কাল গাজীপুর, ঢাকা কত দূর?

সায়েম সাবু
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৭ পিএম, ২৫ জুন ২০১৮

তফসিল ঘোষণা হলো। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনের দিনক্ষণ ধার্য করে ঢাকও বাজালো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু আইনি জটিলতা অমীমাংসিত রেখেই নির্বাচনের আয়োজন করে উচ্চ আদালতের ধাক্কা খায় কমিশন। তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার জালে আটকে যায় স্থানীয় সরকারের বড় আয়োজনের এ নির্বাচন।

স্থগিতাদেশের তিন মাস পার হয়েছে আরও তিন মাস আগে। ডিএনসিসি নির্বাচনের আলোচনা ধামাচাপা পড়েছে অন্য সিটির নির্বাচনী আলোচনায়। আইনি জটিলতায় আটকে গিয়েছিল গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। মাস পার হয়নি স্থগিতাদেশের। জল্পনার ইতি টেনে অবশেষে আগামীকাল অনুষ্ঠিত হচ্ছে গাজীপুর সিটি নির্বাচন।

ইতোমধ্যে তফসিল ঘোষণা হয়েছে রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের। ঘণ্টা বাজছে জাতীয় নির্বাচনেরও। নির্বাচনের এতো আয়োজনের মাঝেও খবর মিলছে না ডিএনসিসি নির্বাচনের।

আদৌ হবে কি ঢাকার নির্বাচন? নির্বাচনের এ জটিলতার দায় কার? নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নাকি সরকারের অন্য হিসাবও আছে- এমন সব প্রশ্নে জনমনে।

তবে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ দায় দিলেন ইসিকে। জাগো নিউজ-এর কাছে এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, আমি নির্বাচন কমিশনকেই দায়ী করব ডিএনসিসি নির্বাচন না হওয়ার জন্য। আইনি জটিলতা কী ছিল, তা কমিশনের জানার কথা। না জানলে কমিশনের ব্যর্থতা। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন যথাযথ দায়িত্বের পরিচয় দেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকার এ নির্বাচন নিয়ে সরকারের হিসাব থাকতেই পারে। কিন্তু সে সুযোগ নির্বাচন কমিশন কেন করে দেবে?’

গত ৯ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচনসহ সিটি করপোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া এলাকায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিলে ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি।

ওই তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট করেন ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও বেরাইদ ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। গত ১৭ জানুয়ারি সেই রিটের শুনানিতে তিন মাসের জন্য ডিএনসিসি নির্বাচন স্থগিত হয়।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ও সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনিও ক্ষোভ ঝাড়লেন নির্বাচন কমিশনের ওপর। বলেন, ‘আদালত তার বিধান অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করতে কমিশনকে তাগাদা দেয়। কিন্তু যে আইনি জটিলতায় নির্বাচন স্থগিত হলো, তার দায় নির্বাচন কমিশনের। সব জেনেই তো এমন একটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথা। অথচ রিট করার পর সঠিক কোনো জবাব মিললো না কমিশন থেকে।’

নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত বিষয়টির সমাধানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্থগিত করেছিল তিন মাসের জন্য। কিন্তু কেটে গেল ছয় মাস। এ সময়ে নির্বাচন নিয়ে কমিশনের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এখনও পড়ছে না ফলে আমরা হতাশ। নগর উন্নয়নে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

গত বছর ৩০ নভেম্বর লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক মারা যান।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল। এতে আওয়ামী লীগের সমর্থনপুষ্ট প্রার্থী আনিসুল হক মেয়র নির্বাচিত হন।

এএসএস/জেএইচ/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।