৩০ বছরেও কেউ খোঁজ নেয়নি, অথচ এগিয়ে এল ছাত্রলীগ

মাহাবুর আলম সোহাগ
মাহাবুর আলম সোহাগ মাহাবুর আলম সোহাগ , সহকারী বার্তা সম্পাদক (কান্ট্রি ইনচার্জ)
প্রকাশিত: ০৩:২৭ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

প্রায় দুই মাস ধরে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার রিয়াজুল করিম গামা। ডাক্তারি ভাষায় তিনি Plexiform Neurofibromatosis নামে রোগে আক্রান্ত। এ রোগের কারণে তার পায়ের মাংসপেশিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বড় হয়ে গেছে।

ইতোমধ্যে গত মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন-প্লাস্টিক অ্যান্ড রিকন্সট্রাক্টিভ সার্জারি বিভাগের অধীনে ভাস্কুলার সার্জারি ও জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট'র সহযোগিতায় তার পায়ের অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তার আরও দুটি অপারেশন হওয়ার কথা রয়েছে।

যার অবদানে তিনি বাড়ি থেকে জামালপুর সদর হাসপাতাল, সেখান থেকে ঢাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি সেই মানুষটিকে এক নজর দেখার অপেক্ষায় ছিলেন গামা। যখনই কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন তখনই তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়া মানুষটিকে দেখার আকুতি জানাতেন তিনি। অবশেষে গতকাল সোমবার রাত ৮টায় সেই ইচ্ছে পূরণ হয়েছে তার।

গামার দেখতে চাওয়া সেই মানুষটি হলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন।

এসএম জাকির হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, গামা ভাই গত দুইদিন ধরে আমাকে ফোন করছেন দেখার জন্য। আমাকে নাকি খুব দেখতে ইচ্ছে করেছে উনার। এর আগেও তিনি ফোন করেছিলেন। তখন রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তাসহ বিভিন্ন কাজে কক্সবাজারের উখিয়ায় অবস্থান করার কারণে যেতে পারিনি। ঢাকায় এসে আর থাকতে পারলাম না, তাই গামা ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে চলে গেলাম।

তিনি বলেন, গামা ভাইয়ের চিকিৎসাসহ যাবতীয় ক্ষেত্রে আসলে অবদান রেখেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল হোসাইন শুভর। সেই গত দুই মাস ধরে গামা ভাইয়ের চিকিৎসার ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের। তারাও স্থানীয়ভাবে গামা ভাইকে সহযোগিতা করেছেন।

জাকির আরও বলেন, শুধু গামা ভাই না, ছাত্রলীগের উদ্যোগে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় সব বয়সী অসহায় ও অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা হয়েছে। তারা এখন সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করছে। বাংলাদেশের যেকোনো দুর্যোগ ও মানবিক কাজে ছাত্রলীগের অংশগ্রহণ পূর্বেও ছিল ভবিষ্যতেও থাকবে।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে রিয়াজুল করিম গামা জাগো নিউজকে বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে পড়েছিলাম। কেউ খোঁজ রাখেনি। অথচ জাকির ভাই বাড়ি থেকে তুলে এনে আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। অনেকেই মুখে এই মানুষটা নাম শুনছিলাম। যতই শুনছিলাম ততই মানুষটিকে দেখার আগ্রহ বাড়ছিল। তাই ভাইকে অনুরোধ করেছিলাম দেখা করার জন্য। সুস্থ থাকলে আমি নিজেই চলে যেতাম ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে।

তিনি বলেন, এলাকার কোথাও মারামারি হলে লোকজনকে শুধু বলতে শুনেছি ছাত্রলীগের ছেলেরা মারামারি করছে। কিন্তু এখন তো দেখছি তারা মানুষের জীবনও বাঁচায়। যার প্রমাণ আমি নিজেই।

কথা হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল হোসাইন শুভর সঙ্গে। তিনি বলেন, গামা ভাইয়ের যে সমস্যা সেটি আরোগ্যযোগ্য। তবে সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আরও দুটি অপারেশন করতে হবে তার। একটি মাথায়, অন্যটি হাটুতে।

তিনি বলেন, মানবিক কাজে সব সময় জাকির ভাইয়ের অংশগ্রহণ দেখেছি। সেখান থেকেই প্রেরণা পেয়েছি আমরা। জাকির ভাইয়ের নির্দেশে ছাত্রলীগ আগামীতেও এসব কাজ চালিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

এমএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।