সেই তৌফা-তহুরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে কাল

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:২৯ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

‘আমরা গরিব কৃষক পরিবারের মানুষ। দুই মেয়েকে পড়াশুনা শিখিয়ে ভবিষ্যতে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখি। সরকার তথা দেশবাসীর সহযোগিতা না পেলে তা সম্ভব হবে না। জানি না স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা। মেয়ে দুটির জন্য সবার দোয়া চাই।’

চিকিৎসা শেষে আগামীকাল রোববার বাড়ি ফিরে যাচ্ছে সেই জোড়া শিশু তৌফা-তহুরা। হাসপাতাল ত্যাগের প্রাক্কালে শনিবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজের সঙ্গে অনুভূতি ব্যক্ত করে এসব কথা বলেন তার মা শাহিদা বেগম।

আগামীকাল দুপুর ১২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তৌফা-তহুরাকে আনুষ্ঠানিকভাবে রিলিজ দেবে। এ উপলক্ষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করবে। সেখানে তৌফা-তহুরার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হবে।

শাহিদা বেগম জানান, তার দুই মেয়ে আল্লাহর রহমতে সুস্থ। স্বাভাবিক সব ধরনের খাবার খেতে পারছে না। পিঠে কিছুটা ঘা থাকলেও ধীরে ধীরে মাংস পূরণ হবে।

তিনি জানান, ঈদের আগেই চিকিৎসকরা রিলিজ দিতে চেয়েছিলেন। ওই সময় তাদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামে বন্যার পানি ওঠায় বাচ্চারা সংক্রমিত হতে পারে এ আশঙ্কায় বাড়ি ফিরে যেতে নিষেধ করেন। এ কারণে তারা নারায়ণগঞ্জে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ঈদ করেন।

শাহিদা জানান, শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক শাহনুর ঈদে দুই মেয়েকে দুই সেট কাপড়, তাকে নতুন শাড়ি, ছেলেকে গেঞ্জিসেট ও তার স্বামীর জামা কিনতে ৫০০ টাকা দিয়েছিলেন। এছাড়া ঈদে ঘুরে বেড়ানোর খরচ হিসেবে আরও এক হাজার টাকা দিয়েছিলেন।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে শরীর জোড়া লাগানো অবস্থায় তোফা-তহুরার জন্ম দেন।

কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দুটির সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই ছিল। তবে জন্ম থেকেই তাদের প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা একটি ছিল। গত বছরের অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রথমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে তাদের পায়ুপথের রাস্তা পৃথক করা হয়। পরবর্তীতে গত ৩ আগস্ট বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই বোনকে পৃথক করা হয়। সাহিদা বেগম ও রাজু মিয়া দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

এমইউ/ওআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।