারা। পাশাপাশি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে দ্রুত এই ইস্যু শেষ করতে হবে বলেও জানান তারা।

বৈঠকে কোটা ইস্যুতে শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, কোটা আন্দোলনকে খোঁচা দিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু করতে দেওয়া যাবে না। এটিকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে মোকাবেলা করা উচিত। কোর্ট-কাচারি ও আমলাদের হাতে ঠিক করার দায়িত্ব থাকা ঠিক হবে না।

১৪ দলীয় জোট সভার আলোচনায় রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায় বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেটে বদরুদ্দিন কামরান আমাদের প্রার্থী। এ দু’টি সিটিতে ভালো মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে বরিশালের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহকে নিয়ে নানা কথা রয়েছে।

শরিক দলের নেতার এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি জানতে চান, বরিশালের প্রার্থী নিয়ে কী সেই নানান কথা? যেই ছেলে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বজন হারিয়েছে, স্বজনদের রক্তাক্ত ‘ডেড বডি’ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেছে তার তো পাগল হয়ে ঘুরে বেড়ানোর কথা।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর এমন বক্তব্যের পরে জোট নেতারা দাবি করেন নেগেটিভ অর্থে তা বলা হয়নি।

এইউএ/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।