সেই ঈদ কার্ড এখন শুধুই গল্প


প্রকাশিত: ১১:২০ এএম, ০৯ জুন ২০১৭

শুক্রবার বিকেল তিনটা। রাজধানীর গভর্মেন্ট মার্কেটের ভেতর আইডিয়াল প্রডাক্টসের দোকানের দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলেন মধ্য বয়সি এক ভদ্রমহিলা। কাউন্টারে বসে থাকা ভদ্রলোককে বললেন, আপনাদের কাছে কি ঈদ কার্ড আছে? প্রশ্ন শুনে ত্রিশ সেকেন্ডের মতো হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন কাউন্টারে বসে থাকা ভদ্রলোক। ঘোর কাটিয়ে বললেন, তাদের কাছে শুধু শিশুদের কিছু ঈদ কার্ড আছে। উত্তর শুনে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিছিয়ে রাখা ছোট ছোট ঈদ কার্ড দেখে ভদ্রমহিলা বললেন, এটা তো ভারতীয় মোটা পাতলুর কার্ড দেখছি। এক সময় না আপনারা কত সুন্দর সুন্দর ঈদ কার্ড বানাতেন।

কৌতুহলবশত ভদ্রমহিলার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে জানান, নাম নুরুন্নাহার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষার্থী থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। প্রায় দশ বছর পর সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন।

তিনি বলেন, ৯০ এর দশকে ঢাবিতে পড়ার সময় রমজানের শুরু থেকেই নিউমার্কেটের দোকানগুলোর বারান্দা ও রাস্তায় ঈদ কার্ডের দোকান বসতো। স্বল্প মূল্যে ছাপানো কার্ড ছাড়াও আর্ট কলেজের শিক্ষার্থীদের হাতে আকাঁ বিভিন্ন ধরনের ছবির ঈদ কার্ড পাওয়া যেত। ছোট-বড় সকলেই ঈদ কার্ডের জন্য আলাদা কিছু টাকা বাজেট করতো। কিন্তু আজ কোথাও ঈদ কার্ডের দোকান দেখতে পেলাম না।

Eid

নুরুন্নাহার বেগম আরও জানান, তাদের সময়ে ঈদ কার্ডগুলোর ভেতরে অনেক আবেগ মিশ্রিত লেখনিতে ভালোবাসার অনুভূতি পাওয়া যেত। আজ ঈদ কার্ড কিনতে এসে অনেকটা হতাশই হলাম।

আইডিয়াল প্রডাক্টেসের কর্মকর্তা দিলীপ কুমার দে বলেন, আপা এখন তো আবেগ অনুভূতি ডিজিটাল হয়ে গেছে। এখন কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও মোবাইলের বোতাম চেপে নানা রংয়ের ঈদ কার্ড পাঠানো যায়। ফলে পয়সা খরচ করে কেউ আর ঈদ কার্ড কেনে না।

তবে ঈদ কার্ড কিনতে চাইলে রাজধানীর পল্টনে বিভিন্ন শো রুমে পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

নিউমার্কেট এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ৯০ এর দশকে দোকানদারদের পাশাপাশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় ঈদ কার্ড নিয়ে বসতেন। সারা মাস কার্ড বিক্রি করে লাভের টাকায় বন্ধুরা মিলে একই রঙের শার্ট-প্যান্ট কিংবা পাঞ্জাবি কিনতেন। গোটা মাস জুড়ে ঈদের আমেজ লেগেই থাকতো। এখন সে সবের বালাই নেই।

এমইউ/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।