দর্জিপাড়ায় সেই ব্যস্ততা নেই


প্রকাশিত: ১০:৫৬ এএম, ০৯ জুন ২০১৭

‘এবার ঈদের ব্যবসা লাটে উঠেছে। অবস্থা খুবই খারাপ। যেখানে আগে পনের রমজানের পর ক্রেতাদের অর্ডার আরও নেব কি না তা ভাবতে হতো, এবার সেখানে সেই চিন্তা মাথায়ই আসছে না। শুধু তাই না, গত বছরও একেকজন কাস্টমার চার-পাঁচ সেট শার্ট-প্যান্ট বানাতেন, সেখানে এখন এক দুই সেটের বেশি অর্ডার পাচ্ছি না। এই যে আজ তের রমজানে আপনার সঙ্গে খাতির জমিয়ে কথা বলছি, দুই-এক বছর আগে অবস্থা এমন ছিল যে, কথা বলা তো দূরের কথা, দোকানে দাঁড়ানোরই জায়গা পেতেন না।’

শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর গভর্নমেন্ট নিউমার্কেটের ভেতর মেট্রো ট্রেইলার্সের কর্মকর্তা দীন মোহাম্মদের কাছে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক ‘এবার ঈদের ব্যবসা কেমন’ জানতে চাইলে হতাশা প্রকাশ করে তিনি এসব কথা বলেন।

dorzipara

সরেজমিনে দেখা গেছে, দুপুর আনুমানিক আড়াইটায় নিউমার্কেটের ভেতরে বিপুলসংখ্যক নারী, পুরুষ ও শিশুর উপস্থিতি থাকলেও মেট্রো ট্রেইলার্সে হাতেগোনা দুজন ক্রেতা শার্ট প্যান্টের মাপ দিচ্ছেন। দু-তিনজন কর্মচারী কাউন্টারে দাঁড়িয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন।

দীন মোহাম্মদ বলেন, তাদের দোকানে মোটামুটি অর্থবিত্ত রয়েছে এমন লোকজনই কাপড় বানানোর অর্ডার দেন। ক্রেতারা রমজানের আগেই কী ধরনের পোশাক বানাবেন, সে ব্যাপারে মনস্থির করেন। রমজানের প্রথম সপ্তাহেই তারা অর্ডার দেন।

তিনি জানান, গত তিন বছর ধরে একই মজুরি যেমন শার্ট প্রতিটি ৪শ টাকা ও প্যান্ট ৫শ টাকায় বানাচ্ছেন। কী কারণে এবার ব্যস্ততা নেই? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিশ্চিত করে বলতে পারব না। তবে মনে হয় সামগ্রিকভাবে ঈদের বাজার খুব ভালো না।’

নিউমার্কেটের ভেতর নারী ক্রেতাদের কাছে অতি সুপরিচিত গুলবাগ টেইলার্স। এ দোকানের কর্মচারী সচিন্দ্র চন্দ্র দাস। ১৯৮৪ সাল থেকে এ দোকানে চাকরি করছেন তিনি। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সচিন্দ্র দাসের কণ্ঠেও হতাশার সুর।

dorzipara

তিনি বলেন, ‘রমজানের আগেই অর্ডার বেশি ছিল। ১৩ রমজান পার হতে চললেও ক্রেতাদের সেই আগের ভিড় নেই। অন্যান্য বছর ইফতারের পর ক্রেতার ঢল নামে। এবার এখন সেই ভিড় নেই।

এসব দোকানের অর্ডারের উপর ভিত্তি করে অনেক দর্জি ঈদে কাজ পান। লালবাগ এলাকায় রমজান নামের এক দর্জি জানান, ‘এ বছর নিউমার্কেট থেকে অর্ডার খুব কম পাচ্ছেন। রমজান মাসে অতিরিক্ত অর্ডারের কারণে যেখানে আগে রাত ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত কাজ করে সাহরি খেতে হতো, সেখানে এখন রাত ১২টার আগেই কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে সামনে ব্যস্ততা বাড়তে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমইউ/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।