রাত-দিন যে রাস্তায় সমান ভোগান্তি

সিরাজুজ্জামান
সিরাজুজ্জামান সিরাজুজ্জামান , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৫ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৭

রাজধানীর একটি ব্যস্ততম অঞ্চলের রাস্তা। যে রাস্তাকে আগে বিশ্বরোড নামে ডাকা হত। টঙ্গী থেকে রামপুরা হয়ে একদিকে যাত্রাবাড়ী অন্যদিকে সদরঘাটকে যুক্ত করেছে এই রাস্তা। প্রতিদিন নানা কারণে হাজার হাজার লোক যাতায়াত করে এই রাস্তা দিয়ে। কিন্তু দিনের পর দিন তাদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। রাত কিংবা দিন। সবসময়ই যানজট লেগে আছে।

কিন্তু কেন এই যানজট? উন্নয়নের নামে চলছে ধীরগতিতে কাজ। কুড়িল বিশ্বরোড় থেকে শুরু করে প্রগতি সরণি, উত্তর ও মধ্যবাড্ডা, মেরুল, রামপুরা, মৌচাক, মালিবাগ, কাকরাইল পর্যন্ত চলছে ‘তথাকথিত’ এই উন্নয়ন। কোথাও গ্যাসের লাইন বাসানো হচ্ছে, কোথাওবা স্যুয়ারেজের ড্রেনের জন্য রাস্তা কাটা হচ্ছে। কিন্তু বছরে কয়বার কাটা হচ্ছে তার হিসাব সম্ভবত কর্তৃপক্ষের কাছেও নেই। সারাবছরই এই রাস্তার অর্ধেক অংশজুড়ে কাটা থাকে।

অন্যদিকে মধ্যবাড্ডা ও মেরুলের মাঝামাঝি জায়গায় চলছে ইউলুপ নির্মাণের কাজ। আর মৌচাক, মালিবাগ আর শান্তিনগরে বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে ফ্লাইওভারের নির্মাণের কাজ। আর রামপুরা ব্রিজ হয়ে বনশ্রী আবাসিক এলাকার দিকে প্রবেশের সময় রাস্তা এতটাই খারাপ যে মূল রাস্তাতেও যানজট লেগে যায়। এই রাস্তার পুরোটায় খানাখন্দে ভরা। একটু বৃষ্টি হলে ডুবে যায়। বৃষ্টি না থাকলে ধুলো। আর কোথাও কোথাও ইট-পাটকেল এমনভাবে ছড়ানো-ছিঁটানো যে বাইক স্লিপ করে প্রায়ই আহত হচ্ছেন পথচারীরা। গর্তে পড়ে যাচ্ছে রিকশা। মূলত পরিত্যক্ত বলাই চলে এই বিশাল রাস্তাটি। কিন্তু নিরূপায় হয়েই এই রাস্তায় চলতে হয়। তাই ক্ষোভও বিরাজ করছে যাত্রী ও ড্রাইভারদের মধ্যে।

উত্তর বাড্ডা থেকে উত্তরার উত্তরখানে অফিস করতে যান ব্র্যাকের সিনিয়র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ফাতেমা ইয়াসমিন। জাগো নিউজকে তিনি সোমবার রাতে জানান, ‘এই পথ চলতে গিয়ে তার হাড়মাংস সব এক হয়ে যায়। কুড়িল বিশ্বরোড় থেকে উত্তর বাড্ডা আসতে বাসে কখনও কখনও দুই ঘণ্টাও লেগে যায়। হাঁটলেও এত সময় লাগবে না। প্রায় অন্ধকার রাতে হাঁটতে অনিরাপদ বোধ করায় বাধ্য হয়ে বাসেই যাতায়াত করতে হয়।’

road

এই রাস্তায় চলাচলকারী তুরাগের চালক মমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই রাস্তায় বাস চালাইতে গিয়া আমাগোর আয়ু অর্ধেক কমে গেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে আটকা থাকতে হয়। ঘন ঘন বাসের টায়ার টিউব ফাইট্টা যায়।’

বাড্ডা লিংক রোড থেকে গুলিস্তান যাতায়াত করেন কবির মিয়া। তিনি বলেন, ‘কবে এই রাস্তার কাজ শেষ হবে কেউ জানে না। সারাবছরই তো রাস্তা কাটা দেখি। আর একপাশে দেখি স্যুয়ারেজের ময়লা রাখা।’

ওই রাস্তায় সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ি চলছে না। হাতিরঝিল থেকে মেরুলে মূল সড়কে ওঠার জন্য দীর্ঘ যানজট। কোথাও কোথাও হাঁটু পরিমাণ পানি। বারিধারার রাস্তার সামনে রাস্তা আড়াআড়িভাবে কাটা। অল্প আলোয় তা কারও চোখে না পড়ায় মোটরবাইক ছিঁটকে পড়ছে।

নতুনবাজার থেকে উত্তরাগামী মোটরবাইকের আরোহী ফয়েজ উল্লাহও মারাত্মক আহত হয়েছেন। তিনি জানান, একটা সভ্য দেশে এভাবে হঠাৎ করে গর্ত করে রাখতে পারে কর্তৃপক্ষ তা ভাবাও যায় না। এই অবহেলার কি কোনো বিচার হবে না। দেখভাল করার দায়িত্ব কি কারোর নেই?

এইচএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।