ডিজিটাল ডিভাইস পাবে প্রাথমিকের ৬ হাজার শিক্ষার্থী

মুরাদ হুসাইন
মুরাদ হুসাইন মুরাদ হুসাইন , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
ফাইল ছবি

প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকায়নে শিশুদের হাতে ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দেয়ার চিন্তা করছে সরকার। প্রথমপর্যায়ে দুই জেলার ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় হাজার শিক্ষার্থীর হাতে একটি করে ট্যাব তুলে দেয়া হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিজিটাল ক্লাসরুমের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে ডিজিটাল ডিভাইস দেয়া হবে। এ ডিভাইসে থাকবে ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তক, বিষয়-ভিত্তিক ভালো শিক্ষকদের ক্লাসের ভিডিও, শিক্ষাবিষয়ক কন্টেইন, শিক্ষামূলক কার্টুন-গেইম, সহজ শিখন পদ্ধতিসহ শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষামূলক বিভিন্ন অ্যাপস।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) থেকে জানা গেছে, ডিজিটাল দেশ গড়ার ভাবনা থেকে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে ডিজিটাল ডিভাইস দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে গত ৪ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ডিপিইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষামূলক হিসেবে প্রথমপর্যায়ে ঢাকা ও গাজীপুর জেলার ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় হাজার শিক্ষার্থীকে ট্যাব দেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, সরকার ডিজিটালাইজড রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে ডিজিটাল ডিভাইস দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমপর্যায়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থীর হাতে এ ডিভাইস তুলে দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এসব ডিভাইস বিতরণ হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) থেকে এসব ডিভাইস কেনা হবে। এজন্য চলতি মাসের মধ্যে উভয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দুই কোটি ১৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৩৮ শিক্ষার্থী রয়েছে। ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের ট্যাব দিতে রাজস্ব খাত থেকে ৪৯২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রথমপর্যায়ে ২০টি বিদ্যালয়ের ছয় হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে এ ডিজিটাল ডিভাইস দেয়া হবে। এজন্য নয় কোটি ছয় লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে এসব ডিভাইস বিতরণ হবে।

শিশুদের ডিভাইসগুলো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয় করা হবে। সে অনুযায়ী ‘দোয়েল’ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) থেকে এসব ডিভাইজ ক্রয়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো টেশিসের ‘দোয়েল ল্যাপটপ’ তৈরি হয়। মাত্র ১০ হাজার টাকায় এসব ল্যাপটপ বিক্রি হলেও তা বেশিদিন ব্যবহারযোগ্য ছিল না। প্রতিনিয়ত এসব ডিভাইসে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে দোয়েল ল্যাপটপ কেনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন ক্রেতারা।

ডিপিই’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. রমজান আলী জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইস ক্রয় ও বিতরণে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র ডিজিটাল ডিভাইস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টেশিসের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর এসব ডিভাইস তৈরির কাজ শুরু হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষের শুরুতে শিশুদের হাতে ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, এসব ডিভাইসে পাঠ্যপুস্তক, ভালোমানের শিক্ষকদের পাঠদান ও পাঠ্যপুস্তকের বিভিন্ন বিষয়ের সমাধান, শিক্ষামূলক ভিডিও গেইম-কার্টুন, ওয়াইফাই সংযোগসহ বিনোদনের সঙ্গে শেখার নানা অ্যাপস যুক্ত থাকবে। পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তে শিক্ষার্থীরা এ ডিভাইসের মাধ্যমে ক্লাস করতে পারবে।

এমএইচএম/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।