এবার পোশাকের দাম চড়া, কারণ…
রাজধানীর উত্তরার নর্থ টাওয়ারের লেডিস কর্ণার নামক দোকানে একটি গাউন দেখছিলেন শিল্পী রহমান। তবে পছন্দমত পোশাকটির দাম শুনেই চমকে ওঠেন তিনি। বিক্রেতা তার পছন্দের গাউনটির দাম হেঁকেছিলেন ৬ হাজার টাকা। বেশ কিছুক্ষণ ধরে দরকষাকষি করেও ৪ হাজার টাকা বলেও পোশাকটি কিনতে পারেননি শিল্পী।
ঈদের বাজারে শিল্পীর মতই অবস্থা বেশিরভাগ ক্রেতার। তাদের অভিযোগ অন্যবারের তুলনায় এবার পোশাকের দাম বেশি। তবে বিক্রেতারা বলছেন, পোশাকের নতুনত্ব, বাহারি ডিজাইন ও মান ভালো হওয়াই এই কারণ।
তবে ভারতীয় বা পাকিস্তানি কাপড়ের তুলনায় দেশি কাপড়ের দাম তুলনামূলক কম। এ কারণে ভারতীয় বা পাকিস্তানি অনুকরণে তৈরি দেশি পোশাকগুলোর চাহিদাও বেশি জানালেন বিক্রেতারা। তাছাড়া অতিরিক্ত গরম হওয়ায় ক্রেতারা বাহারি পোশাকের চেয়ে সূতি কাপড়ের দিকেই ঝুঁকছেন। রাজধানীর মার্কেটগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
রাজলক্ষী এলাকার কুশল সেন্টারের ফ্রক নামে দোকানের কর্ণধার শফিউল আলম জাগো নিউজকে বলেন, গতবারের তুলনায় পোশাকের দাম একটু বেশি। এর প্রধান কারণ, কাপড়ের ভালো মান। এখন গরমের সময় হওয়ায় সিনথেটিক কাপড় চলছেই না। উন্নত মানের সূতি, লিলেনের চাহিদা অনেক বেশি। তবে দোকান ও পণ্য ভেদে এ ধরনের গাউন, লেহেঙ্গা কিংবা অন্যান্য পোশাকের দামে ভিন্নতা রয়েছে।
উত্তরার বেলি কমপ্লেক্সে মায়ের দোয়া ফেব্রিক্সের বিক্রেতা মো. জুয়েল বলেন, ভারতীয় পোশাক বলেই দামটা অনেক বেশি। তবে একই আদলে বাংলাদেশির তৈরি পোশাকে দাম প্রায় অর্ধেক কম। এ কারণে দেশি পোশাকের চাহিদা বেড়েছে।
তার দোকানে গাউন বা লেহেঙ্গার দাম ১৫০০-৩০০০ টাকা হাজার পর্যন্ত। এদিকে বড়দের পোশাকের মত ছোটদের পোশাকের দামও বেশ চড়া বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
টুঙ্গি থেকে কুশল সেন্টারে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা নাসিমা বেগম বলছিলেন, বলতে গেলে বড়দের তুলনায় ছোটদের পোশাকের দাম অনেক বেশি। পছন্দসই কাপড় কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তবে এই প্রেক্ষাপটে বিক্রেতাদেরও রয়েছে অকাট্য যুক্তি। শফিউল আলমেই বলছিলেন, অনেক সময় বড়দের তুলনায় ছোটদের কাপড় তৈরিতে বেশি কষ্ট হয়। তাদের পোশাকে কারুকাজ বেশি থাকে। এসব কারণে শিশুদের পোশাকের দামও বেড়ে যায়। তবে ডিজাইন ও মান ভেদে দামের পার্থক্যও রয়েছে।
আল্পনা এক্সক্লুসিভ ফ্যাশন ওয়ারের বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি ফ্যাশন সচেতন। গত কয়েক বছরের তুলনায় ঈদের বাজারে বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। তাছাড়া আমরাও (বিক্রেতা) সারা বছর ঈদের কেনাকাটার অপেক্ষায় থাকি। বলতে পারে এটাই আমাদের আসল মৌসুম।
কুশল সেন্টারের অনামিকা ফ্যাশনে ঢুকে দেখা যায়, ক্রেতাদের সঙ্গে পোশাকের দরদাম করছেন বিক্রেতারা। একটি সারারা ডেসের দাম চার হাজার টাকা হেঁকেছিলেন বিক্রেতা। দরেদাম শেষে সেটি ২ হাজার ২০০ টাকায় কিনতে সক্ষম হন দুই ক্রেতা।
আলাপকালে জাগো নিউজকে তাদের একজন বলেন, পোশাকগুলো কাপড় ভালো বলে যে দাবি করা হচ্ছে, সেটি সবসময় সত্য নয়। আসলে বাহারি নাম আর ডিজাইন দেখিয়ে বেশি দাম রাখা হচ্ছে।
জেপি/জেএইচ/পিআর