শুক্রবার ঈদবাজার ফুটপাতের দখলে
রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটের ফুটপাত ঘেঁষে গহনার দোকান নিতেশ কর্মকারের। বিক্রি করছেন, আবার ক্ষণে ক্ষণে আকাশ পানে চেয়ে মেঘের গতিবিধি লক্ষ্য করছেন। সময় যেন দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। হিসেব আজ আর আগামীকালেই।
গহনা বলতে সিটি গোল্ডের। মালা, চুড়ি, কানের দুল, তিকলি, হারসহ গহনার প্রায় সবই মিলছে নিতেশের দোকানে। ধুম বিক্রি সকাল থেকেই। প্রস্তুতি রেখেছেন মধ্য রাত পর্যন্ত। আগে একা থাকলেও রমজানে আরও দুইজন সহায়ক রেখেছন। চৌকির উপর দোকান। উপরে পলিথিনের এক ফালি ছাদ। চারপাশ খোলা। নিজে ক্যাশে বসে বাকি দুই জনকে দু’পাশে রেখেছেন। দোকান ঘিরে ক্রেতাদের জটলা। কেউ গহনা হাতে নিয়ে দেখছেন, কেউ টাকা গুণছেন আবার কেউ দর কষাকষি করছেন। ক্রেতাদের সঙ্গে কথা সংক্ষিপ্ত করেই বেচায় মন দিচ্ছেন নিতেশ।
বলেন, ভাই দম ফেলার সময় নেই। আজ শুক্রবার আর আগামীকাল শনিবার নিয়েই আমাদের হিসেব। পরের শুক্রবার অনেকেই গ্রামে চলে যাবে। আর জমবে না।
‘কেমন হচ্ছে ব্যবসা’ জানতে চাইলে বলেন, কম দামের পণ্য এখানে। তবে এখন ভরসা বাড়ছে। এখানে যে মূল্যে বিক্রি করতে পারি, শো রুমের দোকানদার সে মূল্যে বিক্রি করতে পারবে না। ফুটপাতের ভাড়া আর দোকানের ভাড়া তো এক না। তাই বেশির ভাগ মানুষ এখন ফুটপাতমুখি।
ছুটির দিনে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে গাজিপুর থেকে এসেছেন ঈদবাজার করতে কেয়া। ব্যাংককে চাকরি করেন স্বামী শামীম। দিনব্যাপি মার্কেট করে রাতে গাড়িতে তুল দেবেন স্ত্রী কেয়াকে।
নিউ মার্কেটে কেনাকাটা করবেন সন্ধ্যায়। এর আগে ফুটপাতে। বলেন, এখন সবই তো ফুটপাতে পাওয়া যায়। প্রয়োজনের অনেক কিছুই সাধ্যের মধ্যে ফুটপাত থেকে কেনা যাচ্ছে। এখানে দরকষাকষিও করা যায়। যতটুকু পারছি ফুটপাত থেকেই সেরে ফেলছি।
বলাকা সিনেমের উত্তর পাশে ভ্যানের ওপর জুতার দোকান রাশিদুলের। ফুটপাত নয়, রাস্তা দখল করেই দোকান সাজিয়েছে রাশিদুল। চাঁদা দিয়ে রমজানের গোটা মাস দোকান বসিয়েছে।
বলেন, রোজার প্রথম দিকে ব্যবসা ভালো যায়নি। আজ সকাল থেকেই বেচাবিক্রি বাড়ছে। নিম্ন আয়ের মানুষেরাই এখান থেকে জুতা কিনে থাকে। আগামীকালও জমবে ব্যবসা।
কথা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সিনথিয়া অবনীর সঙ্গে। বান্ধবীদের নিয়ে নিউ মার্কেটের ফুটপাতে কেনাকাটায় মগ্ন সিনথিয়া।
বলেন, সবই যখন ফুটপাতে মেলে তখন বাড়তি টাকা গুণতে ভেতরে যাবো কেন? সাধ্যের মধ্যে দেখে দেখে ফুটপাত থেকেও কিছু ক্রয় করছি।
এএসএস/এএইচ/পিআর