ইসির সঙ্গে আ. লীগের সংলাপে যা থাকছে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৮ অক্টোবর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেবে ইসি।
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজ, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ২৪ আগস্ট থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে ৯ অক্টোবর, বিএনপির সঙ্গে ১৫ অক্টোবর এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৮ অক্টোবর সংলাপে অংশ নেবে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে কী কী বিষয়ের ওপর আলোচনা হবে সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছে দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করেন কমিটির সদস্যরা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মসিউর রহমান, রাশেদুল আলম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জাগো নিউজকে জানান, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তুর খসড়া করতেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এ দিনের বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর খসড়া প্রস্তুত করা হয়। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সংলাপের প্রস্তাবের বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে।
বৈঠক সূত্র আরও জানায়, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রস্তাব তুলে ধরা হবে। নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান সম্পর্কিত কিছু ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে আওয়ামী লীগ। সেসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবে দলটি। পাশাপাশি গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও), সংসদীয় আসনের সীমানা, নির্বাচনী ব্যয় ও আগামী নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা কীভাবে অংশ নেবেন, সে বিষয়ও আওয়ামী লীগ সংলাপে উপস্থাপন করবে।
এছাড়া সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার, অভিন্ন পোস্টার, নির্বাচনী এলাকায় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় জনসভার আয়োজন, প্রার্থীদের জামানত ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা, নির্বাচন কমিশন থেকে প্রার্থীদের নির্দিষ্ট একটি টোকেন মানি সরবরাহ-সংক্রান্ত বিষয় আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে থাকতে পারে।
প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশনের নিয়োগবিধি অনুযায়ী কর্মকর্তা নিয়োগ, নির্বাচন কমিশনের যে বাজেট দেয়া হয় সে বাজেট যেন তারা স্বাধীনভাবে খরচ করতে পারে- এসব বিষয়ও প্রস্তাবনায় থাকতে পারে।
বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বৈঠক করেছি। প্রস্তাবের বিষয়ে প্রাথমিক একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। আরও বৈঠক হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর ওনার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। পরে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় প্রস্তাবের বিষয় চূড়ান্ত করা হবে।
দলীয় আলোচনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, সংলাপের খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে করেছেন।
এইউএ/এমএআর/আরআইপি